ডেস্ক নিউজ : যশোর শহরে নিজ বাড়িতে ভাড়াটিয়ার হাতে শাহানারা বেগম (৫৫) নামের এক বাড়িওয়ালী হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের শেখহাটি বাবলাতলা এলাকায় ভাড়াটিয়ার ঘর থেকে ওই নারীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় হত্যায় দায় স্বীকার করে লেখা একটি নোটপ্যাড উদ্ধার করা হয়।
নিহত শাহানারা বেগম শেখহাটি বাবলাতলা এলাকার আনিসুর রহমানের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে ভাড়াটিয়া বাবলা ও সুমন পলাতক রয়েছেন। মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে বলে জানান যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, পরিচিত লোকের হাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে. তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে আসামিদের ধরতে অভিযান শুরু হয়েছে।
নিহতের স্বামী আনিসুর রহমান ও স্বজনেরা জানান, শাহানারা বেগম ও তাঁর স্বামী ছাড়াও তাঁদের বাড়ির একটি ঘরে দুই যুবক ভাড়া থাকতেন। গতকাল বুধবার দুপুরে খাবার খেয়ে শাহানারার স্বামী আনিসুর ইজিবাইক চালাতে বের হন। রাতে বাড়ি ফিরে তালা লাগানো দেখতে পান তিনি। আশপাশে খোঁজ করেও স্ত্রীর কোনো সন্ধান পাননি। পরে আজ সকালে আনিসুর দেয়াল টপকে বাড়ির ভেতরে গিয়ে সব ঘরে তালা দেখতে পান। ভাড়াটিয়ার ঘরের সামনে কাপড়ে রক্ত দেখে তিনি লোকজন ডেকে নিয়ে এসে তালা ভাঙেন। এ সময় ওই ঘরের ভেতরে শাহানারা বেগমের গলাকাটা মরদেহ পাওয়া যায়।
নিহতের ছোট ভাই মাসুদ পারভেজ বলেন, ভাড়াটিয়া বাবলা ও সুমন মাদকাসক্ত হওয়ায় তাঁদের ঘর ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। কয়েক মাস আগে বাড়ি ছেড়ে দিতে বললে তাঁরা ক্ষিপ্ত হন। এমনকি শাহানারা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডাও হয়েছে। সেই জেরে এই হত্যার ঘটনা ঘটেছে। হত্যার পরে তাঁর শরীরে থাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে প্রতিবেশীরা ওই দুই যুবককে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে দেখেন। তাঁদের ধারণা, বাবলা ও সুমন হত্যার পর স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে গেছেন।
যশোর ডিবির পুলিশ পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, পরিচিত লোকের হাতেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। তবে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে তা বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কক্ষে একটি নোটপ্যাড পাওয়া গেছে। তাতে তিন-চার পেজে হত্যার কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তাঁদের মধ্যে বিরোধ, বাগ্বিতণ্ডা ও বিভিন্ন স্বর্ণালংকার নিয়ে যাওয়ার কথাও জানানো হয়। তবে, এই হত্যার কারণ কী, আসলেই এই নোটপ্যাড ভাড়াটিয়াদের কি না, তারও তদন্ত চলছে।