By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: মতবাদের দায়
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > সাহিত্য > মতবাদের দায়
সাহিত্য

মতবাদের দায়

Last updated: 2021/01/16 at 9:03 AM
করেস্পন্ডেন্ট 4 years ago
Share
SHARE

চেয়ারম্যান মাওকে ভারতীয় উপমহাদেশে অনেক ক্ষেত্রেই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তার জের রেশ এখনো কাটেনি। আমার মত বামপন্থাকে আঁকড়ে খুব কম মানুষই আজকাল বাঁচছে এদেশে। অন্ততঃ আমার এমনটাই মনে হয়। তবু চেয়ারম্যান মাও সেতুঙ-এর নামে আমার জীবনটাও অনেকের মত তছনছ করা হয়েছিল একদিন। আমার ইচ্ছা ছিল ভাল পড়াশুনা শিখে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হবো। আমার মত শিক্ষার্থীদের সামনে চেয়ারম্যান মাওকে কয়জন তুলে ধরতে পারতেন। আমার মত জার্নালে বা সিম্পোজিয়ামে কয়জন ভালবেসে তাঁর চেতনা, বিশ্বাস, দর্শনকে সামনে আনতে পারতেন। কিছুই হল না তার। আবার তা সম্ভব হল না চেয়ারম্যানকে ভ্রান্তভাবে ব্যবহারের জন্য। এটাই আশ্চর্য।
আমি তখন অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। প্রথম সামাজিক গবেষণা পড়ছি। কিছু খটোমটো তো বটেই বিষয়টা। ছুটিতে বাড়ি আসার আগেই ভালভাবে বুঝে নিতে হবে বিষয়টা। বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়ে গেছে। দুই একের মধ্যেই রওনা হয়ে যাবো খুলনায়। এমন অবস্থায় যোগাযোগ করে গেলাম কোর্স শিক্ষক ড. গীতি আরা নাসরিনের বাসায়। কুয়েত মৈত্রী হলের প্রভোস্ট হিসাবে নিউ মার্কেটের কাছে কোয়ার্টার তখন তাঁর। তিনি সামাজিক গবেষণা পদ্ধতির বিষয়টির খটকাগুলো মিটিয়ে ভালই শিখিয়ে পড়িয়ে দিলেন। অংশগ্রহণমূলক গবেষণা পদ্ধতিটা সবচেয়ে মনে ধরল। অংশগ্রহণকারীরাই তাদের সুবিধা অসুবিধা বলবেন। সমাধান খুঁজে নেবেন। যাপিত জীবনের চেনা জানা জগতের সম্বন্ধে তো তারাই সবচেয়ে ভাল মূল্যায়ন করতে পারেন। আরও বুঝলাম গবেষণা কোন আবিষ্কার নয়, এটা জরিপের ফল। গবেষক নিজেও ফলাফলকে প্রভাবিত করতে পারেন। আবার উত্তরপত্রে দেয়া উত্তরও বস্তুনিষ্ঠ নাও হতে পারে। এগুলো অবশ্য গীতি ম্যাডাম বলেন নি। আমার মত করে বুঝে নিলাম। ঐদিনই মাও সেতুঙের মেটালিক ইমালশনের দাঁড়ানো ভঙ্গির দ্যুতি ছড়ানো ঘরে রাখা ভাস্কর্যটি প্রথম দেখা আমার। একফুট-সোয়া ফুট উচ্চতার, টি টেবিলে রাখা। কপার ইমালশন, লালাভ ধরণের। চীনা কা-, আসলে তো তামা না। প্লাষ্টার অব প্যারিসে গড়ে মেটালিক ইমালশন করা। তবুও দারুণ। গোল করে কোণা কাটা গলাবন্ধ জামার লুকটা আনা। আর চেয়ারম্যান মাও যেমন দেখতে তেমনই গড়ন, মুখাবয়ব। মনে ধরে থাকার মত, থেকেছেও তাই। সে ২০০৩ সালের কথা।
এরপর ২০০৪ এ আমার বাবাকে হত্যা করা হল। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার হত্যাকা-। আমার পড়াশুনা দায়সারা হয়ে গেল। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে ব্যস্ত হয়ে যেতে হল। ছাপাখানার মেশিন সস্তায় কিনে কোনরকমে জীবন চালিয়ে নিতে মাওয়ের চীন দেশেও যাওয়া হল। মূল ফোকাস মেশিন দেখা, পরতা হলে কেনাও। এর ফাঁকে পার্ল মার্কেট নামে ছা-পোষা মানুষ আর টুরিস্টদের মার্কেটেও যাওয়া হল। সেখানে এক ছাদের নীচে ছোট ছোট পসরা সাজানো দোকানী, টেবিল বা চৌকির পিছনে বসে বা দাঁড়ানো। একটু অর্গানাইজড ফুটপাতের দোকান আর-কি। ঘুরতে ঘুরতে একদিকে মাও সেতুঙের সেই ঘরে রাখার জন্য বেশ বড়-সরো পূর্ণাঙ্গ অবয়বের ভাস্কর্য পেয়ে গেলাম। কিনে আনতে তো মন চাইলোই। মনে পড়ে গেল সাম্যবাদের সবচে’ বড় শিক্ষা : তোমার সামর্থ্য মত কাজ করবে, প্রয়োজন মত প্রতিদানে পাবে। মানে হল, খাটতে বা উৎপাদন করতে হবে যার যেমন সাধ্য, তার সবটুকু নিবেদন করে। এরপর তা জড়ো হবে একস্থানে। সেখান থেকে দেয়া হবে যার যেমন প্রয়োজন জীবনে চলার জন্য। কানে বাজতে লাগলো নকশালপন্থীদের স্লোগান : চীনের চেয়ারম্যান, আমাদের চেয়ারম্যান। যদিও নকশালপন্থীদের প্রতি আমার সমর্থন-সহানুভূতি প্রগলভ নয়, শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর শাসনকে তারা অকেজো মত করে দেয়ায়। শ্রীমতি গান্ধীর আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অবদান তো অবিস্মৃত ব্যাপার। আর বাঙালির চিরদিনের অভিভাবক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই অমোঘ কৃতজ্ঞতা মেশানো উক্তি : “আমি পশ্চিম পাকিস্তানের অন্ধকার সেলের মধ্যে বন্দী ছিলাম দু’দিন আগেও। শ্রীমতি গান্ধী আমার জন্য দুনিয়ার এমন জায়গা নাই চেষ্টা করেন নাই – আমাকে রক্ষার জন্য।”

তা যে রাজনৈতিক ইতিহাসে মার্কসবাদ প্রভাবিত যেকোন গান, কবিতা, স্লোগানকে ছাপিয়ে যায়। যাহোক হাতের নাগালে পেয়েও মাও সেতুঙের অমন সুন্দর ভাস্কর্যটি নেয়া হল না। দাম পর্যন্ত করা হল না। মন সায় দিল না। কাঁচা শোক বাধা হয়ে দাঁড়াল। কারণ ওরাও যে তার প্রতিকৃতি দায় স্বীকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছিল। আমি দেখেছিলাম। নিজ চোখে। না দেখে ফেললে অন্য ব্যাপার হত।
এরপর দিন গড়িয়েছে। আরও বন্ধু-বান্ধব চীন দেশে গেছে, যাবার আগে সৌজন্য করে বলেছে কী আনবো। আমি লজ্জা না করে বলেছি, ঘরে সাজিয়ে রাখার মত মাও সেতুঙের একটি ভাস্কর্য। মনে মনে বলেছি যা আমি বিশেষ কারণে আনতে পারি নি। ফেলে এসেছি। বন্ধুস্থানীয় একজন সেনা কর্মকর্তা এবং একজন আমলা পরপর দুই বছরে চীনে গেছে প্রশিক্ষণে। আমার মনের মধ্যে থেকে যাওয়া ছবির অবিকল মাও-এর ভাস্কর্য না নিয়েই ফিরে এসেছে। যা এনেছে অতি ক্ষীণকায়, বাচ্চাদের খেলনা সৈন্য সেটের বড় সাইজের অনুরূপ। চার থেকে ছয় ইঞ্চির বেশী না। যদিও একটি থেকে আরেকটি ইঞ্চি দুয়েক বড়। কিন্তু কোনভাবে আমার মন মতটি না, রঙও ভিন্ন, গোল্ডেন ইমালশন করা। মনে অপূর্ণতা থেকে যায়। এরপর আরেক পরিচিত সেনা কর্মকর্তা, আমাদের খুলনার ছেলে, ডাক নাম উপল গেল অস্ত্র কিনতে সরকারিভাবে। সেও যথারীতি বলল, আসিফ ভাই কী আনব? আমিও যথারীতি বলি মাও সেতুঙের মূর্তি। উপলের সুযোগ ছিল, যেহেতু সে অস্ত্র কিনতে গেছে, সে ভেন্ডরকে লাগিয়ে দিল, ভেন্ডর খুঁজে-টুজে আসল পিতলের আবক্ষ মূর্তি এনেছিল। দামও বেশী খানিকটা। তবু মন ভরল না। সাজিয়ে রাখলাম বসার ঘরে, যাতে নজর কাড়ে অভ্যাগতদের।
একবার মাত্র বিরূপ অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ভারতীয় এক বন্ধু সাজানো আর্টিফ্যাক্টটি দেখে মুখে কিছু না বললেও খুশী যে হয়নি, বরং তাঁর ইস্যু নিয়ে দ্বিধান্বিত ছিলেন, তা ঠিকই বুঝলাম। যা হোক মাও সেতুঙের আবক্ষ মূর্তিটি থেকে গেল গরিমা নিয়ে।
এরপর আমার সুযোগ হল দ্বিতীয়বার চীনদেশে যাওয়ার। ২০১৫ সালে। আমার পিতার হত্যাকা- থেকে প্রায় একযুগ কেটে গেছে এরই মধ্যে। শোক-সংক্ষুব্ধতা এতদিনে প্রথম কয়েক বছরের মত যুক্তি অগ্রাহ্য নেই। আবার গেলাম পার্ল মার্কেটে। যেয়ে অনেক খুঁজতে হল মাও-এর কোন মূর্তি পেতে। মনে হল মাওবাদকে তুলে ধরতে খোদ চীন দেশেরই আগ্রহ কমে আসছে। অবশেষে সেই ভাস্কর্য পেলাম, তবে এবার তা চীনা ঐতিহ্যিক পোরসেলিনের, যা আমরা বলি চীনা মাটিতে গড়া। শ্বেত শুভ্রতায় প্রভাময় চেয়ারম্যান মাও সে তুঙ। স্টাডি টেবিল বা বইয়ের তাকে দাঁড় করিয়ে রাখতে মোক্ষম। বাংলাদেশী আটশ’ কী এক হাজার টাকায় কিছুটা দরদাম করে কিনে নিলাম। দু’টি ছিল দোকানীর সংগ্রহে, একটি আমার হয়ে গেল। তেমন বেশি দোকানে না তোলার কারণ মনে হল, চীনাদের চাহিদা একদমই নেই। আমার অপরাপর তিনবন্ধুও কয়েক বছর আগে যারা এসেছিল, ফিরে গিয়ে বলেছিল অনেক খুঁজতে হয়েছে তাদের মাও সে তুঙের স্মারক, চীন দেশেই। প্রকৃতি যেমন অপব্যবহারে বিরাণ হয়, অনিয়ন্ত্রিত আহরণে বিরূপ হয়, অযতœ-উদাসীনতায় বিনষ্ট হয়, মনে হল চেতনা বা মতবাদও তাই হয়। আমরা মাওকে কত না ভুলভাবে ব্যবহার করেছি, যত্রতত্র মাওবাদকে প্রয়োগ করেছি শুধু যার যার লাভালাভ মেটাতে। রাজনীতিকীকরণ হয়েছে উপমহাদেশে যথেচ্ছভাবে, আজও হচ্ছে। ঠিকভাবে জেনে না জেনে। আমি ড. গীতিয়ারা নাসরিনের বসার ঘরে যেমন মাও সেতুঙকে দেখে মনের অর্গলে আটকে রেখেছি, অস্বীকার করারতো উপায় নেই মাওকে তো দেখেছি পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টি এমএল জনযুদ্ধের হত্যাকা-গুলির দ্বায়স্বীকার করে প্রেরিত প্রেস-রিলিজের লেটার হেডেও।
এই শতকের প্রথম দশকে যখন গীতি ম্যাডামের বসার ঘরে মাওকে দেখেছিলাম তখন আবেগ ও ভালবাসায় সঙ্গতই খোঁজ নিয়েছিলাম আরও। জানতে পেরেছিলাম তাঁর স্পাউজ, যিনি প্রশিকার গবেষণা কর্মকর্তা, সংগঠনটির একজন স্তম্ভকর্মী, মাওবাদের প্রতি অনুরক্ত জেনে চীন থেকে কেউ মাও-এর ভাস্কর্যটি এনে উপহার দিয়েছেন। আমরা খবরের কাগজ থেকে ঐ বছরই জেনেছিলাম তখনকার বিরোধীদল আওয়ামী লীগের ৩০ এপ্রিল ২০০৪ এর ট্রামকার্ড ও বিএনপি-জামাত জোট সরকারের পতন দামামা বাজানোর সহযোগী প্রশিকা, সেই বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কয়েকজন মূল কর্তাব্যক্তির সাথে গ্রেফতার হয়েছেন ম্যাডামের স্বামীও। দৈনিক জনকণ্ঠে যেদিন তার গ্রেফতার মুহূর্তের ছবি ছাপা হয়, সেই ঋজু ভঙ্গিমার ছবি দেখে সেমিনার কক্ষে উচ্ছ্বসিত এক ছাত্রী বলেও ফেলে ম্যাডামের স্বামী খুবই জোয়ান তো। পরের মুহূর্তেই ছাত্রীটি নিজের কথার জন্য নিজেই লজ্জা পেয়ে যায়। আমরা ক্লাসের মার্কসবাদী চেতনায় অনুপ্রাণিতরা সে কথারই অর্থ করি যে, ছাত্রীটি বলেছে, তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন বিদ্রোহ করা ন্যায়সঙ্গত। জেল-জুলুমেরও একদিন অবসান হয়। তিনিও জামিন পান। ২০০১ সালে নির্বাচনোত্তর সহিংসতা ও মানবাধিকার ভুলুণ্ঠনের অগণন ঘটনাগুলি নিয়ে তথ্যচিত্র নির্মাণ ও উপাত্ত সংগ্রহের অপরাধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে চার্জ গঠিত হয়ে মামলা চলমান থাকে। এমনি একজন মানবিকবোধ সম্পন্ন, কর্তব্যে অবিচল মানুষের প্রিয় চেয়ারম্যান মাও সে তুঙ, আমার মত অনেক তরুণের আবেগ-উচ্ছ্বাস ঘনীভূত হয়ে আছে যেখানে। সাম্যবাদী চিন্তা ও সমাজ ব্যবস্থার প্রতিভূ মাও। সবাই খেয়ে-পরে-স্বাস্থ্য সুরক্ষা-আবাসন ও শিক্ষা-সুবিধার নাগাল পাবে যে ব্যবস্থার আওতাধীনে, এরচে ভাল আর কী হতে পারে।

