শহিদ জয়, যশোর : যশোর শহরের যানজটের নাকাল থেকে বেশ স্বস্তিতে আছেন যশোর শহরবাসী। কোন বাঁধা বা যানজট ছাড়াই রাস্তা পারাপারে স্বচ্ছতা ফিরে পেয়েছে তারা। একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেতে রাস্তায় আটকে থাকতে হচ্ছে না। খুব সহজভাবে যানবাহন নিয়ে এ প্রান্ত থেকেও প্রান্তে রাস্তা পারাপার হতে দেখা যাচ্ছে পথচারী আরোহীদের। শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে জোরে সোরে যশোর ট্রাফিক পুলিশ ও পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে যশোর ট্রাফিক পুলিশ যশোর শহরের ২০/২২টি স্পট, ও ব্যস্ততম মোট ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সরেজমিনে গিয়ে যানজট মুক্ত এমনই দৃশ্যের দেখা পাওয়া গেছে।
যশোরে ঈদবাজার নিরাপত্তায় পুলিশের পক্ষ থেকে মাঠে নামানো হয়েছে প্রায় সাড়ে সাত শত পুরুষ ও নারী পুলিশ সদস্যদের। একইসাথে শহরের স্পটে যারা দায়িত্ব পালন করবেন সেইসব পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব বন্টন করা হয়েছে। সরজমিনে বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা গেছে যশোর ট্রাফিক পুলিশের টি এস আই জাহিদ হোসেন শহরের সিভিল কোর্ট মোড়ে কড়া রোদে দাড়িয়ে ডিউটি পালন করছেন। তিনি বলেন সিভিল কোর্ট মোড় চতুর্মুখী রাস্তা এ রাস্তা দিয়ে যান চলাচলের সংখ্যা বেশি তাই এখানে দুইয়ের অধিক ব্যক্তিকে নিয়ে ডিউটি করতে হয়। ডিউটি কড়া না করলে অটোরিকশা ও ইজিবাইক শহরের মার্কেটগুলোর সামনের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটবে। জনগণের সেবা দিতে আমরা সবসময় প্রস্তুত বলে তিনি মনে করেন। একই স্থানে ডিউটি পালন করছেন ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল ফারুক হোসেন। ফারুক হোসেন বলেন, সকাল ছয়টা থেকে বেলা ২ টা পর্যন্ত এখানে একইভাবে ডিউটি করতে হয় পরবর্তী দুইটার থেকে আরেকজন এসে রাত দশটা পর্যন্ত ডিউটি করে। এখানে ডিউটি করতে এসে ইজিবাইক এবং অটো রিক্সার চাপ বেশি পোহাতে হয়। কারণ শহর থেকে শহরতলী ও শহরতলীর থেকে শহর দিকে অটোরিকশা ও রিক্সা গুলি এখান থেকে প্রবেশ করে এই জন্য এখানে কড়াকড়ি ডিউটি করতে হয় বলে তিনি জানান। যশোর সদর উপজেলার মন্ডল জাতি গ্রামের পায়ে প্যাটেল চালিত রিকশাচালক আব্দুস সোবাহান জানান, শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা যানজট সৃষ্টি করে অটোরিকশা ও ইজিবাইক। তাদের কারণে আমরা যারা পায়ে প্যাটেল মেরে রিকশা চালাই তারা খুব অসহায়। আমরা বেশি দ্রুত যেতে পারি না দুর্ঘটনার কোন সম্ভাবনা নেই। ইজি বাইক চালক ইসমাইল হোসেন জানান, শহরের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক পুলিশের নিয়ম-কানুন মেনে আমরা ইজিবাইক চালিয়ে থাকি। ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে যেভাবে কাজ করছেন তাও অনেক প্রশংসনীয় আমরা তাদেরকে অনেক সময় সহযোগিতা করে থাকি।সিভিল কোর্ট মোড়ের দায়িত্বে থাকা যশোর পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কমিউনিটি পুলিশের সদস্য জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, জনগণের সেবা দিতে পুলিশ ভাইদের পাশাপাশি পৌরসভার উদ্যোগে এখানে আমিও তাদের সাথে ডিউটি করছি।
এদিকে বাজারের প্রবেশ মুখে পুলিশ সদস্যদের দায়িত্ব দেয়ায় সামনে রমজানের কয়েকটা দিন যানজট আরো নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলে দাবি করেছে যশোর ট্রাফিক বিভাগ। যানজটে নাকাল চিরচেনা যশোর চৌরাস্তা গাড়ি খানা মুজিব সড়ক ও দড়াটানা মোড়ে গত কয়েক দিন যানজটের জটলার দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। মণিহার,পালবাড়ি, উপশহর খাজুরা বাসস্ট্যান্ড, ধর্মতলা, চাঁচড়া চেকপোস্ট গরীবশাহ মোড়,সিভিল কোর্ট মোড় দড়াটানা,যশোর সার্কিট হাউজ রোড, ঈদগা মোড়, কাঠেরপুল কেন্দ্রীয় কারাগার মোড় ,সোনালী ব্যাংক মোড়, চিত্রা মোড়ে যানজট আদদ্বীন হাসপাতাল রোডে যানজট চোখে পড়েনি। এছাড়া পার্কিং না থাকা যেসব প্রতিষ্ঠানের সামনে যানজটের সৃষ্টি হয় জেসটাওয়ার মার্কেট, রওনক চেম্বার মার্কেট, ব্র্যাক ব্যাংক, এবি ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, মুজিব সড়কের বিভিন্ন মার্কেটগুলোসহ একাধিক বাণিজ্যিকপ্রতিষ্ঠান এলাকাতে ঈদ বাজারে তেমন যানজটের দেখায় পাওয়া যায় যাচ্ছে না। ঈদে কেনাকাটা করতে আসা তিন বোন কানিজ ফাতেমা বন্যা ও সানজিদা সওমি অথৈ সাদিয়া শবনম স্বরণী জানান, শহরে কেনাকাটা করতে এসেছি কিন্তু কোন যানজটের মধ্যে পড়েনি কেনাকাটা করতে বেশ স্বাচ্ছন্দ মনে হচ্ছে। শহরে এসব যানজটের নাকাল থেকে মুক্তি পাবার একমাত্র কারণ যশোর ট্রাফিক বিভাগের। যশোর পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের নির্দেশে যশোর ট্রাফিক বিভাগ ১০টি পদক্ষেপ হাতে নিয়ে কাজ করছে। এসব পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে শহরের গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশ পথ গুলোতে চেকপোস্ট বসানো, গুরুত্বপূর্ণ বাজারের প্রবেশ পথ গুলোতে ট্রাফিক ব্যবস্থা ও ব্যারিকেট বসানো, কাগজপত্রহীন যানবাহন আটক করা,স্পট গুলোতে ট্রাফিক পুলিশের সক্রিয় অবস্থান এবং চলমান অভিযান পরিচালনা করা। পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদারের দেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে যশোর সদর ট্রাফিকের ইন্সপেক্টর (শহর ও যান) শুভেন্দু কুমার মুন্সী সাংবাদিকদের জানান পুলিশ সুপার স্যারের নির্দেশনা অনুযায়ী, আমরা পুলিশেরা জনগণের শান্তি স্বস্তি দিতে মাঠে রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে তাদের সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। আশা করি চলাচল কারীরা একটু সচেতন হলে যানজট মুক্ত করতে পারব।তিনি আরো জানান, যশোর ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি পুলিশের কাজে যশোর পৌরসভার স্বেচ্ছাসেবকরা সহযোগিতা করছেন। যশোর ট্রাফিক পুলিশ বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর টি আই মোঃ মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান শুধু ঈদ নয় এভাবে জনগণের চলাচলের জন্য পুলিশ দায়িত্ব পালন করে যাবেন পুলিশের সেবার মান আরো উন্নত করা হবে বলে তিনি জানান।
যশোরে ঈদের বাজারে যানজট থেকে স্বস্তি পাচ্ছেন শহরবাসী
Leave a comment