নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলে মাকে মারার বিচারের জেরে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার হন বিপ্লব রায়। এই ক্ষোভে প্রতিশোধ নিতে হত্যা করা হয় জেলা মতুয়া মিশনের সভাপতি রূপকুমার মজুমদারকে। এমন ধারণা স্থানীয় মতুয়া নেতা ও রূপকুমারের ভক্তদের।
স্থানীয়ভাবে জানা গেছে, ২০২২ সালের মার্চ-এপ্রিল মাসে নিজের মায়ের গায়ে হাত তোলেন বিপ্লব রায়। স্থানীয় একটি মতুয়া সমাবেশে এমন অভিযোগ তোলেন বিপ্লবের মা সুনিতা রায়। পরে মতুয়া জেলা সভাপতি রূপকুমারের মাধ্যমে এই অভিযোগ তুলে ধরা হয় গোপালগঞ্জের উড়াকান্দিতে মতুয়া প্রধান পদ্মনাথ বাবাজির কাছে। তিনি বিপ্লবকে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দেন। বিচারে বলা হয়, ‘মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক হরিচাদ ঠাকুরের যে ১২ আজ্ঞা আছে তার প্রথমটি হলো মা-বাবাকে ভক্তি করা। এটা অমান্য করায় তাঁকে মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার করা হলো।’ এর আগে বিপ্লবের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বাবা নিতাই রায় আত্মহত্যা করেন বলে জানায় স্থানীয়রা।
এই বিচারের পর কমলাপুরের মহাশ্মশান কমিটি গঠনের সময় বেয়াদবি করায় বিপ্লবকে চড় মারেন রূপকুমার। এরপর থেকেই ঘটনা অন্যদিকে মোড় নিতে থাকে। ওই দিনই প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন বিপ্লব।
রূপকুমারের বড় ভাই অসিত মজুমদার বলেন, ‘বিপ্লব মতুয়া সম্প্রদায় থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর আমার ভাইয়ের উপর প্রতিশোধ নিতে নানা ফন্দি করত। এই ঘটনায় কেউ খুন করতে পারে এটা আমরা বিশ্বাস করতে পারিনি।’
রূপকুমারের স্ত্রী শুক্লা রানী মজুমদার বলেন, খুনিদের বিচারে যেন ফাঁসি হয়। আমার মতো কোনো মেয়ে যেন এভাবে বিধবা না হয়। আমার সাত বছরের বাচ্চাটা বাবা হারিয়েছে। এ রকম যেন কারো বাবা হারা হতে না হয়।’
জেলা মতুয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক অসীম পাল বলেন, ‘আমাদের অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা ছিলেন রূপকুমার। তাঁর মতো মানুষকে যারা খুন করেছে তাদের শাস্তি চাই।’
মতুয়া সম্প্রদায়ের খুন হওয়া জেলা সভাপতি রূপকুমার মজুমদার কেন্দ্রীয় মতুয়া মিশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। জেলার প্রায় এক লাখ মতুয়া অনুসারী ক্ষোভ প্রকাশ করে এর বিচার দাবি করেছেন।