গাজী জাহিদুর রহমান, তালা
তালায় মালটা চাষ করে ভাগ্য বদলের চেষ্টা করছেন আব্দুল আলীম মোড়ল নামের এক কৃষক। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের আগোলঝাড়া গ্রামের মৃত নূর আলী মোড়লের পুত্র। কম জমিতে অল্প পুঁজিতে লাভ বেশি হওয়ায় স্বপ্ন ও সম্ভাবনার পথ দেখাচ্ছে বিদেশী ফল মালটা। মাটি চাষের উপযোগী হওয়ায় মালটার ফলন ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করছেন আব্দুল আলীম। মালটার সাথে সাথে তিনি শুরু করেছেন বেদানা চাষ। যা এলাকায় জনপ্রিয় হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, আব্দুল আলীম মোড়ল সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। বেতনও পেতেন মোটামোটি। দীর্ঘদিন চাকরি শেষে নিজ দেশে এসে মালটার বাগান করার পরিকল্পনা করেন। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মাঝেও উৎসাহ পান তিনি। মালটার পাশাপাশি বেদানা ফল চাষের প্রতি মনোযোগী হয়ে নিজ গ্রামে শুরু করেন ফলের বাগান। সাইট্রাস পরিবারভুক্ত এই রসালো ফল চাষাবাদে দিন দিন আশার আলো দেখছেন তিনি। তাঁর দেখাদেখি এলাকার অনেক বেকার যুবক স্বল্প পরিসরে মালটাবাগান করেছেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, তালা উপজেলায় চলতি বছরে ৫ হেক্টর জমিতে মালটার চাষ হয়েছে। এরমধ্যে আগোলঝাড়া গ্রামের মালটা ও বেদানার ফলের বাগান সরকারিভাবে প্রদর্শনী প্লট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। উপজেলায় বেলে দোআঁশ মাটিতে পরিমাণ বেশি থাকায় মালটা ও বেদানা ফল সহ অন্যসকল ফলের ভালো চাষাবাদ করা সম্ভব। তালা উপজেলায় বারী মালটা-১ মিষ্টি (পয়সা মাল্টা) ফলন একটু ভালো হয়।
কৃষক মোঃ আব্দুল আলীম মোড়ল জানান, বিদেশে ও দেশে ইউটিউবসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে মালটা চাষের ওপর প্রতিবেদন দেখে মালটা ও বেদানা চাষে আগ্রহী হন তিনি। ২০১৯ সালে বাবার দেওয়া ৩৫ শতক জমিতে ১৭০টি মাল্টা ও ১৭০টি বেদানার গাছ দিয়ে শুরু করি ফলের বাগান। মাত্র তিন বছরেই তিনি বর্তমানে সফল মালটা চাষি।
তিনি বলেন, গত বছরে তাঁর বাগানে সামান্য পরিমাণ মালটা ফল ধারণ করায় প্রায় বিশ হাজার টাকার মালটা বিক্রি হয়। তবে বেদানা গাছে এখনো ফল ধরেনি। এবছর ফল ধরবে বলে আশা করা হচ্ছে। বাগানে মালটা ও বেদানা ফলের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির আমগাছ নারিকেল, আমড়া ও লিচু গাছের চারা রোপন করেছেন। তবে মালটা ও বেদনা চাষের ওপর তিনি বিশেষ নজর রাখেন। তাঁর বাগানে থাইল্যান্ডের বেড়িকাটা মালটা ও ভারতীয় প্রলিত মালটা জাতের গাছ আছে। তিন বছর পরে গাছ ভেদে ৩০-৫০টি ফল ধারণ করেছে। বর্তমানে তাঁর বাগান পরিচর্যার জন্য একজন লোক সারাক্ষণ কাজ করেন। সেই সাথে তিনি, তার স্ত্রী ও একমাত্র পুত্র মোঃ সাফিউদ্দীন মোড়ল ফল বাগানের কাজে সহয়তা করে যাচ্ছেন সর্বক্ষণ।
তালা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, মালটা চাষে অনেক লাভজনক ফল। আমাদের পক্ষ থেকে মালটা চাষি দের এন,এ,টি,পি-২ প্রকল্প ও জিকেডিএসপি প্রকল্পের আওতায় প্রদর্শনী প্লট করা হচ্ছে বেদেশী ফল চাষে আগ্রহ বাড়ানোর জন্য। এছাড়া সকল মালটা চাষীদের সঙ্গে কৃষি অফিস সার্বক্ষডুক যোগযোগ সহ সকলকে টেকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করা হচ্ছে। আগোলঝাড়ার আব্দুল আলীম মোড়ল মালটা ও বেদানা ফলের চাষ করছেন। একজন সফল চাষি হিসেবে ব্যক্তিগতভাবে সর্বক্ষণ তার খোঁজ খবর নিচ্ছি।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত