অভিজিৎ পাল
করোনার কারণে তিলোত্তমা নগরী গড়ার কাজ কিছুটা মন্থর হলেও মহামারী জয় করে তিলোত্তমা নগরী গড়ার প্রয়াস জানিয়েছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার অভিজিৎ পালের সাথে একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এই কথা বলেন। নাগরিক সমাজও বলছে তিলোত্তমা খুলনা গড়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজগুলোকে আরো মানসম্মতভাবে ও দ্রুত সম্পন্ন করতে হলে কেসিসি’র কার্যক্রমের গতি আরো বাড়াতে হবে।
২০১৮ সালে ২৫ সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় বার খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক। এর আগে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত তিনি খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রথম দফায় মেয়র হিসেবে তার কার্যক্রম প্রশংসা কুড়িয়েছিলো নগরবাসীর। ২০১৮ সালের সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রথম দফার অসামপ্ত কাজ পুনরায় শেষ করার প্রতিশ্রুতি ও তিলোত্তমা নগরী গড়তে ৩১ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেন তালুকদার আব্দুল খালেক। ইশতেহারে ছিল ‘সিটি গভর্ণমেন্ট’ ব্যবস্থা প্রবর্তনের উদ্যোগ, পরিকল্পনা গ্রহণে ‘পরামর্শক কমিটি’ গঠন, পানি ও পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাতের মানোন্নয়ন, হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে সেবার মান বৃদ্ধি, কবরস্থান, ও শ্মশান ঘাটের উন্নয়ন, মাদকমুক্ত নগর গড়ে তোলা, নতুন আয়ের সৃষ্টি, সিটি সেন্টার গড়ে তোলা, বিনামূল্যে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করা, গুরুত্ব বিবেচনা করে সড়ক উন্নয়ন, পার্ক-উদ্যান নির্মাণ ও বনায়ন সৃষ্টি, সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের উন্নয়ন ও বিকাশ ঘটানো, মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নামে রাস্তার নামকরণ, প্রতিটি ওয়ার্ডে ক্রীড়া উন্নয়নে উদ্যোগ গ্রহণ, সোলার পার্ক আধুনিকায়ন, বধ্যভূমিগুলোর স্মৃতি সংরক্ষণ, কেসিসিকে দুর্নীতি মুক্ত করা, যাতায়াত ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, নারী উন্নয়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহযোগিতা প্রদান, সুইমিং পুল স্থাপন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধীদের সহায়তা প্রদান, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা গ্রহণ, নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনে আরও উদ্যোগ গ্রহণ, ৩টি নতুন থানা পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা, আধুনিক কসাই খানা নির্মাণ।
৩১ দফা ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়িত হলো তিন বছরে?
৩১ দফা ইশতেহার কতটুকু বাস্তবায়িত হলো তিন বছরে? এমন প্রশ্নের উত্তরে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম বছরে বেশ কিছু কাজ করে এগিয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু করোনা মহামারী আর বৈরী আবহাওয়ার কারণে আমরা পিছিয়ে পড়েছি। এখন করোনা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে, আমরা চেষ্টা করবো আবহাওয়া অনুকূলে এলে আমাদের চলমান উন্নয়ন কাজগুলোকে আরো দ্রুত সময়ের মধ্যে মানসম্মতভাবে শেষ করার।
এ বিষয়ে নাগরিক নেতা কুদরত ই খুদা বলেন, মেয়র সঠিক বলেছেন করোনার কারণে সব কাজই ব্যাহত হয়েছে। কিন্তু মানুষের ভোগান্তি অনেক হচ্ছে।
জলাবদ্ধতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কি অবস্থা?
