
মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে স্থাণীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাকোশপোল বাজার থেকে জামতলা ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত এক হাজার ৬৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যরে পাকা সড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বালুর পরিবর্তে ব্যবহার করা হচ্ছে বালু মিশ্রিতকাদামাটি। তার ওপর পিকেট ইটের খোয়ার পরিবর্তে আমা ইটের নিম্নমানের খোয়া ব্যবহার করে তড়িঘড়ি নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ঠিকাদার এবং তদারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে বার-বার বলা সত্ত্বেও তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। প্রতিবাদে এলাকাবাসী শুক্রবার সকালে বিক্ষোভ প্রদর্শনের পর কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)এর মাধ্যমে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা বরাদ্দে উপজেলার সদর ইউনিয়নের বাকোশপোল বাজার থেকে জামতলা ঈদগাহ মোড় পর্যন্ত একহাজার ৬৩৩ মিটার দৈর্ঘ্যের সড়কটি পাকাকরনের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। কাজটি পান মেসার্স বিশ্বজিত কনস্ট্রাকশন নামের ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। সে মোতাবেক ওয়ার্ক-অর্ডারের পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান নির্মাণ কাজ শুরু করে গতমাস থেকে। ইতিমধ্যে সড়কের মাটি কেটে বালু এবং খোয়া দিয়ে বক্স নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ভালবালু ও পিকেট ইটের খোয়ার পরিবর্তে কাদামাটি, ইটভাটার ঘ্যাস এবং তিন নম্বরের আমা ইটের(নিন্মমানের) খোয়া দিয়ে বক্স নির্মাণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভ বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে এলাকাবাসী কয়েকবার প্রতিবাদও করেছেন। কিন্তু তাদের কথায় কর্ণপাত না করে ওই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সরেজমিন গিয়ে দেখাযায়, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করার সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী বাঁধা দিয়ে শ্রমিকদের সাথে কথা কাটাকাটিতে লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় কথা হয় দায়িত্বে থাকা শ্রমিক সরদার মুজিবুর রহমানের সাথে। তিনি বলেন, ঠিকাদার খারাপ উপকরণ সরবরাহ করলে আমাদের কি করার আছে? তিনি বলেন, বিক্ষুব্ধ লোকজনের বাঁধায় কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। কথা হয় স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আলিম, সাধারণ সম্পাদক দীন ইসলাম, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আবদুল হাইয়ের সাথে। তারা সড়কের পাশে নিম্নমানের খোয়াসহ অন্যান্য উপকরণের স্তুপ দেখিয়ে বলেন, এসব নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করায় ইতিমধ্যে সড়কের বিভিন্ন স্থান দেবে(নিচু) গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ বালুর পরিবর্তে কাদামাটি, পিকেট খোয়ার পরিবর্তে তিন নম্বর আমা ইটের খোয়া ও ভাটার ঘ্যাস দিয়ে সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারি প্রকৌশলী গাইসুল আযম বলেন, সরেজমিন গিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মালিক বিশ^জিৎ দাস বলেন, সড়ক নির্মাণের শত-শত গাড়ি ইট ও খোয়া লাগে। তাতে ঊনিশ-বিশ হতেই পারে। তার মানে এই নয় যে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মাণ কোন অবস্থাতেই বরদাস্ত করা হবেনা। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন।

