
রঞ্জন কুমার মল্লিক, মাদারীপুর : মাদারীপুরে শীত মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। শনিবার (২২ জানুয়ারি) তাপমাত্রা ভোরে ছিল ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। শিশুদের ঠান্ডা জনিত রোগ বালাইয়ের কথা বিবেচনা করে প্রাথমিক স্কুলে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। সোমবারের তাপমাত্রা যা চলতি শীত মৌসুমে জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বলে জানিয়েছেন জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষক আবদুর রহিম সান্টু। এতে জেলার শিশু ও বয়স্কদের ঠান্ডা জনিত রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য গরম পোষাক পরিধানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাদারীপুরে গত এক সপ্তাহ যাবত শীতে মানুষের জীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যার পরেই প্রচন্ড শীত নেমে আসে। সেই সাথে কিছুটা কুয়াশাও থাকে। তবে বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে কুয়াশা কম দেখা গেলেও শনিবার ভোরে বিভিন্ন স্থানে অনেক কুয়াশা দেখা গেছে। সেই সাথে মৃদু বাতাস বইতে থাকায় শীত বেশি অনুভুত হয়েছে। শীতকে উপেক্ষা করেই কৃষকদের বোরো ধানের চারা রোপন করতে দেখা গেছে। রাস্তা ঘাটে শ্রমজীবি মানুষদের দেখা মিলেছে। তবে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম ছিল।
ডাসার উপজেলার শশিকর গ্রামের বাসিন্দা লিটন সরকার। তিনি বলেন গতকাল সন্ধ্যা থেকেই প্রচুর শীত পড়েছে। বাতাসও চলছে সমান তালে। এতে সবাইকে কাবু করে ফেলেছে। ঘর থেকে সন্ধ্যা থেকে সকাল ৯ টা পর্যন্ত তেমন কেউ বের হয়নি। তবে ৯ টার পরে সূর্য দেখা যাওয়ায় অনেকেই কৃষি কাজে নেমে পড়েছে।
রাজৈর উপজেলার আমগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা শ্যামল সরকার বলেন, এখন ধান রোপনের ব্যস্ত সময়। তাই কাজ না করে উপায় নেই। আমাদের বিল অঞ্চলের মানুষেরা শীত পড়লেও থেমে নেই। কষ্ট হলেও জমিতে কাজ করছে। কিছু করার নেই। কেউ তো আর এই বিলের মানুষদের জন্য একটা কম্বল নিয়ে আসবে না যে শীতে গায়ে দেবে এই এলাকার মানুষেরা।’
এই বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, জেলার সবগুলো উপজেলাতেই গত বছরের চেয়ে অনেক কম কম্বল বরাদ্দ এসেছে। আরমা আমাদের সীমিত বরাদ্দ দিয়েই কম্বল বিতরণের কার্যক্রম চলছে। যা চাহিদার চেয়ে অনেক কম। আমরা মাদারীপুর সদর উপজেলায় ১৯৯৫ পিচ কম্বল বিতরণ করেছি। তাছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরাও শীতবস্ত্র বিতরণ করছে।
এই বিষয়ে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াদিয়া শাবাব বলেন, ‘মাদারীপুর সদর উপজেলার কম আয়ের মানুষদের শীত নিবারণের জন্য সরকারি ও বেসরকারি ভাবে শীতের শুরু থেকেই শীত বস্ত্র বিতরণ করে আসছি। প্রশাসনের উদ্যোগে শীত বস্ত্র বিতরণের এই কার্যক্রম চলতে থাকবে।’
জেলা সহকারী আবহাওয়া কর্মকর্তা আবদুর রহিম সান্টু বলেন, ‘গত ২৪ ঘন্টায় সবশেষ ৯.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা মাদারীপুর জেলা রেকর্ড করা হয়েছে। কুয়াশার পরিমান গতকালকের চেয়ে কিছুটা কম ছিল। কুয়াশার ভিজিবিলটি ২ কিলোমিটার পর্যন্ত দেখা গেছে। বাতাসের আদ্রতা সর্বোচ্চ ৯৭% ছিল। তবে ঠান্ডার সাথে হিমেল বাতাস জেলাজুড়ে বইতে থাকায় শীত কিছুটা বেশি অনুভুত হচ্ছে।