এনায়েত করিম রাজিব, মোরেলগঞ্জ : অনলাইন মোবাইল গেমিংয়ে আসক্ত হয়ে পড়েছে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের শহর ও গ্রামঞ্চলের শিশু-কিশোরেরা। পড়াশোনা বাদ দিয়ে দিন-রাতের সিংহভাগ সময়ই তারা ব্যয় করছে গেমিংয়ের পেছনে। অনেকে আবার গেমের টাকা যোগাড় করতে অল্প বয়সেই পড়াশোনা বাদ দিয়ে জড়িয়ে পড়েছে চুরি-ছিনতাইসহ নাশকতার মতো ভয়ানক অপরাধে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শহর থেকে গ্রামের প্রায় সবখানেই কিশোরদের দলবেঁধে মোবাইলে ঝুঁকে থাকার দৃশ্য। যে বয়সে মাঠে খেলাধুলা করার কথা, সেখানে তারা ডুবেছে মোবাইল গেমের নেশায়। বাবা-মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় কাটছে তাদের গেইমের পেছনে। কেউ কেউ খরচ করছে টাকাও। এসব টাকা জোগাড় করতে অনেকে পড়াশোনা ছেড়ে কাজে নেমে পড়েছে। কেউ দামি মোবাইল কেনার আশায় পাড়ি জমিয়েছে রাজধানীর ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে। মোবাইল গেমিংয়ে আসক্ত একাধিক তরুণ জানায়, গেমিংয়ের আপডেট ভার্সন ইন্সটলেশনের জন্য তারা মোটা অঙ্কের অর্থ ব্যয় করে থাকে। ‘টপ-আপ’ করার নামে ধাপে ধাপে অর্থ ব্যয় করে কিনতে হয় গেমসের একেকটি ফিচার সুবিধা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা এই গেম খেলার গ্রুপ তৈরি করি। সারাদিন এই গেম খেলে সময় পার করি।’ এই গেম খেলার জন্য সর্বনিম্ন ২০ হাজার টাকা দামের ফোনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। যার ফোন যত দামি, তার ফোনে তত ভালো গেম খেলা যায়।তবে আমরা এই গেমে আসক্ত হয়ে অনেক টাকা ব্যায় করেছি।
উঠতি বয়সীদের এমন মোবাইল আসক্ততে শঙ্কা প্রকাশ করে অভিভাবকরা জানান, বাধা দিলেও তা খুব একটা কাজে আসছে না। সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন। উপজেলার পাড়া-মহল্লায় এ দৃশ্য নিত্যদিনের। দিন যতই যাচ্ছে, গেমের প্রতি ততই মজে যাচ্ছে কিশোর ও যুবসমাজ। আগামী প্রজন্মকে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়া থেকে রক্ষায় প্রশাসনের পদক্ষেপের দাবি তাদের। বেশিরভাগ মোবাইল গেম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ হলেও, ভিপিএনের মাধ্যমে তাতে যুক্ত থাকে কিশোররা।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন অভিবাবকের নজরহীনতার কারনে বাড়ছে গেমিংয়ের আসক্তের হার। কিশোরেরা জড়াচ্ছেন নানা অপরাধে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শামসুদ্দিন জানান, এ বিষয়ে আমাদের পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সন্ধ্যার পরে বিনা প্রয়োজনে ছেলে-মেয়েরা ঘরের বাইরে যেন না থাকে এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।