এইচএম আখতারুজ্জামান, বরিশাল : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সেলিম তালুকদারের (২৮) অন্ত:সত্বা স্ত্রী সুমি আক্তার আজ দিশেহারা। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে শস্কিত। জীবনের চাকা কোথায় গিয়ে নোঙর করবে। অভাব অনাটনের সংসারে হালধরতেই কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকা ছুটে গিয়েছিল। সেখানে গিয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে ১৩ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৩১ জুলাই রাতে মারাযান। ২ আগষ্ট নলছিটিতে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। গত ৪ আগষ্ট ছিল সেলিম তালুকদারের প্রথম বিবাহ বার্ষিকী। শখ ছিল অন্ত:সত্বা স্ত্রীকে নিয়ে পথম বিবাহ বার্ষিক ধুমধাম করে স্ত্রীর সঙ্গে পালন করবেন।
সরজমিনে জানযায়, ঝালকাঠির নলছিটি পৌর এলাকার মল্লিকপুর গ্রামে নিহত সেলিম তালুকদারের বাড়ি। তার পিতা মো. সুলতান হোসেন তালুকদার। নিহত সেলিম তালুকদার বিজিএমই ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে আড়াই বছর আগে স্নাতক ডিগ্রী সম্পন্ন করে নারায়ণগঞ্জে একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে সহকারি মার্চেন্ডাইজার পদে চাকরি শুরু করেন। তারা তিন বোন ও এক ভাই। সেলিম ছিল মেঝ। এক বছর আগে পারিবারিক ভাবে বিবাহ করেন সুমি আক্তারকে।
নিহত সেলিম তালুকদারের স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, ১৮ জুলাই সকালে বাড্ডা লিংক রোডের কুমিল্লাপাড়ার বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন তার স্বামী। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংর্ঘষের মধ্যে আটকে পড়েন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে গুলিবিদ্ধ হন। তিনি আরও জানান, তার স্বামী শহীদ হয়েছেন। তার স্মৃতি হিসেবে অনাগত সন্তান থাকবে কিন্ত সন্তানের ভবিষ্যৎ কি হবে জানি না। আমি যতদিন বাচঁবো, শহীদ সেলিমের স্ত্রী হিসেবে বাচঁবো।
নিহত সেলিম তালুকদারের মা সেলিনা বেগম জানান, আমার সহায়-সম্বল সবকিছু দিয়ে ছেলেকে ভার্সিটিতে লেখাপড়া করাইয়াছি। স্বপ্নছিল ছেলে চাকরি করে সংসারের হাল ধরবে। এখন আমরা বৃদ্ধ হয়েছি। কিন্তু এখন সংসার কে চালাবে। আর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে চিকিৎসা করতে গিয়ে ১৮ লাখ টাকা ঋণ হয়েছি। সেই টাকা কিভাবে পরিশোধ করব। এখন আর কেউ কোঝঁ-খবর নেয় না।
এবিষয় ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক আশরাফুর রহমান জানান, জুলাই-আগষ্ট গণঅভ্যূন্থানে যারা আত্মত্যাগ করেছেন, তাদের কাছে দেশের মানুষ চিরঋণী। সব নিহত ও আহতদের পরিবারকে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত সেলিম এর স্ত্রী সুমি আক্তার আজ দিশেহারা
Leave a comment