
মিজানুর রহমান, মোরেলগঞ্জ : বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে টানা পাঁচ দিনের প্রবল বর্ষণ ও জোয়ারের পানিতে ২৩শ’ হেক্টর ফসলী জমি পানির নিচে নিমজ্জিত। ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকেরা। বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ১৫ শ’ মৎস্য ঘের তলিয়ে যাওয়ার আশংকায় ঘের মালিকেরা। বর্ষাকালীন ও আগাম সবজি চাষেরও ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার ১৬ ইউনিয়নসহ পৌরসভায় টানা ৫ দিনের প্রবল বর্ষণে বারইখালী, হোগলাবুনিয়া, নিশানবাড়িয়া, পঞ্চকরন ইউনিয়নসহ নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো কালিকাবাড়ি গুয়াবাড়িয়া, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, বদনি ভাঙ্গা, পঞ্চকরনের খারইখালী কুমারিয়া জোলা, সদর ইউনিয়নে গাবতলা, কাঠালতলা, ভাইজোড়া, বহরবুনিয়া ইউনিয়নের উত্তরফুলহতা, বারইখালীর উত্তর সুতালড়ী, কাশ্মীর, মধ্য বারইখালী, বলই বুনিয়ার শ্রেনিখালি গ্রামসহ ৩০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। সদর ইউনিয়নের পূর্ব ভাইজোড়া গ্রামের সরকারি পুকুর সংলগ্ন দেড় কিলোমিটার কাচা রাস্তা ভেঙে গিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে।
ফসলী মাঠে ৩/৪ ফুট পানি জমে থাকায় পানির নিচে দেশী আমন ১৯শ’ হেক্টর ও উফসী আমন ৩৭০ হেক্টর মোট ২৩শ’ ৩০ হেক্টর পানির নিচে নিমজ্জিত। আমন ও উপসী বীজতালা তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করছে কৃষকেরা। বর্ষাকালীন ও আগাম জাতের সবজির ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। নিশান বাড়িয়ার কৃষকেরা বড় শসা চাষে প্রতিবছর কয়েক কোটি টাকা আয় করে। সেখানে ভারি বর্ষণের ফলে শসা গাছগুলো দুমড়ে মুচড়ে পড়েছে। ইতোমধ্যে গাছগুলোতে পঁচন ধরেছে। কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির আশংকা করেছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আকাশ বৈরাগী জানান, কয়েকদিনের প্রবল বর্ষণে বিভিন্ন ইউনিয়নে নিম্নাঞ্চলের প্লাবিত হয়েছে, আমন বীজতলার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তবে কৃষকদেরকে মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও পরিমাপ করা যায়নি। আরও ২/৩ দিন এরকম বৃষ্টি থাকলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা মৎস্য অফিসার বিনয় কুমার রায় বলেন, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বহরবুনিয়া, জিউধরা ও পঞ্চকরনের অধিকাংশ মৎস্য ঘেরগুলোতে পানি বৃদ্ধি হয়ে পড়েছে। এ রকম আবহাওয়া থাকলে প্রায় ১৫ শ’ ঘের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।