মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নিত হওয়ায় স্বাস্থ্য সেবায় সহায়তার জন্য আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে ১১ জন সেবাকর্মী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে অভিযোগ উঠেছে চার বছরের চুক্তিভিত্তিক এ নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ অর্ধকোটি টাকা ঘুষ বাণিজ্য করার। প্রতি প্রার্থীর কাছ থেকে চার থেকে পাঁচলাখ টাকা আদায় করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে এ ঘুষ বাণিজ্যে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের নিয়োগ সিন্ডিকেট গড়ে তোলা হয়। চাকুরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধিকাংশদেও কাছ থেকে কাছ বিভিন্নহারে অগ্রিম বাবদ টাকা নেওয়া হয়। কিন্তু যিনি বেশি টাকা দিয়েছেন শেষপর্যন্ত তাকেই চাকরি দেওয়া হয়েছে। ফলে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাযায়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রনালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন গত ২৮ মার্চ আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মোট ১১ জন সেবাকর্মী নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেন। এরমধ্যে ওয়ার্ডবয় তিনজন, ল্যাব এটেনডেন্ট একজন, ওটি বয় একজন, ইমারজেন্সি এটেনডেন্ট একজন, আয়া একজন, বাবুর্চি একজন, ষ্ট্রেচার বেয়ারার একজন, নিরাপত্ত প্রহরী একজন, ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী একজন। চার বছর মেয়াদী এ চাকুরির জন্য প্রতি কর্মীর বেতন নির্ধারন রয়েছে মাসে ১৬ হাজার এক’শ টাকা। এ সেবাকর্মী নিয়োগের দায়িত্ব পান ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স অর্থ প্রাইভেট লিমিটেড। ৩০ জুনের মধ্যে নিয়োগ দিতে প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন আহ্বান করা হয়। সে মোতাবেক মনিরামপুরে আবেদন করেন প্রায় শতাধীক প্রার্থী।
অনুসন্ধানে জানাযায়, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজল বিশ্বাস এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাসের গ্রামের বাড়ি মনিরামপুরে। তাদের দুজনের মধ্যে ছোটবেলা থেকেই রয়েছে বেশ সখ্যতা। ফলে চাকুরির প্রত্যাশায় এলাকার প্রার্থীরা ধর্না দেন তাদের কাছে। এক পর্যায়ে দুজনের সাথে যুক্ত হয় তাদের অপর বন্ধু পৌরশহরের আইটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফিফো ডিজিটালের পরিচালক অসিত মল্লিক। আর এ তিন বন্ধুর সমন্বয়ে গড়ে তোলা হয় নিয়োগ সিন্ডিকেট। উপজেলা স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য তুলসি বসু জানান,সব সময় হাতের কাছে পাওয়ায় অধিকাংশ প্রার্থীরাই চাকুরির জন্য যোগাযোগ করেন অসিত মল্লিকের সাথে। অভিযোগ রয়েছে চাকুরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অধিকাংশ প্রার্থীর কাছ থেকে দুই থেকে তিনলাখ করে অগ্রিম বাবদ নেওয়া হয়।
তবে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তন্ময় বিশ্বাস তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এ নিয়োগে তার কোন হাত নেই। যা করেছে তা ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানই করেছে। অন্যদিকে প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আদায়কারীর দায়িত্বে থাকা অসিত মল্লিক নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, কোন প্রার্থী প্রমান করতে পারবেনা আমি চাকুরি দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক কাজল বিশ্বাস জানান, সেবাকর্মী নিয়োগে কোনপ্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতি করা হয়নি। নিয়ম মেনেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত