জন্মভূমি রিপোর্ট
বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা খান মোঃ জাকির হোসেন হত্যা মামলার সন্দেহভাজন অর্থযোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী মোঃ বাহাউদ্দিন খন্দকার (৪৮) দুই দিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদকালে মুখ খুলেছে। তার কাছ থেকে পরিকল্পিত ওই খুন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে পুলিশ দাবি করেছে।
দুই দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বুধবার সকালে আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। এরপর অতিঃ চিফ মেট্রো পলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সুমি আহমেদ তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। আদালতের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।
খুলনার ডিসি ও এসপি অফিসের অদূরে কেসিসি মার্কেট অভ্যন্তরে সংঘটিত জাকির হত্যাকাÐের প্রায় ১০ বছর পর গত ৭ মার্চ রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই এর একটি টিম সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রা এলাকার মৌ মার্কেটের দ্বিতীয় তলা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। আসামি বাহাউদ্দিন হরিনটানা থানা এলাকার রায়েরমহল বাউন্ডারি রোডের বাসিন্দা। তিনি ১৬নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। যদিও এর আগে মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ তার দলিল লেখার সনদপত্র স্থগিত করেছিলেন।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, হত্যাকাÐে আসামির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। ভাড়াটে কিলারদের সম্পর্কেও সে মুখ খুলেছে। তার দেয়া তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সে খুবই ধুরন্ধর। হত্যাকাÐের দুই দিন আগে সে নেপাল চলে যায়, ঘটনার পাঁচ দিন পর দেশে ফিরে আসে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার এবং ঘাতকদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, জিজ্ঞাসাবাদকালে আসামি হত্যাকাÐে জড়িত কয়েকজন সহযোগীর নাম প্রকাশ করেছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
২০১২ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় কেসিসি মার্কেটস্থ চেম্বারের তালাবন্ধ করে দলিল লেখক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব জাকির বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হেলমেট পরিহিত দু’ আততায়ী সেখানে এসে তার নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম বলা মাত্রই তাদের একজন পিস্তল বের করে তাকে গুলি করে। ঘটায়- বোমা বিষ্ফোরন। দু’-তিনটি মোটর সাইকেলে ঘাতক দলের অন্য সদস্যরা জেলা পরিষদের সামনের সড়কে অপেক্ষা করছিল। তারা ওই দু’জনকে নিয়ে অকুস্থল ত্যাগ করে। যাবার আগে ওই রাস্তায় তারা আরও একটি বোমা ফাটায়। মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২২ মে নিহতের স্ত্রী জামিলা বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
সূত্রমতে, থানা পুলিশ, ডিবি এবং সিআইডি’র তদন্তকালে হত্যাকাÐে জড়িত সন্দেহে রেজাউল করিম বাবলু (৫৫), শেখ আলমগীর হোসেন (৩৫), শেখ আজিম উদ্দীন (৩৬), মোঃ জামির হোসেন ওরফে জামির শেখ (৪৩), জহিরুল ইসলাম ওরফে লাল্টু (৩৬), শেখ হাসান (৪৮) এবং মোঃ ফারুক হোসেন গ্রেফতার হয়। তারা সবাই জামিনে আছেন। আসামি লাল্টু জামিনে মুক্তির পর পালিয়েছেন।
মাস্টার মাইন্ড বাহাউদ্দিন রিমান্ডে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে
Leave a comment