* সভাপতি লাপাত্তা
* ম্যানেজারকে থানায় সোপর্দ
এম সাইফুল ইসলাম
খুলনায় রিয়েল নামে একটি সঞ্চয় ও ঋণদান কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের বিরুদ্ধে ত্রিশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার ইশতিয়াক রাব্বি শোভনকে অবরুদ্ধ করে রাখে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। পরবর্তীতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে খুলনা মহানগরীর ৪নং ঘাট এলাকায় বস্তিবাসীদের কাছ থেকে ডিপিএস, এফডিয়ার, দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি টাকা নিত। একটা নির্দিষ্ট মেয়াদ পর লভ্যাংশসহ টাকা ফেরত দিত। তবে করোনা মহামারির পর থেকে তারা কোনো গ্রাহকের টাকাই ফেরত দেয়নি।
মহানগরীর গোবরচাকা এলাকার মোল্লাবাড়ী মোড়ে ওই প্রতিষ্ঠানটির একটি অফিস রয়েছে। তাদের রেজিষ্ট্রেশন নং- ১৯/কে। খুলনা নগরীতে এ সমিতির দশ সহ¯্রাধিক সদস্য রয়েছে। যারা এক হাজার থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রয়েছে।
পাপিয়া আক্তার নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, আমি বেশ আগে থেকে এই সমিতির সঙ্গে জড়িত। বছর শেষে তারা মূল টাকা সুদসহ ফেরত দিত।
তিনি আরও বলেন, আমাদের বস্তির শত-শত মানুষ তাদের বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছে। এখানে ভিক্ষুক, দিনমজুররা বেশি টাকা রাখতেন। সবাই এখন পথে বসেছেন।
নাসরিন সুলতানা জানান, বস্তি ও আশপাশের কয়েকটি এলাকাজুড়ে ওই প্রতিষ্ঠানের সহ¯্রাধিক গ্রাহক আছে। আর সারা খুলনা শহরজুড়ে তাদের কয়েক হাজার গ্রাহক। তিনি আরও জানান, আামাদের পরিবারের চারজন তাদের কাছে টাকা জমা রাখতো।
৭নং ঘাট জেটি হ্যাডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাহবুব হাসান জানান, সমিতির সবাই এতদিন পলাতক ছিলেন। কিন্তু গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের নিউ মার্কেট এলাকার একটি রেস্টুরেন্টে বসে সমিতির ম্যানেজার ইশতিয়াক রাব্বি শোভন খাবার খাচ্ছেন- এই খবর পেয়ে যায় গ্রাহকরা। পরে শতাধিক গ্রাহক তাকে সেখান থেকে ধরে আনে এবং ৭নং ঘাট জেটি হ্যাডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে আটকে রাখে।
এদিকে মানেজারকে আটক করা হয়েছে জানতে পেরে ওই শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসের সামনে এসে ভিড় করতে শুরু করেছেন শত-শত ভুক্তভোগী।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টা থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি কেসিসির প্যানেল মেয়র আমিনুল ইসলাম মুন্নাকে শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণের আনার চেষ্টা করতেও দেখা গেছে।
অভিযুক্ত ম্যানেজার ইশতিয়াক রাব্বি শোভন বলেন, সমিতির মালিক ছিলেন শিবলু নামে এক ব্যক্তি। তিনি বিদেশ পালিয়ে গেছেন। আমি তাদের ম্যানেজার ছিলাম। আমি কি করে টাকা ফেরত দেব।
মামলার বাদী মো: খালিদ হোসেন খান বলেন, আমার ২৫ লক্ষ টাকা ছিল সমিতিতে। গত শুক্রবার ওর সন্ধান পাওয়ার পরেই ছুটে আসি।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সমন্বয়ে আমরা স্টাম্পে সই নিয়ে তাকে পুলিশে সোপর্দ করি।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও কেসিসির প্যানেল মেয়র আমিনুল ইসলাম মুন্না বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের নিউ মার্কেট এলাকা থেকে সমিতির ম্যানেজার ইশতিয়াক রাব্বি শোভনকে অবরুদ্ধ করে। পরে শত-শত গ্রাহক তাকে সেখান থেকে ধরে আনে এবং ৭নং ঘাট জেটি হ্যাডলিং শ্রমিক ইউনিয়নের অফিসে আটকে রাখে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিক্ষুদ্ধ শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করি। পরে পুলিশ এসে তাকে গ্রেপ্তার করে। তার নামে মামলাও দায়ের হয়েছে।
ভিক্ষুক ও দিনমজুরদের ত্রিশ কোটি টাকা নিয়ে গায়েব রিয়েল
Leave a comment