
বেকার যুবকদের কোটি টাকা লোপাটে মামলা
যশোর অফিস : আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল সরবরাহের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান অর্থ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানীর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বহুল বিতর্কিত কাজল বিশ^াসের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মামলা হয়েছে। যশোর শহরের গাড়িখানা রোডের ব্যবসায়ি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ফাতেমা এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত যশোর সদরে এই মামলা দায়ের করেন। মামলার একমাত্র আসামি কাজল বিশ^াস যশোরের মনিরামপুর উপজেলার বাকোশপোল গ্রামের মৃত সন্তোষ বিশ^াসের পুত্র।
আদালত সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ২৬ জুন ব্যবসায়িক সূত্র ধরে আসামী কাজল বিশ^াস দুই মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের কথা বলে বাদীর নিকট থেকে ১৫ লাখ টাকা ধার নেয়। যথাসময়ে আসামী কাজল বিশ^াস বাদীর টাকা পরিশোধ না করে নানা ছল-চাতুরী করেন। অবশেষে বাধ্য হয়ে প্রতিকার পেতে আনোয়ার হোসেন আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।
এদিকে অর্থ প্রাইভেট লিমিটেড সম্পর্কে অনুসন্ধান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজল বিশ^াসের বিরুদ্ধে যশোর স্বাস্থ্য বিভাগে আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল সরবরাহের নামে এতিম, প্রতিবন্ধি ও বেকার যুবকদের ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগ করেছেন ভূক্তভোগিরা। যশোর স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্ত কেশবপুর, অভয়নগর ও চৌগাছা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন মেয়াদে আউট সোসিং পদ্ধতিতে জনবল সরবরাহ করার নাম করে কাজল বিশ^াস ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়েছেন ৩৩ জন বেকার যুবককে। নিয়োগপত্র পাওয়া যুবকরা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে গেলে কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দেন এবং ওই নিয়োগপত্র ভুয়া বলে জানান। কেশবপুর উপজেলার কাস্তা গ্রামের ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেছেন, যশোর শহরের প্যারিস রোডের কিতাব ঘরের মালিক আজিজ উল্লার মাধ্যমে কাজল বিশ^াসকে আমি ৩ লাখ, একই গ্রামের আব্দুল্লাহ আল-মামুন ৩ লাখ, রাকিব হাসান ৩ লাখ ও সাতক্ষীরা তালা উপজেলার অভয়তলা গ্রামের আবু নাঈম ৩ লাখ টাকাসহ সর্বমোট চারজন ১২ লাখ টাকা দিয়ে কোনো চাকরি পাইনি। আমাদেরকে অর্থ প্রাইভেট লিমিটেড এর মালিক কাজল বিশ^াস যশোরের বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাকরিী দেয়ার নামে যে নিয়োগপত্র দিয়েছেন তা ভুয়া বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আমরা অত্যান্ত গরীব মানুষ।
যশোর সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ^াস জানান আমার জানামতে, আউট সোর্সিং পদ্ধতিতে জনবল নিয়োগের জন্য কেশবপুর, অভয়নগর ও চৌগাছা উপজেলায় এখনও পর্যন্ত কোনো সার্কুলার দেয়া হয়নি। যদি কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান জনবল সরবরাহের নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ বাণিজ্য করে থাকেন তাহলে অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এব্যাপারে অভিযুক্ত কাজল বিশ^াসের সাথে একাধিকবার ০১৭১১-৮৫৩১৫৩ নম্বর মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তিনি রিসিভ করেননি। ভুক্তভোগিরা এব্যপারে যশোর জেলা প্রশাসকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।