By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: বিদায় মাহে রমজান আমাদের করণীয় কিছু আমল
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > বিদায় মাহে রমজান আমাদের করণীয় কিছু আমল
তাজা খবরসাতক্ষীরা

বিদায় মাহে রমজান আমাদের করণীয় কিছু আমল

Last updated: 2025/03/29 at 2:28 PM
করেস্পন্ডেন্ট 3 months ago
Share
SHARE

সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর ‍: আলহামদুলিল্লাহ। সকল প্রশংসা মহান রব্বুল আলামীনের, যিনি দয়া করে আমাদের পবিত্র মাহে রমযান উপহার দিয়ে ধন্য করেছেন। রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের অবারিত সওগাত নিয়ে, অন্তহীন তোহফা নিয়ে আমাদের মাঝে এসেছিলো মাহে রমযান। দীর্ঘ একটি মাস সিয়াম সাধনায় কাটানোর পরে আবার বিদায় নিয়ে চলে গেল মোবারক এই মাস। বলার অপেক্ষা রাখে না, অন্যান্য বছরের রমযানের তুলনায় এবারের রমযান ছিলো ব্যতিক্রম। করোনা ভাইরাসজনিত কারণে গোটা পৃথিবীতে এবারের রমযানের ইবাদত আমলে ছিল ভিন্ন চিত্র।বিদায় মাহে রমযান:অন্যান্য অনেক বিধি নিষেধের মত এই রমযানে নামাজের জামাআতে শামিল হতে মুসল্লিদের মসজিদে উপস্থিতির ক্ষেত্রেও ছিল নিয়ম কানূন। সে কারণে খতমে তারাবীহর আনন্দ, তৃপ্তি ও পরিতৃপ্তি থেকে অনেক জায়গায়ই মুসল্লীগণ ছিলেন বঞ্চিত। এক কথায় বলতে গেলে, আমাদের গোটা জীবন যাত্রাতেই ছিলো এক প্রকারের অস্থিরতা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সতর্কতার সাথে এই ব্যাপারটি মাথায় রেখে সকল ইবাদত বন্দেগী পালন করেছি। এতসব কিছুর পরেও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার অনেক তাওফীকপ্রাপ্ত বান্দা এই রমযানে, এত প্রতিকূলতার মাঝেও অধিক পরিমাণে আমল ইবাদতের মাধ্যমে নিজেদের আখেরাতের সঞ্চয়কে সমৃদ্ধ করেছেন। সৌভাগ্যবান তো তারাই। তাদের জন্য খোশখবরি। দুনিয়ার জীবনেরও সৌভাগ্য অর্জনে সচেষ্ট থেকেছেন পাশাপাশি। এরই মধ্যে অনেকেই রমযানে ই’তিকাফ পালন করেছেন। থেকেছেন মসজিদগুলোর নিরিবিলি পরিবেশে একান্তভাবে আল্লাহ তাআলাকে ডাকার খেয়ালে।এই বৈরি সময়েও থেমে ছিল না নেক আমল:আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার দরবারে শুকরিয়া আদায় করে শেষ করা যাবে না। তিনি তাওফিক না দিলে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কোনো নেক আমলও আমাদের দ্বারা করা সম্ভব নয়। বৈরি সময়ে, প্রতিকূল এই পরিস্থিতির ভেতরেও এবারের রমযানে অনেকেই রোযা তো পালন করেছেনই, সেই সাথে ফরয নামাজের পাশাপাশি তারাবিহ নামাজ, তাহাজ্জুদ নামাজ, অন্যান্য নফল নামাজসহ যাবতীয় নামাজের ইহতেমামও আলহামদুলিল্লাহ করেছেন। বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াতের ইহতেমাম করেছেন। যার যার অবস্থান থেকে ইলমে দ্বীন শেখার বিষয়ে সময় ব্যয় করেছেন। অনেকেই সাধ্যমতো দান-খয়রাত করেছেন। অসহায়-দুস্থ মানুষদের সেবা ও খেদমতে এগিয়ে এসেছেন। এগুলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার একান্ত তাওফিক ছাড়া সম্ভব ছিল না।এমনিভাবে গোটা রমাযান জুড়েই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার প্রিয় বান্দাগণ আরো বিভিন্ন প্রকারের নেক আমলে মনোনিবেশ করেছেন। বস্তুতঃ এসবই ছিলো পবিত্র মাহে রমযানের বরকত ও কল্যাণের বহিপ্রকাশ। এখন মাহে রমযানের বিদায়বেলায় আমাদের সবারই কিছু ভাববার বিষয় রয়েছে। কিছু চিন্তার বিষয় রয়েছে। আমাদের কিছু করণীয় রয়েছে। সেগুলো হলো- আমরা তো জানি না, আগামী রমযান আমরা পাবো কি না। পরবর্তী রমযান পর্যন্ত আমাদের হায়াতকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা প্রলম্বিত করবেন কি না। সে কারণে আমরা এখন থেকেই দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই যে, পরবর্তী জীবনে যত দিন বেঁচে থাকি, আমরা দ্বীনের উপর চলার সর্বোত চেষ্টা করে যাবো ইনশা-আল্লাহু তাআ’লা।ধরে রাখা চাই উত্তম ভ্যাসগুলো:পবিত্র মাহে রমযান উপলক্ষে যে সকল নেক কাজে অভ্যস্ত হয়েছিলাম, সেগুলোর বিষয়ে আমরা যেন উদাসীনতা প্রদর্শন না করি। পাঁচ ওয়াক্ত ফরয নামায যেন ইহতেমামের সাথে জামাআতের সাথে আদায় করি। কারণ, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা চাহেন তো এই নামাযের ইহতিমামই আমাদের জন্য গোটা দ্বীন পালন করাকে সহজ করে দিবে। তাহাজ্জুদ ও অন্যবিদ নফলের বিষয়ে আমাদের মধ্যে যে অভ্যস্ততা তৈরী হয়েছে, সেটা যেন আমরা ধরে রাখার চেষ্টা করি। প্রাত্যহিক জীবনে তিলাওয়াত, জিকির, তাসবিহাতসহ মাসনূন দুআ এবং আযকারগুলো যেন ছেড়ে না দেই আমরা। সযত্ন অভ্যস্ততায় যেন এগুলোকে আগলে রাখি সারাক্ষন।এক হাদীসে এসেছে,حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ , عَنْ مَالِكٍ , عَنْ ابْنِ شِهَابٍ , عَنْ أَبِي سَلَمَةَ , وَأَبِي عَبْدِ اللَّهِ الْأَغَرِّ , عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ : يَنْزِلُ رَبُّنَا تَبَارَكَ وَتَعَالَى كُلَّ لَيْلَةٍ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا حِينَ يَبْقَى ثُلُثُ اللَّيْلِ الْآخِرُ , يَقُولُ : مَنْ يَدْعُونِي فَأَسْتَجِيبَ لَهُ مَنْ يَسْأَلُنِي فَأُعْطِيَهُ مَنْ يَسْتَغْفِرُنِي فَأَغْفِرَ لَهُ .’সারা বছরই প্রতি রাত্রের শেষাংশে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রথম আসমানে নাযিল হয়ে বান্দাদের উদ্দেশ্য করে ঘোষণা করতে থাকেন, আছে কি কোনো ক্ষমা প্রার্থনাকারী; আমি তাকে ক্ষমা করে দেবো। আছে কি কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী; আমি তাকে রিযিক দান করবো। আছে কি কোনো প্রার্থনাকারী; আমি তাঁর প্রার্থনা কবুল করবো।’ -সহীহ বুখারি, হাদীস নং ১১৪৫, সহিহ মুসলিম, হাদীস নং ৭৫৮এই ঘোষণা সারা বছরই চলতে থাকে। তো আমরা নিজেদের দুনিয়া ও আখেরাতকে সাজানোর জন্য তাহাজ্জুদের ইহতেমামের অভ্যাস গড়ে তুলি। কুরআন মাজীদের বেশি বেশি তিলাওয়াত জারী রাখি। কুরআনের সাথে সম্পর্কই হতে পারে আমাদের নাজাত ও মুক্তির পথ। ইলমে দ্বীন অর্জনের তো কোনো সমাপ্তি পরিসমাপ্তি নেই। কোনো সীমা পরিসীমা নেই। নেই বয়সের কোনো ভেদাভেদ।তাই আসুন, আমরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে ইলমে দ্বীন শেখার বিষয়ে যত্নবান থাকি। আমাদের মনে রাখতে হবে, দ্বীনের সহীহ ইলম ছাড়া দ্বীনের উপর চলা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। দান-খায়রাতের ক্ষেত্রেও আল্লাহ তাআলার দেওয়া সম্পদ থেকে আল্লাহ তাআলার রাস্তায় খরচ করি। আল্লাহ পাকই সম্পদে বরকত দান করবেন। বরকতদাতা তো তিনিই।রমযানের এই গোটা একমাস আমরা রোযা পালন করেছি। সবাই আমরা যার যার তাওফীক মতো রোযার ঈমানী ও আখলাকী যত ফায়দা আছে, রোযার আত্মিক ও দৈহিক যত উপকার রয়েছে, অর্জন করেছি। এই ফায়দা ও উপকারগুলো সামনে রেখে আমরা সারা বছরই হাদীস শরীফে যেসব দিনে নফল রোযার কথা এসেছে, সেই রোযাগুলোর বিষয়ে যত্নবান হতে পারি।সপ্তাহের প্রতি সোম ও বৃহস্পতিবারের রোযা, মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখের রোযা, আশুরার রোযা, আরাফার দিনের রোযা ইত্যাদি রোযাগুলোর বিষয়ে আমরা যত্নবান হতে পারি।এক মাস রোযা পালনের পর আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আনন্দের নিদর্শন হিসাবে আমাদেরকে ঈদ দান করেছেন। এই ঈদের বিষয়ে ইসলামী শরীয়তে বিস্তারিত বিধান বর্ণিত হয়েছে। আমরা তো ঈদে কত রকম কর্মকাণ্ড করে থাকি, যেগুলো হয়তো শরীয়ত সমর্থন করে না। সেগুলো সযত্নে এড়িয়ে চলতে হবে আমাদের।যাই হোক, ইসলামী শরীয়তে রোযার ঈদের অন্যতম বিধান হলো, ছদকাতুল ফিতর। নিসাব পরিমাণ সম্পদের অধিকারী ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট পরিমাণে ছদকাতুল ফিতর আদায় করতে হয়।ইসলামে এই ছদকাতুল ফিতরের বিধান দান করার তাৎপর্য বিষয়ে হাদীস শরীফে পরিষ্কার বিবরণ এসেছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেন,فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصَّائِمِ مِنَ اللَّغْوِ وَالرَّفَثِ وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ. مَنْ أَدَّاهَا قَبْلَ الصَّلاَةِ فَهِىَ زَكَاةٌ مَقْبُولَةٌ، وَمَنْ أَدَّاهَا بَعْدَ الصَّلاَةِ فَهِىَ صَدَقَةٌ مِنَ الصَّدَقَاتِ.আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সদকাতুল ফিতর আবশ্যক করে দিয়েছেন অনর্থক কথাবার্তা ও অশ্লীল কাজকর্ম থেকে রোযার পবিত্রতা সাধনের জন্য এবং অসহায়-দুস্থদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার জন্য। সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৬১১এখানে বর্ণিত এই হাদিসে পরিষ্কারভাবেই সদকাতুল ফিতরের দুটি উপকারিতা ও তাৎপর্যের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।প্রথমত, অনর্থক কথাবার্তা ও অশ্লীল কাজকর্মের কারণে রোযার যথাযথ হক আদায়ে যেসব ত্রুটি-বিচ্যুতি তৈরী হয়, সেগুলোর কাফফারা হয়ে যায় এটি, দ্বিতীয়ত এর মাধ্যমে সমাজের অসহায়-দুস্থজনদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ারও এক প্রকার ব্যবস্থা হয়।উদাসীনতা নয় কখনোই :এই জন্য সবারই করণীয়, এই বিধানের বিষয়ে উদাসীনতা প্রদর্শন না করা। বিধান হচ্ছে ঈদের দিন আসার আগে আগেই ছদকাতুল ফিতর আদায় করে দেওয়া। যাতে করে ঈদগাহে উপস্থিত হওয়ার আগে নিজের রোযাকে পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করে নেওয়া যায় এবং গরীব মানুষও যেন ঈদের উৎসবে অংশগ্রহণ করতে পারে।এক হাদীসে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,“مَنْ صَامَ رَمَضَانَ، ثُمَّ أَتْبَعَهُ سِتًّا مِنْ شَوَّالٍ، كَانَ كَصِيَامِ الدَّهْرِ “.যে ব্যক্তি রমযানের রোযা পালন করলো এরপরে শাওয়াল মাসে ছয়টি রোযা রাখলো, সে সারা বছর রোযা রাখার সওয়াব লাভ করবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৮১৫দেখুন! আল্লাহ তাআলা কত বড় মেহেরবান! রমযান কখনো ২৯ দিনে গেলেও আল্লাহ পাক আপন মেহেরবানীতে ত্রিশ দিনের সওয়াবই বান্দাকে দেন। এরপরে শাওয়ালের ছয় রোযাকে যদি যোগ করা হয় তাহলে হয় মোট ছত্রিশ রোযা।বান্দার নেকী-বদী লিপিবদ্ধ করা হয়; কিয়ামতের দিন বান্দার সামনে তা মেলে ধরা হবে। ছোট বড় সবকিছু লেখা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে আল্লাহ তাআলার দয়া দেখুন- নেক কাজের ইচ্ছা করলেই একটি নেকী লেখা হয় আর সে নেক কাজটি করলে দশ থেকে সাতশটি পর্যন্ত নেকী লেখা হয়; কখনো আল্লাহ আরো বাড়িয়ে দেন। পক্ষান্তরে কেউ যদি কোনো গোনাহের ইচ্ছা করে, তো যতক্ষণ গোনাহটি না করে ততক্ষণ কোনো গোনাহ লেখা হয় না। তারপর যদি গোনাহটি করে ফেলে তখন মাত্র একটি পাপ লেখা হয়।مَنْ جَآءَ بِالْحَسَنَةِ فَلَهٗ عَشْرُ اَمْثَالِهَا، وَ مَنْ جَآءَ بِالسَّیِّئَةِ فَلَا یُجْزٰۤی اِلَّا مِثْلَهَا وَ هُمْ لَا یُظْلَمُوْن.কেউ কোনো সৎ কাজ করলে সে তার দশ গুণ পাবে আর কেউ কোনো অসৎ কাজ করলে তাকে শুধু একটি পাপের শাস্তি দেওয়া হবে। আর তাদের প্রতি কোনো যুলুম করা হবে না। -সূরা আনআম (৬) : ১৬০হাদীসে কুদসীতে হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা বলেছেন-إِذَا هَمّ عَبْدِي بِحَسَنَةٍ وَلَمْ يَعْمَلْهَا، كَتَبْتُهَا لَهُ حَسَنَةً، فَإِنْ عَمِلَهَا كَتَبْتُهَا عَشْرَ حَسَنَاتٍ إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ، وَإِذَا هَمّ بِسَيِّئَةٍ وَلَمْ يَعْمَلْهَا، لَمْ أَكْتُبْهَا عَلَيْهِ، فَإِنْ عَمِلَهَا كَتَبْتُهَا سَيِّئَةً وَاحِدَةً.বান্দা যখন কোনো নেক কাজের ইচ্ছা করে, উক্ত নেক কাজ না করলেও (এ ইচ্ছার কারণে) একটি নেকী লেখা হয়। যদি সে নেক কাজটি করে তাহলে দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত নেকী লেখা হয়। আর যখন কোনো গোনাহের ইচ্ছা করে, কিন্তু ওই পাপ কাজটি করে না; তখন (এ ইচ্ছার কারণে) কোনো গোনাহ লেখা হয় না। হাঁ, যদি ওই পাপ কাজটি করে বসে তখন মাত্র একটি পাপ লেখা হয়। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১২৮কোথায় এক আর কোথায় দশ থেকে সাতশ! এছাড়া গোনাহ মাফ হওয়ার বিভিন্ন প্রসঙ্গ তো রয়েছেই। এই আমল করলে পিছনের এক বছরের গোনাহ মাফ হয়। ওই আমল করলে গোনাহ মাফ। এর পরও কি নেকির পাল্লা ভারি হবে না!সারা বছর রোজা রাখার সাওয়াব মিলবে যে আমলেঃএবার আল্লাহ তাআলার দয়া ও অনুগ্রহের রীতি দেখুন, প্রতিটি রোযার দশগুণ সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়। তাহলে ৩৬ এর দশগুণ হলো ৩৬০। আর চাঁদের হিসাবে বছর তো ৩৬০ দিনের কমই হয়ে থাকে।সুতরাং, কোনো ব্যক্তি রমযানের রোযা ও শাওয়ালের ৬ রোযা পালন করলে সে সারা বছরের রোযা রাখারই সওয়াব অর্জন করবে। আমরা কেউই যেন আল্লাহ পাকের এত বড় দান গ্রহণ করা থেকে পিছিয়ে না থাকি।চাই বেশি বেশি তাওবা ইস্তেগফার : কারণ, এক পৃথিবী পাপও ক্ষমা করেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লাঃবান্দা নিজের পাপ দেখে নিজেই নিরাশ হয়ে যায়, হতাশ হয়ে যায়- ভাবতে থাকে, হায় হায়! আমি যত পাপ করেছি, আমার বুঝি ক্ষমা নেই! কিন্তুু বান্দার পাপের সীমা আছে, দয়াময় রহমানুর রাহীমের ক্ষমার কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। হাদীসে কুদসীতে এরই একটি অনন্য খোশখবরি দিয়েছেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। বান্দা! কত গোনাহ করেছ তুমি? তোমার গোনাহ দ্বারা পৃথিবী পূর্ণ হয়ে গেছে! আসমান পর্যন্ত পৌঁছে গেছে তোমার পাপরাশি! শিরক থেকে মুক্ত হয়ে, তওবা করে ফিরে এসো আমার কাছে, সকল পাপ ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না!হযরত আনাস ইবনে মালেক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তাআলা বলেছেন-يَا ابْنَ آدَمَ إِنّكَ مَا دَعَوْتَنِي وَرَجَوْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ عَلَى مَا كَانَ فِيكَ وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ لَوْ بَلَغَتْ ذُنُوبُكَ عَنَانَ السّمَاءِ ثُمّ اسْتَغْفَرْتَنِي غَفَرْتُ لَكَ، وَلاَ أُبَالِي، يَا ابْنَ آدَمَ إِنّكَ لَوْ أَتَيْتَنِي بِقُرَابِ الأَرْضِ خَطَايَا ثُمّ لَقِيتَنِي لاَ تُشْرِكُ بِي شَيْئًا لأَتَيْتُكَ بِقُرَابِهَا مَغْفِرَةً.’বনী আদম! তুমি যতক্ষণ আমাকে ডাকতে থাকবে, আমার কাছে (ক্ষমার) আশা করতে থাকবে, আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না।বনী আদম! তোমার পাপরাশি যদি মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি ক্ষমা করে দিব; কোনো পরোয়া করব না।বনী আদম! তুমি যদি পৃথিবী-ভর্তি পাপ নিয়ে আমার কাছে আস এবং শিরক থেকে মুক্ত হয়ে আমার সাথে সাক্ষাৎ কর আমি পৃথিবী-ভর্তি ক্ষমা নিয়ে তোমার সাথে সাক্ষাৎ করব।’ -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৫৪০নিরাশ হয়ো না, হতাশ হয়ো না, তিনি সব গোনাহ মাফ করে দেনঃপাপের বোঝায় ন্যুব্জ কোনো বান্দা মনে করতে পারে- আমার গোনাহ তো অনেক বেশি; কয়েক পৃথিবী পূর্ণ হয়ে যাবে আমার পাপের দ্বারা। মদ, যিনা, হত্যা, লুণ্ঠন কোন পাপ নেই যা আমি করিনি; জীবনটাই কেটেছে পাপের মাঝে। এখন আর তওবা করে কী হবে? তাছাড়া আমার মত পাপীকে কি আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ক্ষমা করবেন!তো এমন পাপীর জন্যও আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ক্ষমার ঘোষণা দিলেন- তুমিও নিরাশ হয়ো না আমার রহমত থেকে; তোমারও সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত-حَدَّثَنِي إِبْرَاهِيمُ بْنُ مُوسَى ، أَخْبَرَنَا هِشَامُ بْنُ يُوسُفَ ، أَنَّ ابْنَ جُرَيْجٍ ، أَخْبَرَهُمْ ، قَالَ يَعْلَى : إِنَّ سَعِيدَ بْنَ جُبَيْرٍ أَخْبَرَهُ ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا : أَنَّ نَاسًا مِنْ أَهْلِ الشِّرْكِ كَانُوا قَدْ قَتَلُوا ، وَأَكْثَرُوا ، وَزَنَوْا ، وَأَكْثَرُوا ، فَأَتَوْا مُحَمَّدًا صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، فَقَالُوا : إِنَّ الَّذِي تَقُولُ وَتَدْعُو إِلَيْهِ لَحَسَنٌ لَوْ تُخْبِرُنَا أَنَّ لِمَا عَمِلْنَا كَفَّارَةً ، فَنَزَلَ : وَالَّذِينَ لا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلا بِالْحَقِّ وَلا يَزْنُونَ سورة الفرقان آية 68 ، وَنَزَلَ : قُلْ يَا عِبَادِيَ الَّذِينَ أَسْرَفُوا عَلَى أَنْفُسِهِمْ لا تَقْنَطُوا مِنْ رَحْمَةِ اللَّهِ سورة الزمر آية 53 .’কিছু মুশরিক নবীজীর কাছে এল, যারা মানুষ হত্যা করেছে; অগণিত মানুষকে হত্যা করেছে। যারা যিনা করেছে; প্রচুর পরিমাণে যিনা করেছে। তারা বলল, আপনি যা বলেন এবং যেদিকে আহ্বান করেন তা তো খুব সুন্দর ও উত্তম। যদি আপনি আমাদের বলতেন যে, আমাদের অতীত পাপের কাফফারা আছে! তখন নাযিল হল-وَالَّذِينَ لَا يَدْعُونَ مَعَ اللَّهِ إِلَهًا آخَرَ وَلَا يَقْتُلُونَ النَّفْسَ الَّتِي حَرَّمَ اللَّهُ إِلَّا بِالْحَقِّ وَلَا يَزْنُونَ وَمَن يَفْعَلْ ذَلِكَ يَلْقَ أَثَامًايُضَاعَفْ لَهُ الْعَذَابُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَيَخْلُدْ فِيهِ مُهَانًاإِلَّا مَن تَابَ وَآمَنَ وَعَمِلَ عَمَلًا صَالِحًا فَأُوْلَئِكَ يُبَدِّلُ اللَّهُ سَيِّئَاتِهِمْ حَسَنَاتٍ وَكَانَ اللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًاএবং যারা আল্লাহর সাথে অন্য কোনো মাবুদের ইবাদত করে না। এবং আল্লাহ যে প্রাণকে মর্যাদা দান করেছেন তাকে অন্যায়ভাবে বধ করে না এবং ব্যভিচার করে না। (যে ব্যক্তিই এরূপ করবে তাকে তার গোনাহের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। কিয়ামতের দিন তার শাস্তি বৃদ্ধি করে দ্বিগুণ করা হবে। এবং সে লাঞ্ছিত অবস্থায় তাতে সর্বদা থাকবে।তবে কেউ তওবা করলে, ঈমান আনলে এবং সৎকর্ম করলে, আল্লাহ এরূপ লোকদের পাপরাশিকে পুণ্য দ্বারা পরিবর্তিত করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। -সূরা আল ফুরকান : ৬৮-৭০এবং নাযিল হল-قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ، ( اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا، اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ).বলে দাও, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের উপর অবিচার করেছ- আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। (আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ -সূরা যুমার : আয়াত ৫৩, -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৮১০সূরা যুমারের উপরোক্ত আয়াতের তাফসীরে ইবনে কাসীর রাহ. কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করেন। এরপর বলেন-فَهَذِهِ الْأَحَادِيثُ كُلّهَا دَالّةٌ عَلَى أَنّ الْمُرَادَ: أَنّهُ يَغْفِرُ جَمِيعَ ذَلِكَ مَعَ التّوْبَةِ…এসকল হাদীস থেকে বুঝা যায়, এ আয়াত দ্বারা উদ্দেশ্য, আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করেন- তওবার শর্তে। (তাফসীরে ইবনে কাসীর, সূরা যুমার, ৫৩ নং আয়াতের তাফসীর দ্রষ্টব্য)আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লার রহমতের অবস্থা দেখুন, বান্দা যখন তওবা করে ফিরে অসে তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা শুধু ক্ষমাই করেন না, বরং ক্ষমার জন্য বাহানা তৈরি করেন। বনী ইসরাঈলের নিরানব্বই হত্যাকারীর ঘটনা অনেকেরই জানা। সেই ব্যক্তি তওবা করে ফিরে এল এবং নেককারদের এলাকার দিকে রওয়ানা হল। পথিমধ্যে যখন তার মৃত্যুক্ষণ ঘনিয়ে এল তখন রহমত ও আযাবের ফিরিশতা এল এবং প্রত্যেকে তার জান কবয করতে চাইল। এক পর্যায়ে ফয়সালা হল, সে যদি নেককারদের এলাকার কাছাকাছি হয় রহমতের ফিরিশতারা তাকে নিয়ে যাবে, অন্যথায় তাকে নিয়ে যাবে আযাবের ফিরিশতাগন। সহিহ বুখারি বর্ণিত হাদিসের মূল ইবারত উদ্ধৃত করছি-حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ أَبِي عَدِيٍّ ، عَنْ شُعْبَةَ ، عَنْ قَتَادَةَ ، عَنْ أَبِي الصِّدِّيقِ النَّاجِيِّ ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ رَضِيَ اللَّهُ ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : كَانَ فِي بَنِي إِسْرَائِيلَ رَجُلٌ قَتَلَ تِسْعَةً وَتِسْعِينَ إِنْسَانًا ثُمَّ خَرَجَ يَسْأَلُ فَأَتَى رَاهِبًا فَسَأَلَهُ ، فَقَالَ لَهُ : هَلْ مِنْ تَوْبَةٍ ؟ ، قَالَ : لَا ، فَقَتَلَهُ فَجَعَلَ يَسْأَلُ ، فَقَالَ لَهُ : رَجُلٌ ائْتِ قَرْيَةَ كَذَا وَكَذَا فَأَدْرَكَهُ الْمَوْتُ فَنَاءَ بِصَدْرِهِ نَحْوَهَا فَاخْتَصَمَتْ فِيهِ مَلَائِكَةُ الرَّحْمَةِ وَمَلَائِكَةُ الْعَذَابِ فَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَقَرَّبِي ، وَأَوْحَى اللَّهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي ، وَقَالَ : قِيسُوا مَا بَيْنَهُمَا فَوُجِدَ إِلَى هَذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ فَغُفِرَ لَهُউক্ত হাদিসে আলোচিত ঘটনার যে দিকটি আমাদের আলোচ্য বিষয় তা হল-فَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَقَرّبِي، وَأَوْحَى اللهُ إِلَى هَذِهِ أَنْ تَبَاعَدِي، وَقَالَ: قِيسُوا مَا بَيْنَهُمَا، فَوُجِدَ إِلَى هَذِهِ أَقْرَبَ بِشِبْرٍ، فَغُفِرَ لَهُ.আল্লাহ নেককার লোকদের ভূমিকে বললেন, তুমি নিকটবর্তী হও। আর অপর ভূমিকে বললেন, তুমি দূরবর্তী হও। তারপর যখন ভূমির দূরত্ব মাপা হল, দেখা গেল সে নেককারদের এলাকার দিকে এক বিঘত এগিয়ে রয়েছে। তখন তাকে ক্ষমা করে দেওয়া হল এবং রহমতের ফিরিশতা তার জান কবয করল। -সহিহ বুখারি, হাদীস ৩৪৭০একটু লক্ষ্য করুন, ঘটনার বর্ণনা থেকে বুঝা যায় যে, সে নেককারদের ভূমির দিকে এগিয়ে ছিল না। আল্লাহর আদেশে তা নিকটবর্তী হয়েছে। অর্থাৎ, সে যখন তওবা করে ফিরে এসেছে তো আল্লাহ তার ক্ষমার জন্য নিজ রহমতে বাহানা তৈরি করে দিয়েছেন! হাঁ, আল্লাহ এমনই গাফূরুর রাহীম। প্রয়োজন শুধু বান্দার একটু এগিয়ে আসা।এ যেন ঐ হাদীসেরই একটি বাস্তব উদাহরণ, যে হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেছেন-عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ـ رضى الله عنه ـ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَقُولُ اللَّهُ تَعَالَى أَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِي بِي، وَأَنَا مَعَهُ إِذَا ذَكَرَنِي، فَإِنْ ذَكَرَنِي فِي نَفْسِهِ ذَكَرْتُهُ فِي نَفْسِي، وَإِنْ ذَكَرَنِي فِي مَلأٍ ذَكَرْتُهُ فِي مَلأٍ خَيْرٍ مِنْهُمْ، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ بِشِبْرٍ تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ ذِرَاعًا، وَإِنْ تَقَرَّبَ إِلَىَّ ذِرَاعًا تَقَرَّبْتُ إِلَيْهِ بَاعًا، وَإِنْ أَتَانِي يَمْشِي أَتَيْتُهُ هَرْوَلَةً ‏”‏‏.’আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘আল্লাহ আয্যা অজাল্ল বলেন, ‘আমি সেইরূপ, যেরূপ বান্দা আমার প্রতি ধারণা রাখে। আমি তার সাথে থাকি, যখন যে আমাকে স্মরণ করে। আল্লাহর কসম! নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দার তওবায় তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অপেক্ষা বেশি খুশী হন, যে তার মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া বাহন ফিরে পায়। আর যে ব্যক্তি আমার দিকে এক বিঘত পরিমাণ অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে এক হাত পরিমাণ অগ্রসর হই। যে আমার দিকে এক হাত পরিমাণ অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দুই হাত পরিমাণ অগ্রসর হই। আর সে যখন আমার দিকে হেঁটে অগ্রসর হয়, আমি তখন তার দিকে দৌড়ে অগ্রসর হই।’ -সহীহুল বুখারী ৭৪০৫, ৭৫০৫, ৭৫৩৬, ৭৫৩৭, মুসলিম ২৬৭৫, তিরমিযী ২৩৮৮, ইবনু মাজাহ ৩৭২২, আহমাদ ৭৩৭৪, ২৭৪০৯, ৮৪৩৬, ৮৮৩৩, ৯০০১, ৯০৮৭, ৯৩৩৪, ৯৪৫৭সুবহানাল্লাহ! ভাবুন তো একবার! আল্লাহ তাআ’লা কেমন সুন্দর কথা বলেছেন! ‘বান্দা যদি তাঁর দিকে এক বিঘত এগিয়ে আসে তিনি বান্দার দিকে এক হাত এগিয়ে আসেন।’ মুমিনের অনন্য গুণ। তাওবা অর্থ- ফিরে আসা। পাপের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা থেকে অনেক দূরে সরে যায় আর তাওবার মাধ্যমে ফিরে আসে। পাপী বান্দা যখন তাওবার মাধ্যমে ফিরে আসে তখন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআ’লা কত খুশি হন- একটি হাদীসে তার উদাহরণ টানা হয়েছে এভাবে-لَلّهُ أَشَدّ فَرَحًا بِتَوْبَةِ عَبْدِهِ حِينَ يَتُوبُ إِلَيْهِ، مِنْ أَحَدِكُمْ كَانَ عَلَى رَاحِلَتِهِ بِأَرْضِ فَلَاةٍ، فَانْفَلَتَتْ مِنْهُ وَعَلَيْهَا طَعَامُهُ وَشَرَابُهُ، فَأَيِسَ مِنْهَا، فَأَتَى شَجَرَةً، فَاضْطَجَعَ فِي ظِلِّهَا، قَدْ أَيِسَ مِنْ رَاحِلَتِهِ، فَبَيْنَا هُوَ كَذَلِكَ إِذَا هُوَ بِهَا، قَائِمَةً عِنْدَهُ، فَأَخَذَ بِخِطَامِهَا، ثُمّ قَالَ مِنْ شِدّةِ الْفَرَحِ: اللهُمّ أَنْتَ عَبْدِي وَأَنَا رَبّكَ، أَخْطَأَ مِنْ شِدّةِ الْفَرَحِ.’এক ব্যক্তি বিরান মরুভূমিতে চলছিল। তার খাদ্য-পানীয় সব ছিল তার বাহন জন্তুটির পিঠে। (সে এক স্থানে বিশ্রামের জন্য নামলো এবং ঘুমিয়ে গেল। উঠে দেখল,) খাদ্য-পানীয়সহ বাহন জন্তুটি পালিয়ে গেছে। সে নিরাশ হয়ে একটি গাছের ছায়ায় শুয়ে গেল। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখল, বাহন জন্তুটি (খাদ্য-পানীয়সহ) উপস্থিত! সাথে সাথে বাহনের লাগাম ধরে ফেলল এবং আনন্দের আতিশয্যে বলে উঠল-اللهُمّ أَنْتَ عَبْدِي وَأَنَا رَبّكَ.আল্লাহ! তুমি আমার বান্দা আমি তোমার রব! আনন্দের আতিশয্যে সে উল্টো বলল (সে বলতে চেয়েছিল, আল্লাহ! তুমি আমার রব আর আমি তোমার বান্দা!)। বান্দার তাওবায় আল্লাহ ঐ ব্যক্তির চেয়েও বেশি খুশি হন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭৪৭তো যে রব আকাশসম গোনাহ ক্ষমা করে দেন, ক্ষমা করার জন্য বাহানা তৈরি করেন এবং বান্দার তাওবায় এত খুশি হন তাঁর বান্দার কি কোনো গোনাহ অবশিষ্ট রেখে দেয়া সাজে! তাঁর বান্দার নিষ্পাপ না হওয়া কি মানায়! কতই না সুন্দর হৃদয় আপ্লুত করা তাঁর ঘোষনা-يَا عِبَادِي إِنَّكُمْ تُخْطِئُونَ بِاللَّيْلِ وَالنَّهَارِ، وَأَنَا أَغْفِرُ الذُّنُوبَ جَمِيعًا، فَاسْتَغْفِرُونِي أَغْفِرْ لَكُمْ.’হে আমার বান্দাগণ! তোমরা তো রাতদিন ভুল কর। আর আমি সকল অপরাধ ক্ষমা করি। সুতরাং, আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি তোমাদের ক্ষমা করবো।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৭৭শেষের প্রার্থনাঃআল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে অধিক পরিমানে নেক আমল করার তাওফীক দান করুন। রহমত, বরকত এবং নাজাতের মাস মাহে রমযানে কৃত নেক আমলের ছায়া এবং ছোঁয়া যেন ধরে রাখতে পারি যাপিত জীবনে সারাটি বছর এবং সমগ্র জীবন- সেই তাওফিক দান করুন। আমরা যেন তাওবা ইস্তেগফারের মাধ্যমে ফিরে আসতে পারি আমাদের মালিক গফূর ও গাফফার, রহিম ও রহমান এর অতি নিকটে। লাভ করতে পারি তাঁর নৈকট্য। তাঁর অফুরান রহমতের বারিধারায় তিনি যেন সিক্ত করে নেন আমাদের সকলকে। আল্লাহুম্মা আমীন।সময় নিয়ে পোস্ট পাঠে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। ঈদের আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সকলের ঘরে ঘরে।