মাও সেতুঙ বের করেছিলেন লাল পকেট বই। এটা ভাইনাল প্লাস্টিক জ্যাকেটের জলরোধী মোড়কে বাঁধাই করা হত। ছোট বইটি আদর্শের প্রশ্নে একটি সার্বক্ষণিক গাইড লাইন। ১৯৬০ সালে পৃথিবীর ৩০০ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে ১০০ কোটি কপি ছাপা হয়েছিল। পৃথিবীর ৫০ ভাষায় বইটি অনুদিত হয়। আর আজ চীনে টুরিস্ট এলাকায় স্যুভেনির হিসাবেই কেবল এই বইটি পাওয়া যায়। সবখানে না।
মাও সেতুঙের দর্শন সহজভাবে সবার কাছে না পৌঁছানোয় চূড়ান্ত অপব্যবহার হয়েছে। তৈরী হয়েছে মানবিক সঙ্কট।

আমার বাবাকে হত্যা করা হল। দিনে দুপুরে, নিজের অফিস কাম বাসগৃহের সামনে। দায়স্বীকার করে দেয়া প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে বলা হল তিনি বুর্জোয়া। কেউ একজন আমাকে বলেছিল, … সে কথা বলতে চাই না, কী বাজে কথা, বলা হয়েছে তিনি “বাজুয়া”। বুঝতে পারি বুর্জোয়া শব্দটির সাথে পরিচয় নেই তার, তাই সঠিকভাবে মনে রাখতে পারেননি। মংলার কাছাকাছি একটি স্থানের নাম বাজুয়া। স্মৃতিপটে পরিচিত স্থানটির নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে, বুর্জোয়া আড়ালে চলে গিয়ে। একজনের বুর্জোয়া হতে গেলে যে সম্পদ প্রয়োজন, তা আমাদের ছিল কি-না জানি না। অন্তত: আমিতো বড় ছেলে হিসাবে ষোল-সতের বছরে সন্ধান পাইনি। হত্যাকা-টিকে তাদের মত বৈধতা দিতে ব্যবহার করা হল মাও-এর ছবি, মতবাদকে। একটি হত্যাকা- পরিবারের বড় ছেলে হিসাবে আমাকে অন্য এক বাস্তবতায় এনে দাঁড় করালো, যার জন্য আমি আদৌ প্রস্তুত ছিলাম না। পরিবারে ভাই-বোনের সিরিয়ালটাও একটা ব্যাপার। বাবার মৃত্যুতে বড় সন্তান যে, তার যেমন করে পরিচিত বাস্তবতা ও জীবন নিয়ে পরিকল্পনা পাল্টে জীবিকা ফোকাস করে জীবন সংগ্রাম শুরু করতে হয়, বাকীদের তেমনটি হয় না। অন্যদের শোক, সন্তাপ, সংক্ষুব্ধতা থাকে ঠিকই কিন্তু যাপিত জীবন পুরোপুরি বদলাতে হয় না। আমার পড়াশুনা ছাড়তে হল, ছাড়তে হল মাও সেতুঙকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে সহজে হৃদয়গ্রাহীভাবে তুলে ধরার অভিলাষ। জার্নালে মাও প্রভাবিত হয়ে লেখা প্রকাশ। এভাবেই অপপ্রয়োগে মাওবাদ, বামপন্থী চেতনা কি অবলুপ্ত হয়ে যাবে, সময় পেলেই নিজ মনে ভাবতাম। পিতৃ হন্তারকরা মাও সেতুঙের ছবি ব্যবহার করায় হাতের কাছে পেয়েও মাও এর তাম্রবর্ণের মোহময় মূর্তিটি সাথে আনতে পারিনি একদিন। সে কথা মনে হয়ে এ আশঙ্কা আরো বাড়ে। একদিন কত তরুণ-যুবক বুক পকেটে লাল বই রাখার স্বপ্নে বিভোর হয়ে জীবনের মোহমায়া ত্যাগ করে চরম অনিশ্চিত ঝুঁকিবহুল জীবন বেছে নিয়েছে, সেই অমূল্য আবেগ, অকৃত্রিম ভালবাসায় মোড়ানো চেতনা কী সমূলে মুছে যেতে পারে কোনদিন?
করোনাকালে গৃহ থাকো প্রোগ্রামের সুবিধায় সিনেমা টিনেমা দেখার সুযোগ পেয়ে, প্রাযুক্তিক কল্যাণে ইদানিংকালের হালচালে নির্মিত নতুন অনেক সিনেমা দেখে ফেলি। এই সিরিজ সিনেমা দেখায় হঠাৎই চোখ আটকে গেল এক অভিনেত্রীর বাহুতে অঙ্কিত লাল তারকায়। সিমেনায় মার্কসবাদী মাও-এর অনুসারীদের দেখায় আজও, কারণ বাস্তবকে ঠিকঠিক তুলে না আনলে দর্শক নন্দিত সিনেমাই হয় না। যারা মার্কসবাদ বা মাও সেতুঙ-এর ধার ধারেন না খুব একটা, তাদের বোঝার সুবিধা করে দিতে বলি হেনিক্যান বিয়ারের লোগো’র লাল স্টারটা। যা সিনেমাটিক সৌন্দর্যে বাস্তবের চেয়ে অনেক ঔজ্জ্বল্য নিয়ে বিরাজমান ঠিকই, কিন্তু এতটুকুতো বুঝলাম বাস্তবেও মাওবাদ টিকে আছে। যেকোন মানবিক মানুষেরই মাঝে, অবিনশ্বরভাবে। তারই প্রতিফলন সেল্যুলয়েডে বা সিনেমায়। সিনেমাতো যাপিত জীবনেরই রূপোলি প্রতিবিম্ব।
#

