জন্মভূমি রিপোর্ট
বাংলাদেশ দলিল লেখক সমিতির কেন্দ্রীয় নেতা খান মোঃ জাকির হোসেন হত্যা মামলায় শেখ নজরুল ইসলাম ওরফে নজু (৩৮) নামে আরেক সন্দেহভাজন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তাকে দুই দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করা হচ্ছে। তিনি এই হত্যাকাÐের মাস্টার মাইন্ড হিসেবে অভিযুক্ত মোঃ বাহাউদ্দিন খন্দকারের দেহরক্ষী ও বিশ^স্ত সহচর বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আসামি নজু হরিনটানা থানাধীন ৯০ রায়েরমহল মেইন রোডের মৃত: শেখ আবুল করিম ওরফে কালু পোদ্দারের ছেলে। রিমাÐে জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যাকাÐের পরিকল্পনাকারী ও অর্থ যোগানদাতা বাহাউদ্দিনের বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকাÐ সম্পর্কে মুখ খুলেছে। দিয়েছে- কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। হত্যাকাÐের মূল রহস্য উদঘাটন, ঘাতকদের ব্যবহৃত অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার এবং পলাতক আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টায় গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সময়ের মধ্যে তার জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) পিবিআই উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় দৈনিক জন্মভূমিকে এসব তথ্য জানান। যদিও তদন্তের স্বার্থে তিনি জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য সংক্রান্ত কিছু প্রশ্নের উত্তর সম্পর্কে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
পুলিশ জানায়, গত ১০ মে রাতে বয়রা মৌ মার্কেট এলাকা হতে নজুকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দের পর পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়। ওই দিনই শুনানি শেষে আদালত আসামির দু’ দিনের রিমাÐ মঞ্জুর করেন।
এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর একটি টিম হত্যাকাÐের মাস্টারমাইন্ড হিসেবে সন্দেহভাজন বাহাউদ্দিন খন্দকার (৪৮) কে সোনাডাঙ্গা থানাধীন বয়রা এলাকার মৌ মার্কেটের দ্বিতীয় তলা থেকে তাকে গ্রেফতার করেছিল। সে হরিনটানা থানা এলাকার রায়েরমহল বাউন্ডারি রোডের বাসিন্দা।
তাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের উদ্ধৃতি দিয়ে পিবিআই খুলনা জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ মোশফিকুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেছিলেন, বাহাউদ্দিন এ হত্যাকাÐের মাস্টারমাইন্ড। মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে সে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে জাকিরকে খুন করায়।
তিনি বলেন, হত্যাকাÐের দুই দিন আগে আসামি নেপাল চলে যায়। খুনের ঘটনার পাঁচ দিন পর সে দেশে ফিরে আসে। এরপর উচ্চ আদালতে হাজির হয়ে গ্রেফতার ও হয়রানি না করার জন্য একটি মিস পিটিশন দাখিল করে। সে তার আবেদনের স্বপক্ষে আদালতের আদেশের মেয়াদ বর্ধিত করে আসছিল। পিটিশনটির দীর্ঘ শুনানি শেষে গত ১৪ ডিসেম্বর নিষ্পত্তি হয়। নিষ্পত্তির আদেশের কপি হাতে পাওয়ার পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। হত্যাকাÐে জড়িত অপর আসামিদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের জন্য অভিযান অব্যাহত আছে।
গত ২০১২ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় কেসিসি মার্কেটস্থ চেম্বারের তালাবন্ধ করে দলিল লেখক সমিতির যুগ্ম মহাসচিব জাকির বাড়ী ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হেলমেট পরিহিত দু’ আততায়ী সেখানে এসে তার নাম জিজ্ঞাসা করে। নাম বলা মাত্রই তাদের একজন পিস্তল বের করে তাকে গুলি করে। ঘটায়- বোমা বিষ্ফোরন। দু’-তিনটি মোটর সাইকেলে ঘাতক দলের অন্য সদস্যরা জেলা পরিষদের সামনের সড়কে অপেক্ষা করছিল। তারা ওই দু’জনকে নিয়ে অকুস্থল ত্যাগ করে। যাবার আগে ওই রাস্তায় তারা আরও একটি বোমা ফাটায়। মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। ২২ মে নিহতের স্ত্রী জামিলা বেগম অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলাটি দায়ের করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই পলাশ বলেন, মামলায় মোট ১০ জন আসামি গ্রেফতার হয়েছে। তাদের মধ্যে অর্থযোগানদাতা ও পরিকল্পনাকারী হিসেবে অভিযুক্ত বাহাউদ্দিনসহ নয় আসামি আদালতের আদেশে জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
মাস্টার মাইন্ড বাহাউদ্দিনের দেহরক্ষী নজু রিমান্ডে মুখ খুলেছে
Leave a comment