মোংলা : মোংলায় শুরু হয়েছে হযরত পীর মেছের শাহ (রঃ) এর মাজারে বাৎসরিক ওরস ও মেলা। শনিবার রাতে উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের চাঁদপাই এলাকায় পীর মেছের শাহ’র মাজার চত্বরে এ ওরস ও মেলা উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপংকর দাশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও চাঁদপাই মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি এবং চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান মোল্লা মোঃ তারিকুল ইসলাম। পীর মেছের শাহ’র মাজার শরীফ চাঁদপাই গ্রামে হওয়াতে বাৎসরিক এ ওরস ও মেলা চাঁদপাই’র মেলা নামে পরিচিত। সাড়ে ৪শ বছর ধরে চলে আসছে এ মেলা। চাঁদপাই ইউপি চেয়ারম্যান ও মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি মোল্লা মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, প্রতিবছর ফাল্গুন মাসের চাঁদের ৫ম দিনে এ ওরস ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। পূর্ব থেকে কোন ধরণের প্রচার প্রচারণা ছাড়াই দেশের বিভিন্নস্থানসহ প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও নির্দিষ্ট এই সময়ে চাঁদপাই পীর মেছের শাহ’র মাজারে এসে জড়ো হন হাজার হাজার ভক্তরা। ভক্তদের আগমনে উৎসবমুখর হয়ে উঠে পুরো চাঁদপাই গ্রাম। ভক্তরা পীর মেছের শাহ’র স্মরণে ওরস করে থাকেন। এ ওরসকে ঘিরে মাজারের চারপাশে বসে শতশত রকমারী পণ্যের দোকানপাট। এবারও ওরসকে ঘিরে মাজার চত্বরে বসেছে প্রায় ৫শ দোকান। বসেছে শিশুদের জন্য নাগরদোলা, নৌকার দোলনা ও ট্রেন। দোকানের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ ঐতিহ্য মাটির খেলনা সামগ্রী, মিষ্টি, পান, কসমেটিক, ফার্নিচার, হস্ত ও কুঠির শিল্পের রকমারী পণ্য। ঘর গৃহস্থালির চাহিদার প্রয়োজনে ও শিশুদের জন্য সকল ধরণের পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানীরা। মেলায় আগতদের সকল পণ্যের চাহিদা পূরণ করছেন দোকানীরা। শনিবার রাতে উদ্বোধন হওয়া এ মেলা চলবে ৫দিন ধরে। তবে মেলা বসতে ও ভাঙ্গতে সময় গড়িয়ে যায় ৭দিনে। এ মেলায় শুধু স্থানীয়ই নয়, আশপাশ উপজেলাসহ দেশ-বিদেশ থেকে আগত লাখো মানুষের সমাগম ঘটে থাকে। মেলার আয়োজক তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় সাড়ে ৪শ বছর ধরে হযরত পীর মেছের শাহ (রঃ) এর মাজার এ ওরস ও মেলা বসে আসছে। বাগেরহাটের হযরত পীর খানজাহান আলীর সমসময়ে মোংলার সুন্দরবন এলাকায় ধর্ম প্রচারে আসেন হযরত পীর মেছের শাহ। ওই আমলে সুন্দরবন কেটে বসতি গড়ে এ এলাকায় ধর্ম প্রচার করেন তিনি। এ এলাকার অতি প্রাচীন মেলা এটি। মাজারের প্রধান খাদেম মোঃ আয়েন উদ্দিন খান বলেন, মানত ও মনের বাসনা পূরণের আশায় বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবছর ভক্তরা ছুটে আসেন পীর মেছের শাহ’র এ মাজারে। এখানে ভক্তরা সম্মিলিতভাবে ওরস করে থাকেন। মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, মেলায় যাতে কোন ধরণের বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য নিয়মিত পুলিশের টহল টিম থাকছে মাজার ও মেলাস্থলে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এবারই প্রথম মেলা এলাকাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। সুতরাং মেলায় কেউ কোন কিছু করে কোনভাবেই এড়িয়ে যেতে পারবেনা।