
বিশ্বে শান্তি ও গণতন্ত্র এখন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। বাড়ছে উগ্রবাদ। এমন জটিল পরিস্থিতিতে সুশীল সমাজ এবং এনজিওর (বেসরকারি সেবা সংস্থা) ভূমিকা দিন-দিন সংকুচিত হয়ে আসছে। রাজনৈতিক কারণে তারাও দ্বিধাবিভক্ত। মানুষের মৌলিক অধিকার এখন বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন। এ অবস্থার উত্তরণে সম্মিলিত প্রয়াস জরুরি। বিশেষ করে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে এগিয়ে আসতে হবে। গত শনিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে আয়োজিত বে অব বেঙ্গল কনভারসেশনের প্রথম দিনে বক্তাদের কণ্ঠে এসব কথাই উঠে এসেছে। তারা বলেন, আমরা গণতন্ত্র, শান্তির স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে বিশ্বব্যাপী এ ব্যবস্থা চ্যালেঞ্জে রয়েছে। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বৈষম্য বাড়ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে ঝুঁকি। এর ওপর রয়েছে উন্নত দেশগুলোর নানা যুদ্ধের প্রভাব। ফলে কিছু কিছু অঞ্চলে ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। বিভিন্ন সময়ে তৈরি হচ্ছে উত্তেজনা, ছড়িয়ে পড়ছে মৌলবাদ। যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া দ্বন্দ্ব, আবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য চলছে। বিভিন্নভাবে অন্য দেশগুলোকে তাদের আয়ত্তে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। পৃথিবীতে এখন জোটবদ্ধতা কমে যাওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের মতো প্রাকৃতিক সমস্যা এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। নিজেদের স্বার্থেই এ থেকে বের হয়ে আসা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে বাংলাদেশে দ্বিতীয়বার মতো আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ৭৫টি দেশের ২ শতাধিক আলোচক অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সম্মেলনে অংশ নেওয়া ছয় শতাধিক প্রতিনিধি। এবারের আলোচ্য বিষয় ইন্দো-প্যাসিফিক ইস্যু, ভূরাজনীতি ও ভূ-অর্থনীতি। সম্মেলনের লক্ষ্য, বে অব বেঙ্গল অঞ্চলের দ্রুত বিকাশমান পরিস্থিতিকে বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে জানা-বোঝা।
আমরাও মনে করি, বিশ্বশান্তি এখন মানবজাতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘাতময় পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ চ্যালেঞ্জ উত্তরণে বিশ্বের পরাশক্তিসহ সব পক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। যুদ্ধ চাই না, আমরা একটি নিরাপদ ও শান্তিপূর্ণ পৃথিবীতে বসবাস করতে চাই।