স্ত্রীর পর্ণোগ্রাফি মামলায় পিবিআই তদন্তে প্রমাণ মিলেছে
খানজাহান আলী থানা প্রতিনিধি : খুলনা বিএল কলেজের শিক্ষার্থী নগরীর খানজাহান আলী থানার শিরোমণি এলাকার এক তরুণী কর্তৃক পর্ণোগ্রাফি মামলায় ফেঁসে যাচ্ছে স্বামী মো. মাহবুবুল ইসলাম রাজ (২৯) নামের এক পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক তদন্তের প্রমানে এমনটি মিলেছে। বিষয়টি বুঝতে পেরে মামলা তুলে না নিলে বিবাহের আগে ও পরের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের অশ্লীল ভিডি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছে ভুক্তোভোগী ঐ নারী।
মামলা এবং পিবিআই তদন্ত সূত্রে জানা গেছে, শিরোমণি এলাকার ঐ তরুণীর সাথে সাতক্ষিরা পুলিশ লাইনের এস আই মো. মাহবুবুল ইসলামের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় একপর্যায়ে প্রেম। পরবর্তিতে প্রেমের সূত্র ধরে বিবাহের প্রলোভন দেখিয়ে খুলনার একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গোপনে নগ্নচিত্র ধারণ করে ঐ পুলিশ কর্মকর্তা। পরবর্তিতে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরো একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ এনে গত ২০২২ সালের ১৪ আগস্ট পিটিশন মামলা করেন ঐ ভুক্তোভোগী নারী। পরের সপ্তাহে মামলাটি প্রত্যাহার করার শর্তে ৫ লক্ষ টাকার দেনমোহরানায় তাকে বিবাহ করে। বিবাহের পরে যৌতুকের দাবিসহ নানা ইস্যুতে ঐ নারীর উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতনের অভিযোগ এনে খানজাহান আলী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়(মামলা নং-৪, তাং- ১৩/৪/২০২৩)। পরে আদালতে ও যৌতুন আইনে একটি মামলা করা হয়। এ সকল মামলার হাত থেকে বাচতে মামলাগুলো তুলে নিতে ঐ নারীকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি প্রদান করা হয়। একপর্যায়ে মামলা তুলে না নিলে বিবাহের আগে ও পরে তাদের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের বিভিন্ন ধারণ করা অশ্লীল ভিডিও ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন ঐ পুলিশ কর্মকর্তা। ভুক্তভোগী ঐ নারী বিষয়টি আদালতে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে। মামলাটি আদালত পিবিআইকে তদন্তের জন্য প্রেরণ করে। পিবিআই মামলাটি তদন্ত শেষে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেছে বলে সূত্রে জানাগেছে।
পিবিআই’র এসআই মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত ঐ তদন্ত প্রতিবেদনে মো. মাহবুবুল ইসলাম রাজের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২ এর ৮(৩) ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাহবুবুল ইসলামের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, মামলাগুলো সব সাজানো এবং ষড়যন্ত্রমূলক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা কথা। আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি এবং শায়েস্তা করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী একের পর এক মামলা দেওয়া হচ্ছে। আমি আশা করি আইনের মাধ্যমে আমি নির্দোশ প্রমানিত হবো।