
মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভূমিহীন পরিবারের জন্য ঘষিয়াখালী আশ্রয়ণ প্রকল্পে ১৩০টি ঘর নির্মান করা হয়েছে। এরই মধ্যে ৫০টি ঘরের বাসিন্দারা নানা সমস্যায় জীবন জীবিকার তাগিদে আশ্রয়ণ ছেড়ে শহরমূখী হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, বসত বাড়ি থাকা সত্ত্বেও টাকার বিনিময় ঘর পেয়েছে,তারাই আবার ঘরগুলো হাত বদল করেছে। সুপিয় পানি, স্যানিটেশন সুবিধাসহ নানা সমস্যা রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, পানগুছি নদীর তীরবর্তী বহরবুনিয়া ইউনিয়নের ঘষিয়াখালী গ্রামে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প ২ এর মাধ্যমে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল ১ম, ২য় ধাপে ২শতক জায়গাসহ ১৩০টি সেমি পাকা ঘর ভূমিহীনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে এ আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের মাথা গোজার ঠাই হলেও নানাবিধ সমস্যায় দিশেহারা হয়ে কোন মতে দিন কাটাচ্ছে। কেউ আবার ঘর ছেড়ে শহরে পাড়ি দিয়েছে। এ আশ্রয়ণ প্রকল্পটি নদীর তীরবর্তী হওয়ায় বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশনের অভাব লেগেই আছে। সৌর চালিত পি,এস,এফ টি দীর্ঘদিন যাবত অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ করলেও শুকনো মৌসুম আসতেই তা ফুরিয়ে যায়। নদীর লোনা পানিই একমাত্র ভরসা হয়ে দাড়ায়। নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ না থাকায় অমাবস্যা-পূর্ণিমার জোঁয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় প্রকল্পটি।আশ্রয়ণের প্রতিটি ঘরের মেঝেতে জোঁয়ারের পানি উঠে যায়।
এদিকে বৃদ্ধ আলকাজ উদ্দিন (৮০) বলেন, আমার কোন পৈত্তিক ভিটা, মাটি নাই, আমি ৩০ বছর ধরে এই খানে মাটি কামড়িয়ে আছি। আমি ভূমিহীন হয়েও কোন ঘর পাইনি, যাদের সহ, সম্পত্তি আছে তারাই আবার জায়গা ঘর পাইছে। মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সূর্যবানু আক্ষেপ করে বলেন, ১৯৭১ সালে পিতাসহ পরিবারের ১৪ জনকে হারালাম, সহায় সম্পত্তি হারালাম। এখন ৭ বছরের ছেলেকে নিয়ে আশ্রয়ণের জমিতে কলা পাতায় পানি ছিটিয়ে চিড়া খেয়ে দিন যাপন করছি। অথচ সুবিধাভোগীদের তালিকায় আমি নাই। যাদের জাগা জমি আছে তারাও ঘর পাইছে। এ দুঃখের কথা কাকে বলবো।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম.তারেক সুলতান বলেন, এ উপজেলায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া ৪র্থ পর্যায় ৩৮৭টি ঘর বিতরণ করা হয়েছে। ২য় ধাপে ৭৯টি ঘরের কাজ চলছে। আরো ৫০টি ঘর নির্মাণ করা হবে। আশ্রয়ণে বন্ধ ঘরগুলোর বিষয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। সুবিধাভোগীরা কোন ঘর বিক্রয় বা হাত বদল করতে পারবে না। যদি এমন ঘটনা ঘটে তদন্ত করে ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।