ওজন স্লিপ জালিয়াতি
আবুল বাশার, বেনাপোল : বেনাপোল স্থলবন্দরের ওয়েব্রিজের ওজন স্লিপ নিয়ে জালিয়াতির ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষের গঠিত ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত টিমের সুপারিশে বেনাপোল বন্দরের ৫ জন কর্মকর্তাসহ ৬ জনকে বদলী করা হয়েছে। একই সাথে কাস্টম কর্তৃপক্ষ এ ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জন সিএন্ডএফ এজেন্টকে শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় তিনজনের লাইসেন্স সাময়িক স্থগিত করেছেন কাস্টম কর্তৃপক্ষ।
বদলীকৃত বেনাপোল বন্দরের কর্মকর্তারা হলেন উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মনিরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক (প্রশাসন) রেজাউল করিম, সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) রাশেদুল নজিব নাজির, সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) সাইফুর রহমান ভুঁইয়া, ট্রাফিক পরিদর্শক রোকনুজ্জামান আবেদীন ও অফিস সহায়ক রবিউল ইসলাম। গত ১৭ আগস্ট বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-সচিব আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে তাদেরকে বিভিন্ন জেলায় বদলী করা হয়েছে। এরমধ্যে দু’জন উপ-পরিচালককে প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জালিয়াতির ঘটনায় লাইসেন্স স্থগিতকৃত সিএন্ডএফ এজেন্টরা হলেন, রিয়াদ এজেন্সি, সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্সি ও রহমত ইন্টারন্যাশনাল। তবে সোনালী সিএন্ডএফ এজেন্সি ও রহমত ইন্টারন্যাশনালের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে মাছ আমদানিতে অনিয়ম ও শুল্ক ফাকির ঘটনায়। এসব সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করা হয়েছে বলে কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে। তবে বাকিদের ব্যাপারে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
বেনাপোল কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে, ভারত থেকে আমদানি হয়ে আসা পণ্য চালানগুলি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের পূর্বে বন্দর স্কেলে ট্রাকসহ পণ্যের গ্রোস ওজন নিশ্চিত করা হয়। ওজন স্লিপে ওজন কমানোর কারণে সরকার বিপুল টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়। এ ঘটনায় পণ্যের সঠিক ওজন নিশ্চিত করতে গত ৭ আগস্ট ১১টি পণ্য চালানের বন্দর স্কেলের ওজন নিশ্চিত হওয়ার জন্য বেনাপোল কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহম্মেদ স্বাক্ষরিক একটি পত্র বেনাপোল বন্দর পরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়।
বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার মোঃ শাফায়েত হোসেন জানান, গত কয়েক মাসে বেনাপোলের কয়েকটি সিএন্ডএফ এজেন্ট বন্দরের দেয়া ওজন স্লিপের নকল ওজন স্লিপ সংযুক্ত করে পণ্যের ওজন কম দেখিয়ে খালাশ করেছে। এই ধরণের ৭-৮টি প্রতিষ্ঠান আমরা সনাক্ত করেছি। যাদের কাছ থেকে ফাঁকি দেয়া রাজস্ব আদায় করা হয়েছে। এতে করে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাস্টমসের সাথে যোগসাজস করে সিএন্ডএফ এজেন্টরা শুল্ক ফাঁকি দিয়ে থাকে। যেকারণে কাস্টম কখনও তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়না।
এ ব্যাপারে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) আব্দুল জলিল জানান, আমাদের ৫ জন কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহায়ককে প্রধান কার্যালয় বদলী করেছে। এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বদলীকৃত কর্মকর্তারা ওজন স্কেলের জালিয়াতির সাথে জড়িত কিনা জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। পণ্য পরীক্ষনের সময় তো কাষ্টমস অফিসাররা ডিজিটাল স্কেলে ওজন করে ওজন নিশ্চিত করে থাকেন বলে তিনি জানান।
কিন্তু বেনাপোল বন্দরে কাস্টম কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকলেও তারা স্বাক্ষর করেন না।