জলাবদ্ধতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন কি চিন্তা করছে এমন প্রশ্নে তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আমাদের ৬০৮ কোটি টাকার ৮২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কেসিসির জলাবদ্ধতা দূরীকরণে ড্রেনেজে ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প’ এবং ৬০৮ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘খুলনা সিিট করপোরশেনরে গুরুর্পূণ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তা মেরামত ও উন্নয়ন’ প্রকল্প চলমান। যদিও করোনা ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। ফলে মানুষের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে উন্নয়ন কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা ব্যাক্ত করেন। এছাড়াও তিনি বলেন, ময়ূর নদ, রূপসা ও ভৈরব নদী খননের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে এখন সব থেকে বেশি। আমাদের ড্রেনগুলোর তলদেশ এখন নদীর তলদেশ থেকে নিচে হয়ে যাচ্ছে নদীতে পলি পরে ভরাটের কারণে। ফলে পানি সরতে না পারায় জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে। নগরীর চারপাশের বিস্তৃত নদী গুলোখননের প্রয়োজন এখন জরুরি ভাবে।
এ বিষয়ে নাগরিক নেতা কুদরত ই খুদা বলেন, জলাবদ্ধতার কারণ পরিপূর্ণ মাস্টার প্লান হয় না। অর্ধেক অর্ধেক কাজ হচ্ছে। আমাদের উচিত মাস্টার প্লান নিয়ে কাজ করা। তিনি বলেন, যতদ্রুত সম্ভব রাস্তার উন্নয়ন করা প্রয়োজন, রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ।
সিটি কর্পোরেশনের আকার বৃদ্ধি পাবে?
২০০৮ সালে ক্ষমতায় আসার পর খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করেন তালুকদার আব্দুল খালেক। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়ে যাবার পর সেই পরিকল্পনা কাগজে কলমেই রয়ে গেছে। এখন কি অবস্থা? জানতে চাইলে নগরপিতা বলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, ২০১৩ সালের ৭ নভেম্বর কেসিসি’র তৃতীয় সাধারণ সভা ও ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ সাধারণ সভায় শহরতলীর ২৬টি মৌজা কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উক্ত সভায় উল্লেখ করা হয়, শহরতলীর এসব মৌজায় কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অনুকূল পরিবেশ পরিলক্ষিত হয়েছে। সর্বাধিক নাগরিক সুবিধাদি প্রদানের লক্ষে প্রস্তাবিত এলাকা কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা এবং সাধারণ সভার সিদ্ধান্ত ২০১৪ সালের ৮ মে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই এখই বছর ২৬ নভেম্বর প্রস্তাবিত স্থানসমূহে সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মতামত চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ খুলনা জেলা প্রশাসনের কাছে চিঠি পাঠায়।
সূত্রটি আরও জানায় স্থানীয় সংসদ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে ২৬টি প্রস্তাবিত মৌজার মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলার হরিণটানা, মাথাভাঙ্গা, ডুবি, খোলাবাড়িয়া, আলুতলা, ঠিকরাবাঁধ, কৃষ্ণনগর, আড়ংঘাটা, তেলিগাতী, যোগীপোল, শিরোমনি, গিলাতলা, আটরা, শ্যামগঞ্জ, সাচিবুনিয়া (আংশিক), ডুমুরিয়া উপজেলার চক আসানখালি ও দেয়ানা এই ১৭টি মৌজা অন্তর্ভুক্তের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। এরপর ২০১৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষ থেকে উপ-সচিব সরোজ কুমার নাথ সীমানা সম্প্রসারণের লক্ষে গণবিজ্ঞপ্তি জারী করার জন্য জেলা প্রশাসনকে দাপ্তরিক পত্র প্রেরণ করেন। যার প্রেক্ষিতে তৎকালীন জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান ১৭টি মৌজায় কেসিসির অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার অধিবাসীদের মতামত চেয়ে ওই বছর ৩০ এপ্রিল গণবিজ্ঞপ্তি জারী করেন। অধিবাসীদের মতামত ও সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রস্তাবটি স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণ করা হয়। এরপর সচিব কমিটির সভায় প্রস্তাবটি উপস্থাপন করলে হলে চাহিত তথ্য না থাকায় সিদ্ধান্ত হয়, অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।
তারপর কেসিসি’র পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ এটি মন্ত্রণালয়ে আছে খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে।
এ বিষয়ে নাগরিক নেতা কুদরত ই খুদা বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বৃদ্ধির সাথে সাথে এর সাথে সমন্বয় করে কেডিএর উন্নয়ন কাজ করতে হবে। নগর বৃদ্ধি পেলেও কেডিএর উন্নয়ন হচ্ছে না। ফলে কেসিসির আয়তন বাড়ার কথায় এমনিতেই শহরতলিতে জমির মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আর ভূমিদস্যুরা অপরিকল্পিতভাবে জমি দখল করে বিক্রি করছে। এবং স্থাপনা গড়ে তুলছেন। এ ব্যাপারে সকলকেই নজর দিতে হবে। তা না হলে এটি পরবর্তীতে বিষ ফোড়া হয়ে দাঁড়াবে।
কেসিসি’র সাথে কি সমন্বয় আছে কেডিএ, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ সকল অংশীদারদের?
একটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নাগরিক সেবা প্রদানে সিটি কর্পোরেশনের বাইরেও নানা প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা কাজ করে। যেমন খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ওয়াসা, বিদ্যুৎসহ নানা প্রতিষ্ঠান। কেসিসি’র নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধিতে ও নিরবিচ্ছিন্ন সেবা প্রদান করতে এই সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয়ের প্রয়োজন হয়। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায় সমন্বয়হীনতা। কখনও কেডিএ, কখনও বিদ্যুৎ বা অন্য সংস্থা। সমন্বয়ের ব্যাপারে আপনার উদ্যোগ কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, সমন্বয় করেই আমরা কাজ করি। সব সময় যে সমন্বয় থাকে তা নয় কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমন্বয়হীনতা তৈরি হয়। সে গুলো আমরা আলাপ আলোচনার মাধ্যমে নিরসন করি। তিনি বলেন, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কারণে খুলনার যথাযথ উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে। একনেকে পাশ করা রাস্তা তারা এখনও করতে পারছে না। তাদের তৈরি করা রাস্তা সংস্কার না করার কারণে মানুষকে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এ গুলো নিরসনে আমরা কাজ করছি।
এ বিষয়ে নাগরিক নেতা কুদরত-ই-খুদা বলেন, সমন্বয়হীনতার কারণে জনদুর্ভোগ আরো বাড়ছে।
আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরিতে কি উদ্যোগ?
খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নগরীর প্রতিদিনের শত শত টন বর্জ্য থেকে ডিজেল, কমপোস্ট সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ‘ইন্টিগ্রেটেড ল্যান্ডফিল্ড অ্যান্ড রিসোর্চ রিকভারি ফ্যাসিলিটি শলুয়া’ নামের এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এডিবি। প্রায় ৫৫ কোটি টাকার এ প্রকল্পের জন্য খুলনা জেলার দৌলতপুর-শাহপুর সড়কে শলুয়া বাজারের কাছে গত বছর ১৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, বর্জ্য থেকে উৎপাদিত হবে ডিজেল ও কমপোস্ট সার এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট থেকে উৎপাদিত গ্যাস থেকে হবে বিদ্যুৎ। এই প্রকল্পের নকশা প্রণয়ন, মাটি পরীক্ষাসহ সংশ্লিষ্ট কাজও শেষ হয়েছে, টেন্ডারও হয়ে গেছে। এছাড়া রাজবন্দে ডাম্পিং পয়েন্টতো রয়েছেই।
এছাড়াও রয়েছে ‘খুলনার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন প্রকল্প’। ব্যয় ধরা হয় ৩৩৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি প্রি-একনেকে পাস হয়েছে। পাইপ লাইনে থাকা এ প্রকল্পের ডিপিপি তৈরি করবে কেসিসি। ব্যয়ের খাত অনুযায়ী প্রকল্প প্ল্যানিং কমিশনে পাঠানো হবে। সেখান থেকে মন্ত্রণালয়ে আসার পর একনেকে পাস হবে। এ বছরের শেষে এ প্রকল্পের কাজ মাঠপর্যায়ে শুরু করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
তিনি আরও জানান, এই প্রকল্পের অধীনে থাকছে প্রতিটি মার্কেটের বর্জ্য নেওয়ার জন্য কন্টেইনার বহনকারী গাড়ি, ময়ূর নদ ও আলোচিত ২২ খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং পানির প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য যন্ত্রপাতি, হাউজ টু হাউজ ময়লা কালেকশনের জন্য থাকবে মিনি ড্রাম ট্রাক, থাকছে লং এক্সক্যাভেটর, বর্জ্য অপসারণ, সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কারকরণে উন্নতমানের যন্ত্রপাতি। মানববর্জ্য জ্বালানি তেলে রূপান্তর করতে আধুনিক প্রক্রিয়া, সংগৃহীত ময়লা ডাম্পিং করার জন্য অধিগ্রহণ করা হবে ২৫ একর জমি, গ্যারেজের জন্য ১০ একর এবং ১৫টি এসটিএস-এর জন্য পাঁচ শতাংশ করে ৭৫ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হবে। মেডিক্যাল ওয়েস্ট সংগ্রহ এবং তা প্রক্রিয়াজাত করে আয়বর্ধক পণ্যে পরিণত করা হবে।
এ বিষয়ে নাগরিক নেতা কুদরত ই খুদা বলেন, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থানা যেভাবে হওয়া দরকার সেটা হচ্ছে না। প্রাইমারি বর্জ্য কালেকশনে সিটি কর্পোরেশনের নিজের কোন কার্যক্রম নাই। অন্যদের দিয়ে করাতে গিয়ে কেসিসিকে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। প্রাইমারী বর্জ্য কালেকশনের কাজটি সিটি কর্পোরেশনকে নিজেকেই করতে হবে।
অপেক্ষামান উন্নয়ন প্রকল্পগুলো কি?
সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, খুলনার পাবলিক হল, ওয়ার্ড অফিস সহ নানা বিধি উন্নয়নে ৪৭০ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও রূপসা নদী, ময়ূর নদের পারে বাঁধ নির্মান ও ওয়াকওয়ে তৈরির কাজও চলছে বলেন তিনি।
নাগরিক সেবার মান উন্নয়নে প্রতিকূলতাগুলো কি কি?
সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, প্রতিকূলতাতো রয়েছেই, করোনার কারণে দাতা সংস্থাগুলো এখন আগের মত কাজ করছে না। রয়েছে কর্পোরেশনের নিজস্ব জনবল সংকট। আর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত না হওয়ার কারণে চালু হচ্ছে না সিটি গভর্ণমেন্ট’ ব্যবস্থা। ফলে মাঝে মধ্যেই সমন্বয়হীনতার কারণে উন্নয়ন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। কাঙ্খিত নাগরিক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না।
নাগরিক চাওয়া?
সবশেষে কুদরতই খুদা বলেন, সিটি মেয়র গত তিন বছরে জলাবদ্ধতা দূর করতে পারেননি, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট চালু হয়নি, আধুনিক ফুটপাথ তৈরি ও ফুটপথ মুক্ত হয়নি, প্রতিটি ওয়ার্ডে নেই শিশুদের পর্যাপ্ত খেলাধূলার ব্যবস্থা, এই সকল বিষয়গুলো দেখতে হবে। তা না হলে নাগরিকদের প্রতিদিন প্রতিনিয়ত যে ভোগান্তি এই ভোগান্তি লাঘব হবে না। তবে তিনি মনে করেন, তালুকদার আব্দুল খালেক যেভাবে কাজ করছেন সেটি প্রশংসানীয়। তবে কেসিসি’র কর্মকর্তাদেরও তার মত কর্মচঞ্চল হতে হবে। অন্যথায় কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছানো যাবে না।
মেয়রের চাওয়া?
সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, আমার চাওয়া হচ্ছে আপনারা এই সকল উন্নয়ন কাজ আপনাদের নিজের কাজ মনে করে তদারকি করুন। যেখানে অনিয়ম দুর্নীতি দেখবেন আমাকে জানান, আমরা জরুরি ব্যবস্থা নিব। কোন প্রকার অনিয়ম কাজ আমি প্রশ্রয় দেই নি দেবো না।