জন্মভূমি রিপোর্ট
ডুমুরিয়ার মেয়ে সুমাইয়া মোসলেম মীম ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ২৯২ দশমিক ৫ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন। মঙ্গলবার প্রকাশিত ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে এ তথ্য জানা গেছে। জানা যায়, মীম খুলনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলেন। ভর্তি পরীক্ষার লিখিত অংশে তিনি ৯২ দশমিক ৫ পেয়েছেন। আর এসএসসি ও এইচএসসিতে প্রাপ্ত জিপিএতে পেয়েছেন ২০০ নম্বর। মীমের বাবার নাম মো. মোসলেম উদ্দিন সরদার। তিনি ডুমুরিয়া কলেজের একজন সহকারী অধ্যাপক। তার মায়ের নাম খাদিজা খাতুন। তিনি একজন সরকারি চাকরিজীবী। ২০১৯ সালে যশোর বোর্ডের ডুমুরিয়া সরকারি গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। ২০২১ সালে খুলনা সরকারি এম এম সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। দুই পরীক্ষাতেই জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি। ডুমুরিয়া সদরের আরাজি সাজিয়াড়া গ্রামের বাসিন্দা সরদার মোসলেম উদ্দীন বর্তমানে পরিবার পরিজনসহ খুলনার মৌলভীপাড়া এলাকায় থাকেন।
ফল প্রকাশের পর মীম বলেন, ‘প্রথমে ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। তার মধ্যে করোনা আসলো। পড়াশোনায় একটা ব্যাঘাতও ঘটেছিল। বেশ একটা সময় গ্যাপ। তারপর আবার খুলনায় ফিরে পড়াশোনা শুরু করি। তখনও ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বো। কিন্তু এইচএসসি পরীক্ষার এক থেকে দেড় মাস আগে আম্মুর ইচ্ছায় সিদ্ধান্ত বদলাই, না মেডিক্যালেই পড়বো। তারপর এইচএসসি পরীক্ষা দিলাম। এরপর যে তিন মাস ছিল, পুরো সময় মেডিক্যালের প্রস্তুতি নিলাম। সেখান থেকে আজকে এই অবস্থানে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দুই বোন। আব্বু-আম্মু আছেন। আমি কৃতজ্ঞ, এরকম একটা পরিবার আল্লাহ আমাকে দিয়েছেন। বিশেষ করে আমার আপুর কথা বলতেই হয়। এরকম একটা বোন আমি পাইছি। আপু আমাকে সবসময় সাপোর্ট দিয়েছে।’
খুলনার সরকারি এম এম সিটি কলেজের ছাত্রী মীম। বাবা মোসলেম উদ্দিন সরদার ডুমুরিয়া কলেজের সহযোগী অধ্যাপক। মা খাদিজা খাতুন সরকারি চাকরি করেন। ডুমুরিয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের আরাজি এলাকায় তাদের বাড়ি। পরিবারের সঙ্গে বর্তমানে খুলনা শহরের মৌলভীপাড়ার ১৪ টিবি বাউন্ডারি রোড এলাকায় থাকেন মীম।
মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘আমার মেয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষায় সারা দেশের মধ্যে প্রথম হওয়ায় আমরা গর্বিত। সে ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনায় খুব মনোযোগী ছিল। পঞ্চম শ্রেণিতে উপজেলায় প্রথম স্থান অধিকার করে। এসএসসি পরীক্ষায় যশোর বোর্ডে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন পায়। আমি মহান আল্লাহ পাকের প্রতি কৃতজ্ঞ। সাফল্যের জন্য তার সকল শিক্ষককে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মীমের ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ার হবে। তবে তার মায়ের প্রচণ্ড ইচ্ছায় মেডিক্যাল কোচিংয়ে ভর্তি হয়। মায়ের অনুপ্রেরণায় তার এই সাফল্য। আমার মেয়ে যেন ভালো ডাক্তার ও মানুষ হয়ে গরিবের সেবা করতে পারে সেই দোয়া করি। সে যেন গ্রামের অসহায় মানুষের সেবা করে তার কাছে সেই প্রত্যাশা করি।’
মা খাদিজা খাতুন বলেন, ‘আমার মেয়ের এমন সাফল্যের জন্য আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালে যশোর বোর্ডের অধীনে ডুমুরিয়া গার্লস স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পান মীম। ২০২১ সালে একই বোর্ডের অধীনে সরকারি এমএম সিটি কলেজে থেকে এইচএসসিতে ডোল্ডেন জিপিএ পান। এরপর ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন।