
যশোর অফিস : যশোরে প্রতারনার মাধ্যমে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ১১ মাস ১৩ দিন পর কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। শহরের পুরাতন কসবা শুভ নিলয়ের বাসিন্দা কবির উদ্দিনের স্ত্রী জাকিয়া সুলতানা (৪৩) চারজনকে আসামি করে ২৩ জুন শুক্রবার মামলা করেন। মামলার আসামিরা হলো ময়মনসিংহ জেলার গোপালপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে সোহেল (২৫) কেরানিগঞ্জ জেলার পূর্বকাঠপট্টি(কালুর বাড়ি) গ্রামের আবুল ব্যাপারির ছেলে জাফর ব্যাপারি কিশোরগঞ্জ জেলার আতর তোপা গ্রামের জংগু ভূঞার ছেলে মিলন মিয়া (৪৯) ও ব্রাক্ষèণ বাড়িয়া জেলার রামপুর গ্রামের (কুতুবের বাড়ি) কুতুব মিয়ার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম (৩৬)।
মামলায় জাকিয়া সুলতানা বলেন, আসামিরা অসাধু, পরসম্পদ লোভী, প্রতারক, ছদ্মœবেশি ও ঠকবাজ শ্রেনীর লোক। বাদির একমাত্র কন্যা জারিন তাসনিয়া রুপকথা (১৪) যশোরের একজন স্বনামধন্য পুরস্কার প্রাপ্ত নৃত্য শিল্পি। ৫ জুন দুপুরে বাদির মোবাইলে আসামিদের মোবাইল থেকে কল আসে। কলকারিরা জানায়, বাদির কন্যা ২৩ সালের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে অংশ গ্রহনকারি ও বিজয়ি হিসেবে ৩২ হাজার টাকা উপবৃত্তি পেয়েছে। এই সময়ে বাদির মোবাইলে কলকারি ব্যক্তি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের হিসাব কর্মকর্তা পরিচয় দেয়। বাদির কন্যার উপবৃত্তির টাকা গ্রহন করার জন্য অনুরোধ করে। বাদির ব্যাংক একাউন্টে টাকা জমা হবে বলে ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার চায়। এ সময়ে আসমিদের একজন উদ্দেশ্য মূলক ভাবে বাদিকে প্রবঞ্চনা করিয়ে বিশ্বাস করায় বাদি তার ব্যাংকের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার বললে একাউন্টে উপবৃত্তির টাকা জমা হয়ে যাবে। বাদি ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের নাম্বার আসামিদের বলে। আসামিরা বােিক বোঝান তারা শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কর্মকর্তা উপবৃত্তির রেজিস্ট্রেশন করার জন্য তাদের কাছে বাদির সকল তথ্য নিরাপদ থাকবে। বাদির কোন ক্ষতি হবে না। বরং আর্থিক লাভ হবে। কথা কথা বলতে বলতে বাদির মোবাইলে একটি ম্যাসেজ গেছে বলে জানান। ওই ম্যাসেজ থেকে ওটিপি নাম্বার আসামিদের জানাতে বলে। বাদি আসামিদের ওটিপি নাম্বার দেয়। আসামিরা বাদির সাথে কথা শেষ করে মোবাইল কেটে দেয়। বাদি বুঝতে না পারায় সাক্ষিদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে। স্বাক্ষীরা বাদিকে ব্যাংক একাউন্ট চেক করার পরামর্শ দেয়। এর ৩০ মিনিট পর বাদির মোবাইলে ম্যাসেজ আসে ডেভিড কার্ড থেকে ৯ হাজার ৯ শ ৯৯ টাকা ও ৫ হাজার টাকাসহ মোট ১৪ হাজার ৯শ ৯৯ টাকা এবং ক্রেডিট কার্ড থেকে ৯ হাজার ৯শ ৯৯ করে তিনবারে মোট ২৯ হাজার ৯শ ৯৭ টাকা সর্বমোট ৪৪ হাজার ৯শ ৯৬ টাকা তোলা হয়েছে। পরে ব্যাংকের একাউন্ট চেক করে কর্মকর্তাদের নিকট জানতে পারেন বাদির একাউন্টে উপবৃত্তির কোন টাকা জমা হয়নি। ৫ বারে মোট ৪৪ হাজার ৯শ ৯৬ টাকা অন্য দুটি একাউন্টে ট্রান্সফার করে নেয়া হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাদির একাউন্ট হ্যাক করে জমাকৃত ৪৪ হাজার ৯শ ৯৬ টাকা আসামিদের একাউন্টে ট্রান্সফার করে নেয়। এ ঘটনায় বাদি কোতয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিকেশন বিভাগের সহযোগিতায় মোবাইল নাম্বারের সূত্র ধরে জাতীয় পরিচয় পত্র চেক করে আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করা হয়। অভিযোগ তদন্তকালীন সময়ে আসামিরা বাদিকে ফোন করে হুমকি দিযে বলে এই বিষয় নিযে কোন অভিযোগ করার বা টাকা ফেরত নেয়ার চেষ্টা করলে বাদি ও তার মেয়েকে সন্ত্রাসী দিয়ে অপহরণ করে ক্ষতি করবে।