
দুই প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা
জন্মভূমি রিপোর্ট : মূল্যবৃদ্ধির পাঁচদিন পর পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে খুলনায় অভিযান চালিয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সোমবার দুপুরে নগরীর সোনাডাঙ্গা ট্রাক টার্মিনাল পাইকারীবাজার ও নগরীর নিউমার্কেট কাঁচা বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এসময় পেঁয়াজের অতিরিক্ত দাম, মূল্য তালিকা ও ক্রয়-বিক্রয় রশিদ না থাকায় দুই প্রতিষ্ঠানকে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকারের অভিযানের খবর পেয়ে অনেক পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে দোকান ছেড়ে পালিয়ে যেতে দেখা যায়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনার উপ-পরিচালক মোহাম্মদ সেলিমের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। তিনি বলেন, ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দেয়। এ খবরে আমরা অভিযান চালিয়েছি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ দেখাতে পারেনি। ব্যবসায়িরা মুলত মোবাইলের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে। বেশ কিছু অসঙ্গতি পাওয়ায় ট্রাক স্ট্রান্ডে এক ব্যবসায়িকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অপরদিকে খুলনা নিউমার্কেট খুচরা বাজারে অভিযান পরিচালনাকালে মূল্যতালিকা হালনাগাত না করায় এক ব্যবসায়িকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি আরো বলেন, পাইকারী ও খুচরা বাজার পেঁয়াজের দামের বিস্তর পার্থক্য দেখা গেছে। যারা এই দাম বৃদ্ধির সাথে জড়িত থাকবে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এই অভিযান চলমান থাকবে। এসময় খুলনা বড় বাজারে কেন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছেনা এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সেখানেও যাবো।
এদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে হতাশা ব্যক্ত করেছে সাধারণ মানুষ। নিউমার্কেটে বাজার করতে আসা গৃহিনী সালমা খাতুন বলেন, সংসার চালাতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছি। সংসার খরচ আগের থেকে ৫/৭ হাজার টাকা বেড়ে গেছে। পণ্যেও দাম সরকার নিয়ন্ত্রণ করবে কিন্তু তারা তা করছেন না।
ঊৃদ্ধ এনায়েতুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের যা ইনকাম তার থেকে খরচ বেশি। আস্তে আস্তে দেনার দিকে চলে যাচ্ছি। ঘরের মানুষ বলছেন এখন থেকে পেঁয়াজ খাবো না মুলা খাবো।
বেসরকারী চাকরীজীবী সাজিদ হোসেন বলেন, গত সপ্তাহের ৬০ টাকার পেঁয়াজ এই সপ্তাহে ২৪০ টাকায় কিনেছি। যারা ছোট চাকরী করি তাদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে। সংসার চালানো দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
আর খুচরা ও পাইকারী ব্যবসায়িদের অভিযোগ আঙ্গুল সিন্ডিকেটের দিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিউমার্কটের এক খুচরা ব্যবসায়ি বলেন, আমরা অল্প টাকার মাল কিনি। আমরা কি করবো। ৮ হাজার ৪০০ টাকায় এক মন পেঁয়াজ কিনেছি। এখন স্যাররা বলছেন কমে বেচতে হবে। চাপে পড়ে ২০ টাকা কমে বিক্রি করছি এই ২০ টাকাই লস। দাম বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, যারা বড় ব্যবসায়ি তারা মজুদ করে রাখে। তারা কমালে আমরাও কমে বেচতে পারবো।
বড়বাজারের কদমতলা এলাকার ব্যবসায়ি শামীম পাটোয়ারী বলেন, আমি গতকাল ১১০ টাকায় মাল কিনেছি। সেই মাল আমার কাছ থেকে নিয়ে ২১০ টাকায় পাইকারী বিক্রি হচ্ছে। তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? যারা দায়িত্বশীল তারা দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
মক্কা বানিজ্য ভাণ্ডারের রাসেল জোয়ার্দার বলেন, ভারত পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে। তাই দাম বেড়েছে। এখন নতুন পেঁয়াজ উঠছে। দুই এক সপ্তাহের মধ্যে দাম কমে যাবে।