ক্রীড়া প্রতিবেদক : ক্যামেরায় বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখানো হচ্ছিল দৃশ্যটা। মুলতানে সারি বেঁধে প্রবেশ করছেন দর্শক-সমর্থকরা। এমন মুহূর্তের জন্যই তো বহুদিন ধরে অপেক্ষায় ছিলেন তারা। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে সফরকারী ইংল্যান্ডকে ১৫২ রানে হারিয়েছে পাকিস্তান।
ঘরের মাটিতে পাকিস্তান সর্বশেষ টেস্ট জিততে পেরেছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। এরপর টানা ১১ টেস্টে জয় দেখেননি শান মাসুদ–বাবর আজমরা। সাড়ে তিন বছরেরও বেশি সময়ের অপেক্ষার পর জয়খরা ঘুচল তাদের।
সাম্প্রতিক সময়ে ব্যর্থতাই যেন নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছিল পাকিস্তানের জন্য। বাংলাদেশের বিপক্ষে ঘরের মাটিতে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর ইংল্যান্ডের কাছেও প্রথম টেস্টে ইতিহাসগড়া ব্যবধানে হার। সব মিলিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার দশা।
মুলতানের সেই একই পিচে ভাগ্য বদলে দিলেন দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে সুযোগ পাওয়া তিন ক্রিকেটার। তারকা ক্রিকেটার বাবর আজমের জায়গায় সুযোগ পেয়ে দারুণভাবে রাঙালেন অভিষিক্ত কামরান গুলাম। এ ছাড়া স্পিন ঘূর্ণিতে ব্যাটিং স্বর্গে রাজত্ব করলেন সাজিদ খান ও নোমান আলি। এই দুই স্পিনার মিলেই ভাগাভাগি করে নিলেন ইংলিশদের ২০ উইকেট। সাজিদ খানের দখলে গেছে ৯টি, বাকি ১১ উইকেট শিকার করেন নোমান।
মুলতানে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৬৬ রানে থেমেছিল পাকিস্তান। জবাবে ঝোড়ো শুরু পেলেও সাজিদ খানের ঘূর্ণিতে ২৯১ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ৭৫ রানে এগিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে আর ২২১ রান যোগ করতেই স্বাগতিকরা অলআউট হয়ে যায়। ততক্ষণে যদিও তাদের লিডটা বেড়ে দাঁড়ায় ২৯৭। রেকর্ড রান তাড়া করতে নেমেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে ইংল্যান্ডের ইনিংস।
ইংলিশদের বিপদের শুরুটা হয়েছিল আগের দিন বিকেলেই। ২৯৭ রানের পাহাড়সম রান তাড়া করতে নেমে পরপর ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে সফরকারীরা। দলীয় ১ রানে বেন ডাকেটের পর ১১ রানে আউট হয়ে যান আরেক ওপেনার জ্যাক ক্রাউলিও।
দ্বিতীয় টেস্ট জিততে ম্যাচের বাকি দু’দিনে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ২৬১ রান আর পাকিস্তানের দরকার ৮ উইকেট। আজ দিনের দ্বিতীয় ওভারেই ওলি পোপকে ফিরিয়ে জয়ের পথে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেওয়ার কাজটি শুরু করেন সাজিদ খান। এরপর বাকি কাজটা একা সারলেন নোমান। ১৪৪ রানের বেশি স্কোর গড়তে পারেনি বেন স্টোকসরা।
প্রথম ইনিংসে একাই সাত উইকেট নিয়েছিলেন সাজিদ খান, দ্বিতীয় ইনিংসে ৮ উইকেট তুলে নিলেন নোমান আলি। সব মিলিয়ে দুই স্পিনারই ভাগাভাগি করে ২০ উইকেট শিকার করেছেন। মুলতানে স্মরণীয় জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা ফিরিয়েছে শান মাসুদের