করেস্পন্ডেন্ট January 16, 2021
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article মানিক সাহা হত্যার নেপথ্যের কুশলীবরা অধরাই রয়ে গেল!
Next Article বাংলাদেশ অচিরেই উন্নত দেশের কাতারে উঠবে:প্রধানমন্ত্রী
Leave a comment

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

দিনপঞ্জি

June 2025
S M T W T F S
1234567
891011121314
15161718192021
22232425262728
2930  
« May    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
তাজা খবরসাতক্ষীরা

সুন্দরবন ভেঙে নদীতে যাওয়ার দৃশ্য

By করেস্পন্ডেন্ট 1 hour ago
বরিশাল

মঠবাড়িয়ায় দলিল লেখক সমিতির বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত

By করেস্পন্ডেন্ট 12 hours ago
খুলনা

দাকোপে শিশুকে যৌন নিপিড়নের অভিযোগ

By করেস্পন্ডেন্ট 14 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

তাজা খবরসাহিত্য

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮২তম প্রয়াণ দিবস আজ

By স্টাফ রিপোর্টার 2 years ago
জেলার খবরতাজা খবরসাহিত্য

নীরবতা ~~ সুরাইয়া সাথী~~

By করেস্পন্ডেন্ট 3 years ago
জাতীয়তাজা খবরসাহিত্য

সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহ আর নেই

By করেস্পন্ডেন্ট 4 years ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?