করেস্পন্ডেন্ট March 31, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article সুন্দরবন থেকে ২৯ প্রজাতির প্রাণি বিলুপ্ত!
Next Article পবিত্র ঈদুল-ফিতরের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত সুন্দরবন
Leave a comment

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

দিনপঞ্জি

July 2025
S M T W T F S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
« Jun    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
সাতক্ষীরা

সুন্দরবনরক্ষায় দায়িত্ব আমাদের সকলের ‌,ইউএনও রণী খাতুন

By করেস্পন্ডেন্ট 8 hours ago
সাতক্ষীরা

জলবায়ুর প্রভাব ‌,স্বাদ-সুগন্ধ নেই ‌ইলিশের

By করেস্পন্ডেন্ট 9 hours ago
মহানগর

নগরীতে আবাসিক হোটেল থেকে নারীর লাশ উদ্ধার

By করেস্পন্ডেন্ট 10 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

সাতক্ষীরা

সুন্দরবনরক্ষায় দায়িত্ব আমাদের সকলের ‌,ইউএনও রণী খাতুন

By করেস্পন্ডেন্ট 8 hours ago
সাতক্ষীরা

জলবায়ুর প্রভাব ‌,স্বাদ-সুগন্ধ নেই ‌ইলিশের

By করেস্পন্ডেন্ট 9 hours ago
সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ ভেটখালী মহাসড়কের বেহাল অবস্থা, পরিস্থিতি জনগণের ধৈর্যের বাইরে

By করেস্পন্ডেন্ট 10 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?