যশোর অফিস : যশোরে নেশাজাতীয় বিষাক্ত দ্রব্য পানের ঘটনায় আরও একজন মারা গেছেন। মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিনজনে। অসুস্থ অবস্থায় ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন আছেন আরও দুজন। যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাতে তারা ওই নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করলেও বিষয়টি শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে জানাজানি হয়। মৃতরা হলেন-যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামের মৃত আবদুল হামিদের ছেলে ইসলাম (৪৫) ও শাহজাহান আলীর ছেলে জাকির হোসেন (২৯) ও আবু বক্কর মোল্লার ছেলে আবুল কাশেম (৫৫)। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে আবুল কাশেম মারা যান। এর আগে বৃহস্পতিবার ইসলাম ও শুক্রবার দুপুরে জাকির মারা যান।
অসুস্থরা হলেন-সিতারামপুর গ্রামের মনিরুদ্দীনের ছেলে বাবলু (২৮) এবং একই গ্রামের আনোয়ার মোড়লের ছেলে রিপন হোসেন মোড়ল (৩৬)। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জানুয়ারি রাতে যশোর সদর উপজেলার আবাদ কচুয়া গ্রামের একটি মেহগনি ও লিচু বাগানে ওই পাঁচজন বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করেন। রাতেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়লে নিজ নিজ বাড়িতে গ্রাম্য চিকিৎসকের চিকিৎসা নেন। কিন্তু অবস্থায় অবনতি হলে ইসলামকে বৃহস্পতিবার ভোরে তথ্য গোপন করে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনি মারা যান। এরপর পরিবারের সদস্যরা দ্রুত ছাড়পত্র ছাড়াই মরদেহ হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে চলে যায়।
অন্যদিকে, বাকি চারজনও অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার সকালে তারা একে একে যশোর হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে জাকির হোসেন দুপুর পৌনে ১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মারা যান। এরপরই তাদের বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পানের বিষয়টি জানাজানি হয়। ঘটনা জানাজানি হলে হাসপাতালে ভর্তি বাবলু ও রিপন হোসেন হাসপাতাল ছেড়ে বেসরকারি ক্লিনিকে চলে যান। আর আবুল কাশেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শুক্রবার রাতে তিনিও মারা যান।
যশোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আব্দুর রশিদ বলেন, স্বজনরা তথ্য গোপন করে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি করেন। তবে রোগীদের মুখে গন্ধ থেকে বোঝা যায় অতিরিক্ত বা বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য পানের ফলে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই মহিউদ্দিন বলেন, এলাকাবাসীর তথ্য অনুযায়ী অসুস্থ ও মৃতরা অতিরিক্ত বা বিষাক্ত নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করেছিলেন। কিন্তু তাদের স্বজনরা সেই তথ্য গোপন করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র না নিয়েই স্বজনরা মরদেহ বাড়িতে নিয়ে গেছেন।
যশোর কোতোয়ালি মডেল ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথমে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা অন্যকেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি। পরে খবর পেয়ে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে তিনজনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।