মোংলা প্রতিনিধি : মোংলা বন্দরের সাত নম্বর জেটিতে বড় জাহাজ ভেড়াতে নাব্যতা ফেরাতে খননের কাজ করার সময় ‘ইমাম বোখারি’ নামের ড্রেজারটি ডুবে গেছে। খনন কাজের সময় কাটার যন্ত্রটি মাটির নিচে ঢুকে পড়লে ড্রেজারটি ডুবে যায়। সোমবার (৮ মে) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে রয়েছেন- চিফ হাইড্রোগ্রাফার লেফটেনেন্ট কমান্ডার ওবায়াদুর রহমান, মেরিন ও যান্ত্রিক বিভাগের প্রকৌশলী অনুপ চক্রবর্তী ও হারবার বিভাগের পাইলট শফিউল আজম।
সহকারী হারবার মাস্টার (অপারেশন) আমিনুর রহমান এই তথ্য জানিয়ে বলেন, বন্দরের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে এটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, দুর্ঘটনা ঘটলেও জেটিতে অন্য জাহাজ ভিড়তে সমস্যা হচ্ছে না। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের অবহেলা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্দরের নিজস্ব লোকবলের অভাবে ড্রেজারটি ভাড়ায় চালানো হচ্ছে। লোকবলের সংকট কেটে গেলে ড্রেজারটি বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পরিচালনা করা হবে।
এদিকে বন্দরের নিজস্ব ড্রেজারটি চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়ে জেটিতে খনন কাজ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘এ জেড ড্রেজার লিমিটেড কোম্পানি’। টানা চার বছর ধরে খনন কাজের পাশাপাশি ড্রেজারটি রক্ষণাবেক্ষণও করছে তারা। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপক শুভ বলেন, বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে মাটি খননের সময় কাটার যন্ত্রটি মাটির নিচে ঢুকে যায়। পরে জোয়ারের টানে ড্রেজারটি উল্টে ডুবে যায়। তবে এ সময় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ড্রেজারটি উদ্ধারে কাজ চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলেন, ড্রেজারটি যারা চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় নিয়েছে, দুর্ঘটনায় তাদের অবহেলা ছিল। খননের সময় সেখানে মাস্টার-চালক ছিলেন না। এ ছাড়া অন্য স্টাফরাও ঘুমিয়ে ছিলেন। তারা সচেতন থাকলে দুর্ঘটনা হতো না। এখন জেটিতে জাহাজ ঝুঁকি নিয়ে ভিড়তে হবে।
বন্দরের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, ড্রেজারটি ২০১৩ সালের জুন মাসে ভারত থেকে ২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় কেনা হয়। আরেকটি ড্রেজার ২০১৬ সালের জুন মাসে সরকারি অর্থায়নের ২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় নেদারল্যান্ডস থেকে কেনা হয়। এরপর বন্দর জেটিতে বাণিজ্যিক জাহাজ আসা-যাওয়া নিশ্চিতসহ নাব্যতা ফেরাতে খনন কাজে সংযুক্ত করা হয় ড্রেজার দুটি। শুরুতে ড্রেজারগুলো পরিচালনা ও খনন কাজে বন্দরের নিজস্ব কর্মচারীরা দায়িত্বে থাকলেও পরে দক্ষ জনবল সংকটের কারণে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় হস্তান্তর করা হয়।