শেখ সিরাজউদ্দৌলা লিংকন, কয়রা : ঘূর্ণিঝড় মোখার আতঙ্ক থাকলে ও এখনো তেমন প্রভাব পড়েনি উপকূলীয় এলাকা খুলনার কয়রা অঞ্চলে। তবে মোখা আক্রমণের আগেই নিরাপদে কূলে ফিরতে শুরু করেছে গভীর সুন্দরবনে থাকা মাছ ধরা জেলেরা। শনিবার কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি, কয়রা সদর, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায় গভীর সুন্দরবনে অবস্থানরত অনেক জেলে এরই মধ্যে নিরাপদে উপকূলে চলে এসেছে। একাধিক জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সুন্দরবনের পাশেই বঙ্গোপসাগর প্রচন্ড উত্তাল হওয়ার কারণে কূলে ফিরে এসেছেন তারা।
নৌকা নিয়ে তীরে ফিরে এসে নিজেদের মালপত্র গোছানোর সময় দক্ষিণ বেদকাশি জোড়শিং বাজার সংলগ্ন এলাকার জেলে রুহুল কুদ্দুস বলেন, পাশ পারমিট নিয়ে দুই সপ্তাহ আগে সুন্দরবনে গেছিলাম গতকাল বিকেল থেকে হঠাৎ সুন্দরবনে ভিতরে নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে, ঢেউও তুলনা মুলক আগের থেকে বেশি হওয়া ও আবহাওয়া খারাপ হবে সংবাদ পেয়ে আমরা তীরের দিকে ফিরতে শুরু করি। আজ সকালে তীরে পৌঁছেছি। আরও অনেক জেলে রয়েছে যারা আসছে। মহেশ্বরীপুর তেতুল তলার চর এলাকার জেলে মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিনের ন্যায় গত কালও আমরা সুন্দরবনের গহীনে জাল পেতে মাছ ধরি। হঠাৎ চোখে পড়ে অন্য দিনের তুলনায় নদীতে জোয়ারের পানি বেশি উঠছে। আমরা গুরুত্ব না দিয়ে ভোর রাতেও দেখি আরও বেশি পানির চাপ ও ঢেউ তুলনা মুলক বেশি সাথে সাথে বাতাস ও বন্ধ দেখি ঝাপশা গরম লাগতে থাকে আমাদের কাছে অস্বাভাবিক মনে হওয়ায় আমরা দ্রুত জাল দড়ি গুছিয়ে তীরে ফিরে আসি।
সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ ফরেস্ট স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শ্যামা প্রসাদ রায় বলেন, বর্তমানে সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ, কোবাদক, বানিয়াখালী, নলিয়ান ফরেস্ট স্টেশন থেকে অনুমতি নিয়ে মাছ ধরতে যাওয়া তিন শতাধিক নৌকা তীরে ফিরেছে। আবহাওয়া খারাপ হলে নিকটবর্তী স্থানে তারা চলে আসে। তবে যারা এখন তীরে আসেনি তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। যাদের পাওয়া যাচ্ছে তাদের দ্রুত তীরে ফিরে আসতে বলা হচ্ছে।’ এখনো গহিন সুন্দরবনে অনেক নৌকা আছে। সেসব নৌকার জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে। বন বিভাগও তাঁদের নিরাপদ স্থানে থাকতে বলেছে। খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডাঃ আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার জন্য বন বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে তাঁদের প্রত্যেককে নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ াড়া পর্যাপ্ত নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারসহ শুকনো খাবার মজুতের জন্য প্রত্যেক টহল ফাঁড়ি ও স্টেশন অফিসকে বলা হয়েছে। কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মমিনুর রহমান বলেন, জেলেরা নিরাপদে ফিরতে শুরু করেছে। আমরা সুন্দরবনে অবস্থানরত জেলেরা যেন নিরাপদে তীরে ফিরে আসেন, সে জন্য বন বিভাগ, মৎস্যজীবী সমিতি ও জেলেদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি।