জন্মভূমি ডেস্ক : ভারতের হায়দ্রাবাদ ‘ইয়াসোদা’ হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় ফারহানা আক্তার ওরফে ডিনার মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তা স্বামী ও সন্তানেরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দায়ীদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আজ শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় সংবাদ সম্মেলনে নিহতের স্বামী আল আমিন আল মামুন ও তার দুই মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আল আমিন আল মামুন বলেন, আমার স্ত্রীর বাম কাঁধের যন্ত্রণায় ভুগছিলেন। দেশের বড় বড় অর্থোপেডিক্স চিকিৎসকদের দেখানোর পরও তারা ব্যথা নিরাময় করতে পারেনি। পরে ভারতের ‘ইয়াসোদা’ হাসপাতালের একজন নিউরোলজি ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিই। পরে গত ২০ জুলাই তাকে নিয়ে হায়দ্রাবাদ গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করি। তিনি অন্য একজন অর্থোপেডিক্স বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার্ড করেন। ওই চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে অপারেশনের পরামর্শ দেন। পরীক্ষায় মোট ৭০ হাজার রুপি খরচ হয়।
তাতে ধরা পরে তার বাম কাঁধের জয়েন্টের হাড় বেড়ে গেছে। এজন্যই হাত উঁচু করতে পারছেন না। অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক ডা. সুনিল তার স্ত্রীর সার্জারি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু তার স্ত্রী এন্টিবায়োটিকে এলার্জি থাকার কথা বলা হয়। কিন্তু তার সেই কথার কর্ণপাত না করেই অপারেশন করার সিদ্ধান্ত নেন।
এর পর গত ২৮ জুলাই দুপুর ১২টার দিকে অপরারেশনের জন্য ভর্তি করানো হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রি অপারেশনের জন্য রুমে নেন। এর পর তাকে জানানো হয়, এনেস্থিসিয়া পুশ করার পর তা রিয়েক্ট করেছে। তবে তিন চার ঘণ্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে। তার তিন থেকে চার ঘণ্টা পর আইসিইউতে গিয়ে দেখতে পাই আমার স্ত্রীর শরীর বরফের মতো ঠান্ডা হয়ে আছে এবং অচেতন। এসময় আমাকে জানানো আমার স্ত্রীর ব্রেইন ৯৫ শতাংশ ডেড হয়ে আছে। এসময় তারা আমাকে বলেন, আপনার স্ত্রী সুস্থ হয়ে উঠবেন।
এর পর গত ২৯, ৩০ ও ৩১ জুলাই পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষায় রাখা হয় যে তিনি সুস্থ হবেন। কিন্তু তিনি সুস্থ না হলে গত ৩১ তারিখে লিগ্যাল অ্যাকশনে যাওয়ার পরিকল্পনা করি। গত ১ আগস্ট ভোর ৫টার দিকে আমাকে আইসিইউয়ের ভেতরে ডাকা হয়। সেখানে গিয়ে দেখি ৩ জন সিস্টার আমার স্ত্রীর হার্টের অনবরত পান্স করছেন। এর পর ৫টা ৫৫ মিনিটের সময় তিনি মারা যান। এর পর গত ২ আগস্ট তার মরদেহ নিয়ে দেশে আসি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেন, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার ডিনাকে ভুল চিকিৎসায় হত্যা করা হয়েছে।
তিনি এজন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারের মাধ্যমে সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।