মহেশপুর(ঝিনাইদহ)সংবাদদাতাঃ বিয়ের কয়েক বছর পরেই মারা যায় হাওয়ানুরের স্বামী জসিম উদ্দিন। ততদিনে তাদের সংসারে জন্ম নেয় ২টি সন্তান। স্বামী মারা যাওয়ায় অবুঝ দ’ুটি সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন হাওয়ানুর। শশুর শাশুড়ীর সংসারেও বেশি দিন থাকতে পারেনি হাওয়ানুর। অবেশেষে দুই শিশু সন্তান নিয়ে ঠাই হয় বাপের ভিটায়। স্বামীর শোক ভুলে সন্তানদের মুখের দিকে তাকিয়ে আর বিয়ে করেননি তিনি। সন্তানদের ভবিষ্যত গড়ার জন্য লোকের বাড়িতে এমনকি মাঠে-ঘাটে কাজ করে একটি গরুর বাছুর বর্গা নিয়ে লালন পালন করতে থাকেন। কঠোর পরিশ্রমের পর তার বর্গা নেওয়া গরুটির কিছু দিনের মধ্যেই বাছুর ছানা হবে। এছাড়াও চারটি ছাগল, ঘরের টুকিটাকি আসবাব পত্রও করেছেন তিনি। কিন্তু কে জানতো ১৩ বছর ধরে তিলে তিলে গড়া তার সহায় সম্বল আগুনে পুড়ে নিমেশেই ছাই হয়ে যাবে।
এ ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে। আগুন লেগে গোয়ালে থাকা ১টি গরু, ৪টি ছাগলসহ ঘরের আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। হাওয়ানুর কোন মতে তার দুই সন্তানে নিয়ে ঘর থেকে বেরোতে পারলেও শেষ সম্বল বলতে তাদের পরণের কাপর ছাড়া আর কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। তার কাঁন্না দেখে এলাকার সকলেরই চোঁখ সলসল করছে। অনেকেই বলছে আল্লাহর এ কেমন বিচার,অসহায় বিধবা মহিলার সহায় সম্বল আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিলো।
বন্যা আক্তার জানান, ১৩ বছর আগে ননদের স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই ভাইদের কাছে থেকে অনেক কষ্ট করে খেয়ে-না খেয়ে দু’ সন্তান মানুষ করাসহ ছাগল গরু পুষছেন। আগুনে ছাগল-গরুসহ ঘরের সকল জিনিস পত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
স্থানীয় মোহর আলী ও জয়নাল আবেদীন জানান, অসহায় এই বিধবা মহিলা দ’ুটি সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে ছেলেদের ভবিষ্যতের জন্য যা করেছে। এক রাতে আগুনে পুড়ে তা শেষ হয়ে গেছে। তবে কিভাবে আগুন ধরেছে তা সঠিক ভাবে কেউ বলতে পারছে না। তারা আরও বলেন আগুনে পুড়ে অসহায় হাওয়ানুরের প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হামিদুর রহমান টুটুল বলেন,সকালে খবর শুনে ঘটনা স্থলে আসি,আমার আসার আগে চেয়ারম্যান এসে দেখে গেছে,এবং তিনি ইউএনও স্যারকে বিষায়টি অবগতি করেছেন। আমি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। আমাদের যতটুকু সম্ভব আমরা চেষ্টা করবো এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়াসমিন মনিরা বলেন, এ বিষটি আমার জানা নেই, আগুনে পুড়ে ক্ষতি গ্রস্ত পরিবারটি যদি আমাদের কাছে লিখিত আবেদন করেন তাহলে সেই পরিবারকে দূর্যোগ ও ত্রান অধিদপ্তরের মাধ্যমে সহযোগিতা করা হবে।
মহেশপুরে বিধবা হাওয়ানুরের শেষ সম্বল আগুনে পুড়ে ছাই
Leave a comment