
যশোর অফিস : যশোরে ইজিবাইক চালক বুলবুলের ইজিবাইক ছিনতাই করতেই হত্যা করা হয়েছে বুলবুলকে। মরদেহ উদ্ধারের ১২ ঘন্টার মধ্যে ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও এতে জড়িত পাঁচজনকে আটক করেছে ডিবি পুলিশ। তবে, তদন্তের স্বার্থে আসামিদের নাম প্রকাশ করেননি তারা। এছাড়া এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম। আটককৃতদের বাড়ি শহরের শংকরপুর এলাকায়। এ দিকে এ ঘটনায় নিহত বুলবুলের ছোটভাই ফরহাদ কোতোয়ালি থানায় আসামি অজ্ঞাত করে মামলা করেছেন।
ডিবি পুলিশের একটি সূত্র জানায়, ডিবির এলআইসি টিম মরদেহ উদ্ধারের পরই রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে পাঁচ আসামিকে আটক করেন তারা। বিকেলে ঘটনাস্থল পুলেরহাটে ওই পাঁচজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওই পাঁচ আসামিই কিভাবে বুলবুলকে হত্যা করা হয়েছে তা প্রকাশ করেন।
এসময় আসামিরা জানান, তারা গত ৮ জুলাই মণিহার এলাকা থেকে বুলবুলের ইজিবাইকটি ভাড়া করেন। পরে বাহাদুরপুর জেসগার্ডেন পার্কের সামনে যান। সেখানে বেশকিছু সময় পার করেন। পরে সেখান থেকে শংকরপুর গোলপাতা মসজিদের সামনে থেকে ঘুমের ওষুধ কেনেন। এরপর তারা যান বালিয়া ভেকুটিয়া মাধঘোপপাড়ায়। সেখানে গিয়ে তারা সেখানকার ভাবির বড়া খান। খেয়ে ইজিবাইকে করে বিমান বন্দরের পাশে যান। সেখানে খান জুস। ওই জুসের মধ্যে আগে থেকে ঘুমের ওষুধ মেশানো ছিলো। ওই জুস খাওয়ার পরপরই অচেতন হয়ে পড়েন বুলবুল। সেখান থেকে তারা সরাসরি কায়েমকোলা হয়ে চলে যান নতুনহাট পাবলিক কলেজের সামনে। সেখানে যাওয়ার পর অচেতন বুলবুলকে শ্বাসরোধে করে হত্যা করে মরদেহ পাটক্ষেতে ফেলে ইজিবাইক নিয়ে চম্পট দেন।
এছাড়া মঙ্গলবার অভিযানের অংশ হিসেবে ডিবির এলআইসি টিম ওই পাঁচ আসামির সাথে নিয়ে বালিয়া ভেকুটিয়ায় ভাবির বড়ার দোকানে ও এয়ারপোর্ট এলাকায় যান। সেখানে গিয়ে আসামিদের দেয়া বক্তব্যের সত্যতা পান। এছাড়া সেসব স্থান থেকে বেশ কিছু আলামত জব্দ করা হয়। ওই দিন সন্ধ্যার পর যশোর শহরের শংকরপুর দাইয়ান ড্রাগ হাউজে অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ঘুমের ওষুধ জব্দ করেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে ভিকটিমের ইজিবাইক উদ্ধার ও এ ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের ধরতে সাতক্ষীরা জেলায় অভিযানে যান।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকেলে নতুনহাট এলাকার একটি পাটক্ষেত থেকে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারের পর বুলবুলকে তার পরিবারের লোকজন শনাক্ত করেন। পরিবারের দাবি ৮ জুলাই নিখোঁজ হন রাজারহাট এলাকার বুলবুল।
এ বিষয়ে ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম বলেন, তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বুলবুলের ইজিবাকটি উদ্ধার ও ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের ধরতে তারা অভিযান চালাবেন। তদন্তের সাথে তারা আটকৃতদের নাম গোপন রেখেছেন বলে জানান।