মোংলা প্রতিনিধি : মোংলা বন্দরে অবস্থানরত 'এমভি সেজুঁতি' নামের বানিজ্যিক জাহাজে ডাকাত দলের হানা ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। এ ঘটনায় বন্দর এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ঘটনার ৩৬ ঘন্টার মাথায় লুণ্ঠিত মালামাল সহ জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ার সহ ৩ চোরাকারবারীকে আটক করা হয়।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আবরার হাসান প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, গত সোমবার ভোর রাত ৩ টায় বন্দরের বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙ্গরে থাকা বাংলাদেশি এ জাহাজটি প্রায় ১২ জন ডাকাত দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ হানা দিয়ে নাবিকদের জিম্মি করে মেশিনারিজ মালামাল লুট করে নেয়। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড জাহাজের নাবিকদের যোগাযোগ ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোংলা পৌর শহরের মঙ্গলবার রাতভর অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার এবং ডাকাতির সাথে জড়িত জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ মোঃ সিরাজুল ইসলাম(৫৫) সহ ৩ জনকে আটক করা হয়। অপর দু’জন পৌর শহরের আড়ৎদার সুমন হোসেন(৪৫) ও ডাকাতির ঘটনায় সরাসরি অংশগ্রহনকারী চোরা কারবারি দলের সদস্য মোংলার কানাইনগর গ্রামের সুমন হাওলাদার(২৫)।
উদ্ধারকৃত মালামাল এর মধ্যে ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরণের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরূত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ রয়েছে। এ ডাকাতির ঘটনায় জাহাজের নাবিকদের সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। কোস্টগার্ড আরও জানায়, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭মাস ধরে সঠিকভাবে বেতন না পাওয়ায় তাদের মধ্যে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। একারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্রুপ ও চোরাকারবারী চক্রের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়। সর্বশেষ ঘটনায় জাহাজের চীফ ইঞ্জিনিয়ারের তত্ত্বাবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এ ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে। এ ঘটনায় জাহাজের মালিক পক্ষ ক্যাপ্টেন সাহিকুল ঘটনাস্থলে আসাও সহযোগিতার অনুরোধ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের সহ হস্তান্তরের আটককৃতদের বুধবার বিকালে মোংলা থানা পুলিশে সোপর্দ করা হয়। কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের কার্যলয় এ দিন দুপুরে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের বোর্ড ও জনসংযোগ কর্মকর্তা উপ-পরিচালক মাকরুজ¥ান মুন্সি, উর্ধতন নিরাপত্তা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ও ডিজি শিপিংয়ের পরিদর্শক রাশেদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।