
শাকিল আহমেদ, মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) : সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় মাছ ধরতে গিয়ে ৫ জেলে নিখোঁজের খবর পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় উপজেলার তুষখালী ইউনিয়নের ছোট মাছুয়া গ্রামের জেলে পল্লীতে নিখোঁজ জেলেদের বাড়িতে চলছে বুক ফাঁটা আহাজারি। নিখোঁজ জেলেরা হলো উপজেলার ছোট মাছুয়া গ্রামের হাফেজ আকনের ছেলে বাহাদুর আকন, একই গ্রামের উজ্জত আলীর ছেলে এমাদুল আকন, আকবর শাহ’র ছেলে আল আমিন শাহ, মোসলেম হাওলাদার এর ছেলে সালাম হাওলাদার ও পার্শ্ববর্তী ভান্ডারিয়া উপজেলার উত্তর জুনিয়া গ্রামের মোখলেস হাওলাদার এর পুত্র এবং ওই ট্রলারের বাবুর্চি আব্দুর রহমান। নিখোঁজ জেলেদের স্বজনরা জানা, গত ২৬ জন বুধবার বিকেলে উপজেলার ছোট মাছুয়া গ্রামের নজরুল মাঝির ট্রলারে ১২জন জেলে পটুয়াখালীর মহিপুরে মাছ ধরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়ে যায়। পরে তারা মহিপুর গিয়ে বরফ সহ যাবতীয় মালামাল ক্রয় করে মাছ ধরতে সাগরে যান। রোববার রাত বারোটার দিকে মাছ ধরা শেষে তীরে ফিরে আসার সময় সাগরের ঢেউয়ে ট্রলারটি উল্টে যায়। এ সময় অন্য একটি ট্রলারের সহযোগিতায় জেলে নজরুল মাঝি, জুয়েল শাহ, মোশারফ শাহ, রুহুল আমিন, রাসেল ঘরামি, লোকমান মোল্লা ও ইলিয়াস খলিফা তীরে ফিরে আসতে সক্ষম হলেও অপর পাঁচ জেলে নিখোঁজ হন। স্থানীয় জেলেরা জানান, সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু অধিক লাভের আশায় একটি অসাধু চক্রের প্রলোভনে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে জেলেরা সাগরে গিয়ে এ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। এদিকে পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন নিখোঁজ জেলেদের বৃদ্ধ পিতা-মাতা সহ স্ত্রী ও সন্তানরা। স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম ছলিম জানান, মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত নিখোঁজ জেলেদের কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। তিনি আরো জানান, নিখোঁজ জেলেদের উদ্ধারে মহিপুরের আড়ৎ মালিকরা বেশ কয়েকটি ট্রলার নিয়ে সাগরে তল্লাশি চালাচ্ছেন। এদিকে খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে মঠবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট বায়েজিদ আহমেদ খান নিখোঁজ জেলেদের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের খোঁজখবর নেন এবং সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন।