জন্মভূমি ডেস্ক : বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মধ্যে সোমবার (১০ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকে বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হওয়া এবং অভ্যন্তরীণ মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হতে পারে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এমন তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত বছরের ৪ এপ্রিল দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তিতে ওয়াশিংটনে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছিল।
ওয়াশিংটনে এবারের আলোচনায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হবে এমন ইঙ্গিত দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন গত বুধবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমেরিকা চায় বাংলাদেশে যেন স্বচ্ছ, সুন্দর ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন হয়। আওয়ামী লীগের নীতিও তাই। আমরা নির্বাচনের মাধ্যমেই ক্ষমতায় এসেছি। আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছি। ৩০ লাখ লোক জীবন দিয়েছেন গণতন্ত্র সমুন্নত করার জন্যই।’ এর আগে গত জানুয়ারিতে দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সেলর ডেরেক শোলের ঢাকা সফরের সময়ও গণতন্ত্র, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশ যাতে অঙ্গীকার পূরণ করে, সে কথা বলে গেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র যাওয়ার আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নানা বিষয়ের মধ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগ বাড়ানো এবং অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক যুক্ততার বিষয়ে বাংলাদেশের প্রত্যাশার কথা জানানো হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে নির্বাচন, মানবাধিকার ও সুশাসনের পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম বন্ধ করার প্রসঙ্গ আলোচনায় আসতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো যাতে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে এবং মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গ আলোচনায় আসতে পারে বলে মনে করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো।
বিশেষ করে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা এবং প্রস্তাবিত উপাত্ত সুরক্ষা আইনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়গুলোও আসতে পারে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি র্যাবের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার, জিএসপি পুনর্বহাল, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা ও প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারকে চাপ প্রয়োগ, বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত আনার মতো বিষয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় তুলে ধরা হবে।