By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
  • ALL E-Paper
Reading: বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অলংকার
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জেলার খবর > সাতক্ষীরা > বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অলংকার
তাজা খবরসাতক্ষীরা

বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির অলংকার

Last updated: 2025/11/19 at 2:31 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 2 weeks ago
Share
SHARE

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : আলীপ্রকৃতির অপরূপ লীলা নিকেতন বাংলাদেশ। প্রকৃতি তার অকৃপণ হাতে নানা উপাচারে সাজিয়ে রেখেছে বঙ্গজননীকে। কোথাও পাহাড়ের নৈসর্গিক মনোরম দৃশ্য। কোথাও সবুজ বনানী ঘেরা বনরাজি, কোথাও আবার দিগন্ত জোড়া ফসলের মাঠ। আবার কোথাও রয়েছে হাওর-বাঁওড়ের বিস্তীর্ণ জলরাশি।
সব মিলিয়ে সত্যিই বাংলা মা যেন এক অপরূপা রূপে আবির্ভূত। বিভিন্ন পাখি ও প্রাণীদের বিচরণ এই প্রকৃতিকে অলংকরণ করে আরও মোহনীয় করে তোলে। ধানের দেশ, গানের দেশ বাংলাদেশ। আবার বিভিন্ন পাখি ও প্রাণীদের দেশও বাংলাদেশ।
তবে কালের বিবর্তনে বন উজাড় হচ্ছে। বড় বড় গাছপালা না থাকায় দেশের অনেক প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। এর পরেও পাখি ও প্রাণীদের দেশ হিসেবে বাংলার গৌরব অটুট।
পাখি
এখনো পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে। পাখির কিচির মিচির শব্দে আমরা বিমোহিত হই। এখনো বকের সারি হারিয়ে যায়নি। বসন্তে কোকিলের কুহুতান কতই না সুমধুর। কামরাঙ্গা গাছটিতে কামরাঙ্গা খেতে বসা সবুজে লালে টিয়া পাখির উপস্থিতি আমাদের দোলা দেয়।
তাইতো বাংলা শুধু শস্য শ্যামল নয়। এ দেশে গাছে গাছে বন-বাদাড়ে পাহাড়-পর্বতে বাস করে নানা জাতের পাখি। এসব পক্ষীকূলের সুরের মূর্ছনায় অনুরণিত হয় বাংলার আকাশ বাতাস। পাখ-পাখালীর সুর লহরীতে সুর সৌন্দর্যে আমরা হই আত্মহারা। কবিগণ কোকিলের স্বরে বলে ওঠেন কবিতা।
আমাদের চেনাজানা অনেক পাখি রয়েছে এরা যেন আমাদের নিত্য সাথী Ñ কোকিল, টিয়া, ময়না, শালিক দোয়েল, বক, মাছরাঙ্গা, ঘুঘু, বাবুই, চড়ুই, বউ কথা কও, চাতক, ফিঙ্গে, বুলবুলি কত পাখি। এদের দল বেঁধে চলা প্রকৃতিকে যেন অপরূপ রূপে সাজিয়ে তোলে। পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় বাংলার মাঠঘাট।
সকালে পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙ্গে, আবার সাঁঝের বেলায় পাখির কাকলিতে দিনের কোলাহল শেষ হয়। ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি ওড়ার দৃশ্য প্রকৃতিকে দেয় এক অন্য রূপ। সবুজ অরণ্যে পাখি ও বন্য প্রাণীর কূজন এক মোহনীয় পরিবেশের সৃষ্টি করে। তাড়িত মনকেও ক্ষণিকের জন্য করে তোলে আবেগময় উন্মাতাল।
তাই প্রকৃতিপ্রেমী কবিদের রচনায় পাখি ও বন্য বা পোষা প্রাণীদের উপস্থিতি আরও বেশি ধরা দেয়। পাখি শুধু নন্দনতত্ত্বের খোরাকই যোগায় না, পাখি প্রকৃতিকে ফুলে-ফলে ভরিয়ে দেয়ার জন্য বিরাট অবদান রাখে।
কেননা ফুল-ফসলের পরাগায়নে আরও স্পষ্ট করে বললে প্রজনন বা উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিশেষ অবদান পাখির। যা অর্থনৈতিক দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাছাড়া ঋতুভেদে আমাদের দেশে আসে অনেক প্রজাতির অতিথি পাখি।
শীত মৌসুমে শীতের তীব্রতা সহ্য করতে না পেরে সুদূর সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান অঞ্চল থেকে একটু ওম পাওয়ার আশায় হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে চলে আসে আমাদের দেশে। হাকালুকি, হাইল হাওরসহ বিভিন্ন হাওর-বাঁওড় ও জাহাঙ্গীরনগর ক্যাম্পাসে অতিথিদের আগমন ঘটে। আমাদের নিজস্ব পাখ-পাখালী ও পরিযায়ী পাখিদের আগমনে প্রকৃতিতে ফুটে ওঠে এক অন্য রকম দৃশ্য।
অতিথি পাখিদের আগমনে ও তাদের জলকেলিতে প্রকৃতি সেজে ওঠে ভিন্ন সাজে। এদের ডানা ঝাপটানি ও কলকাকলিতে মুখরিত হয় বিভিন্ন হাওর-বাঁওড় ও লেকগুলো। আবার শীত শেষে এরা আপনভূমে উড়াল দেয়।
এর মধ্যে অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে চারদিক। কিন্তু শিকারীদের লোলুপ দৃষ্টি যাতে না পড়ে পাখিদের ওপর এ বিষয়ে সকলের সচেতন থাকা প্রয়োজন। কারণ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা ও প্রকৃতি সাজনের এক রূপসী অলংঙ্কার যেন নষ্ট না হয়ে যায়, সেদিকে সকলকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
তাছাড়া পাখি অর্থনৈতিক উন্নতিতেও সহায়ক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে মানবজাতি তার এ পরম হিতৈষীকে ধীরে ধীরে নিঃশেষ করে ফেলছে নিজেদের প্রয়োজনে। যা কিনা রীতিমতো আত্মঘাতী কর্মকান্ডের সামিল। তেমনই উদ্বেগজনক একটি বিষয়ের অবতারণা করেছে একটি পরিবেশবাদী সংস্থা।
তাদের ভাষায়, অনুকূল পরিবেশ, আবাসস্থলের অভাবে পৃথিবীর সাধারণ পক্ষী ও বন্যপ্রাণীকুল ক্রমেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যার পরিণতি ভয়াবহ।
বিপদে আছে যেসব পাখি
পরিবেশবাদী সংস্থা বার্ড লাইফ ইন্টারন্যাশনালের এক সমীক্ষা রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউরোপে সাধারণ পাখির ৪৫ ভাগ বিলীন হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার পরিসংখ্যান রীতিমতো আরও উদ্বেগজনক। কেননা সেখানকার ৮০ ভাগেরও বেশি পাখি নিঃশেষ হয়ে গেছে। বলা হয়েছে গত ২৬ বছরে ইউরোপের ২০টি দেশের ১২৪টি প্রজাতির অন্তত: ৫৬টি বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
এক্ষেত্রে শস্যক্ষেতে বিচরণকারী পাখি বিলুপ্তির হার ৭৯ শতাংশ। আফ্রিকার অবস্থাও নিতান্তই উদ্বেগজনক। শিকারীদের খপ্পরে পড়ে সেখানকার অসংখ্য পাখি ও বন্যপ্রাণী প্রতি বছর নিঃশেষ হেয় যাচ্ছে। এশিয়ার দেশুগুলোতে অতিথি পাখি শিকারের প্রবণতা মারাত্মক। ফলে ৬২ শতাংশ পাখি বিলুপ্ত হয়েছে শিকারীদের হাতে।
গবেষকদের মতে শুধু শিকারীদের লোলুপদৃষ্টিই পাখি ধ্বংসের একমাত্র কারণ নয়। জীববৈচিত্র্য ধ্বংসও এক্ষেত্রে অন্যতম কারণ। প্রতিদিন পৃথিবীর কোথাও না কোথাও জীববৈচিত্র্যের ওপর হাত পড়ছে। ফলে পাখি ও বন্যপ্রাণীরা হারাচ্ছে তার বিচরণ ক্ষেত্র। খাদ্য সংকট এক্ষেত্রে ফেলছে আরও ভয়াবহ প্রভাব।
পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর মতে, সংশ্লিষ্ট সরকারগুলো জীববৈচিত্র্য রক্ষায় যে তহবিল গঠনের প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল ধরিত্রী সম্মেলনে – তা পূরণে ব্যর্থতাই পাখি ও বন্যপ্রাণী বিলুপ্তিকে ত্বরান্বিত করছে। তাদের ভাষায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ১২২৬টি প্রজাতি বর্তমানে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে ১৯০টি প্রজাতি অচিরেই বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাদা পালকের ভারতীয় চিলের ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ একবারেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে।
বিশেষ করে শস্যক্ষেতে বিষটোপ এবং গবাদিপশু চিকিৎসায় প্রদাহরোধক ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ব্যবহারের ফলে ভারতীয় সাদা চিলের অস্তিত্ব এখন প্রায় শূন্যের কোঠায়। কারণ ডাইক্লোফেনাক জাতীয় ওষুধ সেবনকারী গবাদিপশুর বর্জ্য বিষাক্ত হয়ে যায়। যা ভক্ষণ করে মারা যায় চিল ও শকুন। এ ছাড়া, শিকার ও বিক্রির কারণে বিলুপ্ত হচ্ছে আমাদের দেশে যেসব প্রজাতি।
বাঘ
বাংলাদেশের গর্বের প্রতীক রয়েল বেঙ্গল টাইগার, যা এখন বিলুপ্তির পথে। প্রতিবছরই আশঙ্কাজনক হারে কমছে বাঘের সংখ্যা। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে মাত্র ১১৫ টি বাঘ রয়েছে। ২০০৪ সালে এ সংখ্যা ছিল ৪৪০ টি। ১১ বছরেই বাঘের সংখ্যা কমেছে ৩৩৪ টি।
বনবিভাগের তথ্যানুযায়ী, ১৯৮০ সাল থেকে এ পর্যন্ত চোরা শিকারি ও বনদস্যুদের হামলা, গ্রামবাসীর পিটুনি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনের প্রায় ৭০ টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। তাদের রেকর্ড অনুযায়ী, ১৯৮২ সালে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৫৩ টি। ২০০৪ সালে এ সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৪৪০ টি।
আর সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বাঘের সংখ্যা ১০৬। অন্যদিকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা পরিচালিত এক জরিপের তথ্যে বলা হয়, বাংলাদেশে বাঘের সংখ্যা ৩৬৯ টি।
বনবিভগের তথ্যানুসারে, ক্যামেরা ক্যাপচার পদ্ধতির জরিপে বাংলাদেশ এবং ইনডিয়ার সুন্দরবনে ৮৩ থেকে ১৩০টি বাঘের সন্ধান পাওয়া গেছে। অর্থাৎ, গড় হিসেবে বাংলাদেশ অংশে প্রকৃত বাঘের সংখ্যা সর্বোচ্চ ১১৫।
হাতি
সারা বিশ্বে এশিয়ান এলিফ্যান্টের সংখ্যা ৪০ থেকে ৫০ হাজার দাবি করা হলেও বাংলাদেশে এ সংখ্যা দুইশ’র বেশি হবে না। হুমকির মুখে থাকা প্রকৃতির এ বন্ধুকে গভীর সঙ্কটাপন্ন প্রাণী হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছে। হাতির বিচরণভূমিতে মানুষের হানা ও প্রকৃতিতে খাদ্য সঙ্কটসহ নানা কারণে হাতির সংখ্যা কমছে বলে মনে করেন হাতি বিশেষজ্ঞরা।
আইইউসিএন বলছে, তিন প্রজম্মে হাতির সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ায় এশিয়ান হাতির দেখা মেলে। তবে কমছে সে সংখ্যা। বন উজাড় এবং দাঁতের জন্য শিকারিদের উৎপাত হাতি কমার অন্যতম কারণ।
হাতি শিকার এবং চুরি করে পাচারও বাড়ছে দিন দিন। এভাবেই কমছে হাতির সংখ্যা। আর্ন্তজাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের ২০১২ সালের প্রকাশিত এক তথ্যমতে, ২০০৩ থেকে ২০১২ সালে ১০ বছরে মানুষের হাতে ৪৭ টি হাতির মৃত্যু ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১০ বছরে বাংলাদেশে ৪০০ থেকে কমে হাতির সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকে। অর্থাৎ বর্তমানে বাংলাদেশে হাতির সংখ্যা দুইশ’র কম।
শকুন
দুইশ প্রজাতির পাখি হুমকির মুখে। এর মধ্যে রয়েছে শকুন। দেশে ক্রমাগত কমছে শকুনের সংখ্যা। গত শতকের সত্তরের দশক থেকে এ পর্যন্ত শকুন হ্রাসের পরিমাণ ৯৮ শতাংশ। স্বাধীনতা পূর্বে ৫০ হাজার শকুন থাকলেও বর্তমানে সব মিলিয়ে এ সংখ্যা তিনশ’র নিচে।
গবাদিপশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কিটোপ্রোফেন জাতীয় ওষুধ ব্যবহার শকুন কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। এছাড়া আবাসস্থল, খাদ্য সঙ্কট তো রয়েছেই। শকুনের জন্য ঘোষিত নিরাপদ এলাকাতেও শকুন নিরাপদে নেই। ধারণা করা হয়, সচেতনতা সৃষ্টি সম্ভব না হলেও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এ প্রাাণীটি বাংলাদেশ থেকে চিরতরে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অথচ কয়েক দশক পূর্বে প্রতিটি গ্রামে শকুনের দেখা মিলত। বর্তমানে পাখিটির দেখা পাওয়া দুষ্কর। দেশে তিন প্রজাতির শকুন স্থায়ীভাবে বসবাস করলেও এর এক প্রজাতি ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্তির পথে দেশী প্রজাতির বাংলা শকুনও।
বন বিভাগের তথ্যমতে, সারা পৃথিবীতে ২৩ প্রজাতির শকুন রয়েছে। দেশে এক সময় ৬ প্রজাতির শকুনের দেখা মিললেও এর ৩ প্রজাতি স্থায়ীভাবে বসবাস করত। বাংলা ও সরুঠোঁট প্রজাতির শকুন প্রকৃতির সঙ্গে যুদ্ধ করে টিকে থাকলেও বিলুপ্ত হয়ে গেছে স্থায়ীভাবে বসবাস করা রাজশকুন।
২০০৩ সালে মার্কিন গবেষক ড. লিন্ডসে ওক প্রমাণ করেন, ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম (ডাইক্লোফেন) ওষুধ ব্যবহার করা গরু ও ছাগলের মৃতদেহ ভক্ষণ করলে কিডনি নষ্ট হয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শকুন মারা যায়। ফলে ভারত ও পাকিস্তান ২০০৬ সালে, নেপাল ২০০৯ সালে ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম (ডাইক্লোফেন) বন্ধ করে পরিবর্তে মেলোক্সিক্যামসহ বিকল্প ওষুধ ব্যবহার শুরু করে।
বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালে গবাদিপশুর চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক সোডিয়াম উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে। তবে কোথাও কোথাও এখনও এটি ব্যবহার হয়।
কাছিম
দেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে নানা প্রজাতির কাছিম। কাইট্টা কাছিম ও বিশ্ববিখ্যাত বোস্তামী কাছিমও রয়েছে অস্তিত্ব সঙ্কটে। চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামীর (রহ) মাজার ছাড়া বিশ্বের অন্য কোন অঞ্চলে বোস্তামী কাছিমের দেখা পাওয়া দুষ্কর। মাজারের পুকুরটিতেও কমে গেছে কাছিমের সংখ্যা। বর্তমানে মাজার সংলগ্ন পুকুরে ১৫০ থেকে ৩৫০ টি কাছিমের আবাস রয়েছে।
মাজার সংলগ্ন পুকুরটির মতো দেশের পুরনো পুকুরে কাছিমের দেখা মিললেও বর্তমানে এ প্রাণীটির দেখা পাওয়া দুষ্কর। অন্যান্য এলাকার মতো ময়মনসিংহ অঞ্চলের কাইট্টা কাছিমের সংখ্যাও হ্রাস পেয়েছে। পরিসংখ্যান মতে, দেশে একসময় ২৮ প্রজাতির কাছিম পাওয়া যেত। ৫ টি সামুদ্রিক প্রজাতি, ২ টি পাহাড়ী এবং খাল-বিল ও হাওড়সহ অভ্যন্তরীণ জলাশয়ে ২১ প্রজাতির কাইট্টা কাছিম বাস করত।
আইইউসিএনের ২০০০ সালের জরিপে দেশের ২০ প্রজাতির কাইট্টা কাছিমকে বিপন্ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ১৯৯৮ সালে অন্যতম বিপন্নপ্রায় প্রাণীর তালিকায় বোস্তামী কাছিমের নাম উঠে আসে।
ব্যাঙ
গত ৩৫ বছরে ব্যাঙের ২০০ প্রজাতি হারিয়ে গেছে। যা হওয়ার কথা ছিল আগামী ৫০০ বছরে। গুরুত্ব উপলব্ধির পূর্বেই দেশে কমে গেছে ব্যাঙ। সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব না হলেও পরিবেশবাদীদের আশঙ্কা। কীটনাশক প্রয়োগের কারণেই কমেছে ব্যাঙ। এছাড়া খাদ্য ও চালানের নিমিত্তে ব্যাঙ নিধন অব্যাহত রয়েছে। ধারণা করা হয়, টিকে থাকা ব্যাঙের প্রজাতি রক্ষা করা সম্ভব না হলে পরিবেশের ইকো-সিস্টেমের ওপর প্রথম আঘাত আসবে।
বিলুপ্ত যেসব প্রাণী
বন বিভাগের তথ্যমতে, গত কয়েক দশকে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য ১৪ টি প্রাণীর প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ডোরাকাটা হায়েনা, গ্রে উলফ (ধূসর নেকড়ে), বারাশিঙা বা কাদা হরিণ, ব্ল্যাকবাক (হরিণ জাতীয়), নীলগাই, গাওর, বানটেং (এক ধরনের বুনো মোষ), বন্য জলমহিষ, সুমাত্রান গণ্ডার, জাভান গণ্ডার, ভারতীয় গণ্ডার, দেশী ময়ূর, পিঙ্ক হেডেড ডাক (পাখি) ও মিঠা পানির কুমির।
প্রাণীর প্রতি মানুষের ভালোবাস তৈরি না হওয়া প্রাণী হারিয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ। পাখি, সাপ বা ব্যাঙ দেখামাত্রই তার দিকে ঢিল ছোড়ার প্রবণতা রয়েছে। রয়েছে শিকারের মনোবৃত্তি। প্রাণীর খাবার বা আবাসস্থল কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ মানুষ। মানুষের প্রয়োজনে প্রাণী একদিকে খাবারে পরিণত হচ্ছে, অন্যদিকে হচ্ছে ভোগ-বিলাসের সামগ্রীতে।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জীব বৈচিত্র্যের ওপর মানুষই প্রভাব ফেলছে। দেশে কৃষিজমি বৃদ্ধি করতে বন উজাড় করা হচ্ছে। মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় পরিবেশে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া আবাসস্থল ও খাদ্য সঙ্কটের কারণে কমছে নানা প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা।
সুন্দরবন থেকে এখনও কী পরিমাণ হরিণ শিকার করা হয়, তা কল্পনাও করা যাবে না। উচ্চাভিলাষী অনেক মানুষ ঢাকায় বসে এখনও হরিণের মাংস খায়। হরিণ না থাকলে সুন্দরবনে বাঘ থাকবে না। বাঘের খাবার কমে যাওয়াও বাঘ কমার অন্যতম কারণ।
পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর দাবি – প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সরকারগুলো যেন শিগগিরই তহবিল সংগ্রহের কাজ শেষ করে। তা না হলে জীববৈচিত্র্যের আশংকাজনক অবনতিতে পৃথিবী মনুষ্যবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে ক্রমান্বয়ে। তাই আসুন প্রকৃতির অলংকার পাখি ও বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে সকলে সচেতন হই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অটুট রাখি।

জন্মভূমি ডেস্ক November 20, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article বাস্তুতন্ত্রে জীববৈচিত্র্য টিকলে মানুষ বাঁচবে
Next Article অবকাঠামো সংকটে থেমে আছে সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরের উন্নয়ন

দিনপঞ্জি

December 2025
S M T W T F S
 123456
78910111213
14151617181920
21222324252627
28293031  
« Nov    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
সাতক্ষীরা

পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি

By জন্মভূমি ডেস্ক 8 hours ago
খুলনাতাজা খবর

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

By জন্মভূমি ডেস্ক 8 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

শ্যামনগরে মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি

By জন্মভূমি ডেস্ক 9 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

সাতক্ষীরা

পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি

By জন্মভূমি ডেস্ক 8 hours ago
খুলনাতাজা খবর

খুলনা-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী কৃষ্ণ নন্দী

By জন্মভূমি ডেস্ক 8 hours ago
তাজা খবরসাতক্ষীরা

শ্যামনগরে মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে খবর প্রকাশ করায় সাংবাদিককে হত্যার হুমকি

By জন্মভূমি ডেস্ক 9 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?