জন্মভূমি রিপোর্ট
খুলনার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক, সামাজিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অবিলম্বে অবৈধ দখলদারদের কবল হতে ময়ূর নদকে উদ্ধার এবং দুষণমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন। ময়ূর নদের পরে নির্মিত গল্লামারী ব্রিজের উপর অনুষ্ঠিত এক মানব বন্ধনে তারা এ দাবির কথা ব্যক্ত করেন। দাবি পূরণ না হলে আপামর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসী নামের একটি নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে শনিবার বেলা ১১ টা থেকে প্রায় দেড় ঘন্টাব্যাপী এ মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতারা সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন।
বক্তারা বলেন, ৫শ’ ১২ কিলোমিটারের খর¯্রােতা ময়ূর নদে একসময় পাল তোলা নৌকা চলত। মানুষ গোসল করত। কাপড় কাচতো। জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করত। নর্দমা, বাজার ও গৃহস্থলির বর্জে এখন পানি পঁচে গেছে। দুর্গন্ধে পরিবেশ বিষিয়ে উঠেছে। নাব্যতা হারিয়েছে। ১০ গেটের মাধ্যমে জোয়ার-ভাটার প্রবাহ বন্ধ করে নদটিকে এর আগে মৃত ঘোষণা করা হয়েছে। এটি শহরের সমস্ত ড্রেনের আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। আলাদা পাইপ লাইনের মাধ্যমে ড্রেনেজ ও স্যুয়ারেজ লাইন তৈরি করে নগরীর নর্দমার পানি ভৈরব নদে ফেলতে হবে।
বক্তারা বলেন, অবৈধ দখলদাররা ময়ূর নদকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে। ভ‚মি দস্যুরা কোনো দলের না। ওরা জনগণের দুশমন। তাদের মোকাবেলা করার জন্য দল মত নির্বিশেষে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই-সংগ্রামে সোচ্চার হতে হবে। ময়ূর নদকে খুলনা শহরের প্রাণ উল্লেখ করে তারা বলেন, এটি না বাঁচলে নগরী বর্ষাকালে জলাবদ্ধতায় ডুবে যাবে। এর আগে নদীটি কয়েকবার সংস্কার হয়েছে। উন্নয়নের নামে কোটি-কোটি টাকা খরচ হয়েছে। বক্তারা নদের উপর নির্মিত সেতুর নির্মাণ কাজের সমালোচনা করে বলেন, এর একটি উচু, আরেকটি নিচু। এটা জ্ঞানপাপীদের কাজ। অপরিকল্পিত ব্রিজটির নির্মাণ কাজের সাথে যারা যুক্ত ছিল তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
সেতুটির উপর দিয়ে প্রতিদিন খুলনা, যশোর ও সাতক্ষীরার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মানুষ যাতায়াত করেন। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাঁনের ছাত্র-ছাত্রীসহ নানা শেণি পেশার মানুষ চলাচল করেন। ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদী পার হওয়ার সময় দুর্গন্ধে যেমন পেটের নাড়ী বের হয়ে আসতে চায়, ময়ূর নদেরও সেই অবস্থা হয়েছে। এটাকে পরিষ্কার করা হোক। দুই পাশ দিয়ে চলাচলের রাস্তা করা হোক।
বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসী’র সহ-সভাপতি ডা. সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম মাহবুবুর রহমান খোকনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন, খুলনা মহানগর বিএনপি’র আহবায়ক এডভোকেট শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব মো. শফিকুল আলম তুহিন, সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ¦ আব্দুল গফ্ফার বিশ্বাস, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র মহানগর সভাপতি মিজানুর রহমান বাবু, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নিত্যনন্দ ঢালী, জেলা সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল হান্নান, ওয়ার্কাস পার্টি’র খুলনা মহানগর সভাপতি মফিদুল ইসলাম, খুলনা নাগরিক সমাজের আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট আ ফ ম মহসীন, বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা জেলা সমন্বয়ক এডভোকেট মোমিনুল ইসলাম, পরিবেশ সুরক্ষার উপকুলীয় জোটের আহবায়ক এডভোকেট এস এম শাহনেওয়াজ আলী, শ্রমিক নেতা মো. দেলোয়ার হোসেন দিলু, গেøাবাল খুলনার আহবায়ক শাহ্ মামনুর রহমান তুহিন, খুলনা পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, যুব ইউনিয়ন মহানগর সভাপতি আফজাল হোসেন রাজু, কেডিএফ সভাপতি আব্দুস সালাম আকর শিমুল, আলোর মিছিল’র সভাপতি তারেক শেখ, সমাজ উন্নয়ন কমিটির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন, সোনালী দিন প্রতিবন্ধি সংস্থার সভানেত্রী ইশরাত আরা হিরা, নাগরিক নেতা মো. আব্দুল হালিম, মোটরসাইকেল গ্যারেজ মালিক সমিতির নেতা মো. আইনুল হক, বাংলাদেশ পিপলস্ পার্টি’র খুলনা মহানগর সভাপতি শাকিল আহমেদ রাজা, খালিশপুর থানা যুবলীগ নেতা মো. রিপন ও মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, বৃহত্তর আমরা খুলনাবাসীর সহ-সভাপতি কাউন্সিলর মাজেদা খাতুন, সহ-সভাপতি ডা. আব্দুস সালাম ও শেখ হেদায়েত হোসেন হেদু, যুগ্ম-সম্পাদক মোহাম্মদ আলী ও এম এ জলিল, দপ্তর সম্পাদক কামরুল ইসলাম ভুট্টো, ক্বারী শরীফ মিজানুর রহমান, মো. শহিদুল ইসলাম, মো. রবিউল ইসলাম সবুজ, নারী নেত্রী কাওসারী জাহান মঞ্জু, শাহানা পারভীনস্বপ্না, লাকী আক্তার, সোমা আক্তার, সাথী আক্তার প্রমুখ।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত