
জন্মভূমি ডেস্ক : বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকুলীয় এলাকায় ৫ দিন যাবত বৈরী আবহাওয়া আর টানা বর্ষনে তলীয়ে গেছে রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ী ও মাছের ঘের। পানি বন্দি হয়ে পরেছে মোংলা শহর ও গ্রামাঞ্চলের মানুষ। তলীয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের মেইন গেট ও মেইন সড়ক। পানিতে একাকার হয়েছে প্রায় সহ¯্রাধিক বেশী চিংড়ী ঘের ও পুকুর। সরকারের কাছে সহায়তা চেয়ে আবেদন করা হবে বলে জানালের উপজেলা প্রশাসন।
দক্ষিনাঞ্চলের রপ্তানী যোগ্য একটি বড় শিল্প হলো চিংড়ি শিল্প। মোংলাসহ এর আশপাশের বেশ কয়েকটি এলাকার চাষকৃত বাগদা ও গলদা চিংড়ী এ দেশ থেকে বিদেশে রপ্তানী করে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে সরকার। আর এ শিল্পটি এখন ধ্বংসের দারপ্রান্তে পৌছেছে। একদিকে পোনা সংকট, ভাইরাস জনিত রোগ, লবনাক্ততা বৃদ্ধি ও তাপদাহ। অন্যদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনাবৃষ্টি আর অতি বৃষ্টির ফলে কোন দিকেই কাটিয়ে উঠতে পারছে না এখানকার ঘের মালিক ও মৎস্য চাষিরা।
সম্প্রতি বঙ্গোপসাগরে মৌশুমী বায়ুর প্রভাবে দুর্যোগর্পূণ আবহাওয়া বিরাজ করছে। ফলে নদীর পানি বৃদ্ধি ও টানা ৫দিন যাবত অতি বৃষ্টিতে সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদীর তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট, বন্দরের মেইন গেট ও বাড়ি ঘর, ভেঙ্গেছে গাছপালাও। তলিয়েছে ১২৭৪ হেক্টরের জমির প্রায় ৭২৮টি চিংড়ী ঘের। ধার দেনা করে তৈরী করা ঘের থেকে ভেসে গেছে কয়েকশ মন বাগদা চিংড়ী, গলদা ও সাদা মাছ। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির মুখে পড়ছে মোংলা উপজেলার মৎস্য চাষি ও ঘের মালিকরা।
মোংলা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জাহিদুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দিন থেকে সোমবার সারা রাত মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে মোংলাসহ সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় এলাকায়। এতে বেশী ক্ষতি হয়েছে এ এলাকার মৎস্য চাষিদের। ভেসে গেছে বাগদ, গলদা ও বিভিন্ন প্রজাতির মাছ সহ তাদের সংরক্ষিত মাছের ঘেরের ঘেরা-বেড়া। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখিন বলে জানায় তিনি। তবে ঘের মালিক ও মৎস্য খামারিদের সহয়তার জন্য তালিকা তৈরী করা হচ্ছে, সহায়তা পেলে কিছুটা হলেও উঠে দাড়াতে পারবে মৎস্য চাষিরা বলে জানায় মৎস্য কর্মকর্তা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপংকর দাশ বলেন, ঘর বাড়ির তেমন কোন ক্ষতি না হলেও টানা বর্ষনে বেশী ক্ষতি হয়েছে ঘের মালিক ও মৎস্য চাষিদের। এ এলাকায় টেকসই ভেড়ীবাধ, পৌর শহরে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা আর সরকারী সহায়তার জন্য দ্রæত তালিকা তৈরী করা হচ্ছে, মৎস্য বিভাগসহ পাঠানো হবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে সরকারের সাথে সাথে নিজেদেরও সচেতন হবে, কালন ড্রেনেজ ব্যবস্থা যতটুকু আছে তার সঠিক ব্যাবহার করতে পারলে কিছুটা হলেও জলাবদ্ধতা থেকে বেচে থাকা যায় বলে নগরবাসী প্রতি আহবান উপজেলা এ কর্মকর্তার।
মোংলা পৌরসভার শহর এলাকাসহ উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নের নদীর পাশে টেকসই ভেরীবাধ আর পৌর শহরে ড্রেনেজ ব্যাবস্থা সঠিক থাকলে বছরে ৫ থেকে ৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদাঁ, গলঁদা ও ১৫ থেকে ২০ হাজার মেট্রিক টন সাদা মাছ চাষ করা সম্ভব হয় এ অঞ্চলে।