
শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বারান্দা থেকে শুরু করে বাথরুম আর লিফটের সামনে শীতে কাঁপছে রোগী। সোমবার বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় খুমেক হাসপাতালের দোতলা থেকে পাঁচতলা পর্যন্ত বারান্দা, কেবিন, ওয়ার্ডে রোগীর ভিড়। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ভাগ্যজোরে যারা ওয়ার্ড আর কেবিনে সিট পেয়েছেন তারা শীতের এই তীব্রতা থেকে কিছুটা দূরে আছেন। তবে বারান্দায় যারা শুয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই।
খোলা বারান্দায় শৈত্যপ্রবাহের কনকনে শীত উপেক্ষা করে তাদেরকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। সাধারণ ওয়ার্ড, পেইং বেড, কেবিনে সিট না পাওয়ায় রোগীরা যেখানে সেখানে মাদুর বিছিয়ে পড়ে আছেন। তাদের সাথে থেকে শীতে কাঁপছে আপনজন। শিশু ওয়ার্ডে সিট না থাকায় ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় অসুস্থ্য শিশু নিয়ে পড়ে আছেন অভিভাবক। এমন চিত্র প্রতিদিনের। কথা হয় বটিয়াঘাটা উপজেলার আমীরপুর ইউনিয়নের তলাপাড়া গ্রামের সুলতানা বেবীর সাথে। তিনি তার এক বছরের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসেছেন। দু’দিন আগে শিশুটি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। ওয়ার্ডে সিট না পাওয়ায় তারা বাধ্যহয়ে বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে শুয়ে আছেন। বেবী বলেন, রাতযত গভীর হয় শীতের তীব্রতাও বাড়তে থাকে। কস্ট হলেও শিশুর চিকিৎসার জন্য মেনে নিতে হচ্ছে। দোতলার খোলা বারান্দায় শুয়ে আছেন রূপসা উপজেলার জাবুসা গ্রামের আমজাদ হোসেন (৬০)। শীতে শ্বাসকস্ট বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসার জন্য তিনদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, রাতে বিছানার চারিদিকে কাপড় দিয়ে ঘিরে দেয়া লাগে। তানাহলে ঠান্ডায় শ্বাসকস্ট আরও বেড়ে যায়। নিতান্তই চিকিৎসার জন্য শীতের মধ্যে খোলা বারান্দায় পড়ে আছি।
খুমেক হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় হাজারের উর্ধে রোগী ভর্তি থাকেন। শীতের প্রকোপে এ সংখ্যা আরও বেড়েছে। ২৫০ বেডের হাসপাতাল ৫০০ বেডে উন্নিত হলেও রোগীর সংখ্যা বেশী হওয়ায় জায়গা সংকট রয়েই গেছে। তাছাড়া বেডের তুলনায় রোগী প্রতিনিয়ত বাড়ছে।
বিষয়টি নিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অধ্যক্ষ ডা: তরুণ কান্তি মন্ডল দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, হাসপাতালে ৫০০ বেড রয়েছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা ভালো থাকায় বেডের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় তিনগুন রোগী ভর্তি হয়। ১৫০০ থেকে ১৭০০ রোগী সর্বদা ভর্তি থাকেন। তাই সিট সংকট থাকাটা স্বাভাবিক। সকল শ্রেণি পেষার মানুষ এখানে ভর্তির সুযোগ পায়। তাই তারা কষ্ট করে হলেও চিকিৎসার জন্য অনেক কিছুই সহ্য করেন।