জন্মভূমি ডেস্ক : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্ব বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪ জন। আজ মঙ্গলবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বিশুতারা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের মৃত ওমর আলীর ছেলে আজাদ মিয়া (৫৫) ও তার প্রতিপক্ষ ভাতিজা ইনসান মিয়ার পক্ষের আনামত মিয়া (৬০)। নিহত আমানত একই গ্রামের মিছির আলী ছেলে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিশুতারা গ্রামের সৎ ভাইয়ের ছেলে ইনসান মিয়ার সঙ্গে তার চাচা আজাদ মিয়ার জমি ও ঘর নির্মাণ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। মঙ্গলবার ভোরে সাড়ে ৬টার দিকে ইনসান মিয়া ও তার অনুসারীরা আজাদ মিয়াকে তার সারের দোকানে কুপিয়ে হত্যা করে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনার পর উত্তেজিত আজাদ মিয়ার পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ইনসান মিয়ার পক্ষের আমানত মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে। সরাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক আমানত মিয়াকেও মৃত ঘোষণা করেন।
দুটি হত্যাকাণ্ডের পর গ্রামে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
নিহত আজাদ মিয়ার স্ত্রী শারমিন আক্তার বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সৎ মায়ের ছেলে ইনসান মিয়া আমার স্বামীকে হত্যা করেছে। আমি তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
অপরদিকে নিহত আমানত মিয়ার কন্যা মরিয়ম বেগম বলেন, ‘বাবু ও বশিরসহ কয়েকজন মিলে আমার বাবাকে বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
গ্রামের সরদার আবেদুল ইসলাম কবুল বলেন, ‘আজাদ মিয়া ও ইনসান মিয়ার মধ্যে আগে থেকেই জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। এমন ঘটনা গ্রামের বদনাম করছে। এই দুটি হত্যাকাণ্ড অত্যন্ত জঘন্য। আমি ন্যায়বিচার দাবি করছি।’
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল হাসান বলেন, ‘দুটি হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি জানান, ঘটনার পর পুরো এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।