সিরাজুল ইসলাম, শ্যামনগর : প্রতিকূল সময়ে ভারতীয় হাই কমিশন কার্যালয় থেকে ট্যুরিস্ট (ভ্রমণ) ভিসা বন্ধ করে দেওয়ায় ভ্রমণযাত্রায় পড়েছে বিরূপ প্রভাব। ভারত ভ্রমণে উদ্যোগী পাসপোর্টযাত্রীরা এখন চরম বিপাকে। ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় অনেকেই রয়েছে সংকটে। নতুন করে ভারত ভ্রমণে ভিসা কার্যক্রম চালু না হলে শূন্যের কোটায় পড়তে যাচ্ছে স্থল সীমান্ত ভোমরার বৈধ রুট। পাসপোর্ট-যাত্রী চলাচলে ধব্স নেমেছে ব্যাপক হারে। ভ্রমণকর আদায়ে নেমেছে বিপর্যয়। বিদেশ ভ্রমণে পাসপোর্ট যাত্রীদের নিকট থেকে আদায় হওয়ার ট্রাভেল ট্যাক্স (ভ্রমণকর) সংযুক্ত হয় জাতীয় অর্থনীতিতে।
আমদানি বাণিজ্য থেকে অর্জিত রাজস্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যতা রয়েছে ভ্রমনকর। যৌথ রাজস্ব আহরণ জাতীয় অর্থনীতিতে গুণগত অবস্থান তৈরি করে। কিন্তু জুলাই- আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের পর ভিসা জটিলতায় ভোমরা বন্দর, রুট দিয়ে পাসপোর্ট-যাত্রী চলাচল প্রায় বন্ধের পথে। অলস সময় কাটাচ্ছেন কাস্টমস যাত্রী ব্যাগেজ অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। দেশি বিদেশি ভ্রমণউদ্যোগী পাসপোর্টযাত্রীদের গমনাগমন কমে যাচ্ছে। যাত্রীবহন নির্ভরশীল যানবহনগুলো পড়েছে চরম দুর্ভোগে। যানবাহন চালকদের সংসারে দেখা দিচ্ছে আর্থিক অভাব অনটন আর নীরব দুর্ভিক্ষের ছায়া। বন্দরের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হোটেল, রেস্তোরাঁ ও ফুডসের দোকানগুলোতো নেই কোন বিক্রি। খরিদদার অভাবে বেচাকেনা বন্ধ হয়ে সৃষ্টি হয়েছে দুর্বিসহ অবস্থা। ভোমরা কাস্টমস যাত্রী ব্যাগেজ চেকপোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ জানান, গত ডিসেম্বর মাসে ভোমরা বন্দর রুট দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশের ৭ হাজার ৬৩৯জন পাসপোর্টযাত্রী। একই সময়ে বাংলাদেশ থেকে ৬হাজার ৪৬৪ জন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করেছে। জানুয়ারি মাসে ভারত থেকে ৫হাজার ৪২৯ জন যাত্রী বাংলাদেশে পরিবেশ করেছে এবং বাংলাদেশ থেকে ৪হাজার ৬৫২ জন যাত্রী ভারতে প্রবেশ করে। তবে বাংলাদেশ-ভারত ভ্রমণকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের মধ্যে শিশু ও প্রতিবন্ধী যাত্রী রয়েছে। তবে ভ্রমণকরের আওতামুক্ত রয়েছে এসব শিশু ও প্রতিবন্ধীরা।
যাত্রী চেকপোস্ট কর্তৃপক্ষ জানান, বিগত দিনগুলোতে ভোমরা সীমান্ত রুট দিয়ে পাসপোর্ট যাত্রীদের চলাচল ছিল অধিক। প্রতিদিন ৫শ’ থেকে ১হাজার যাত্রীরা এ রুট ব্যবহার করে ভ্রমণ করতো। বর্তমানে যাত্রীর সংখ্যা কমে ১শ’ থেকে দেড়শো তে নেমে এসেছে। পাসপোর্ট যাত্রীদের মাথাপিছু ১হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। ভ্রমনকর ধার্য হিসাবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ভ্রমণকারী ৬হাজার ৪৬৪ জন পাসপোর্ট যাত্রীদের নিকট থেকে ৬৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ভ্রমণকর আদায় হয়েছে।
একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ভ্রমণকারী ৭হাজার ৬শ ৩৯ জন যাত্রীদের নিকট থেকে ৭৬ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ভ্রমণকর আদায় করা সম্ভব হয়েছে। চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ভ্রমণকারী ৪হাজার ৬৫২জন পাসপোর্ট-যাত্রীদের নিকট থেকে ৪৬ লাখ ৫ হাজারটাকা ভ্রমণ কর আদায় হয়েছে। একই সময় ভারত থেকে বাংলাদেশে ভ্রমণকারী ৫ হাজার ৪২৯ জন যাত্রীদের নিকট থেকে ৫৪ লাখ ২৯হাজার টাকা আদায় হয়েছে। সুতরাং চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে ভ্রমণকর আদায় হয়েছে ২ কোটি ৪১ লাখ ৮৪হাজার টাকা।
ভোমরা কাস্টমসে ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে ২ কোটি ৪১ লাখ টাকা ভ্রমণকর আদায়
Leave a comment