যশোর প্রতিনিধি : যশোরে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দম্ভ,জিদ এবং রক্ত পিপাসার কারণে শান্তিপূর্ণ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বাংলাদেশে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। অবিলম্বে নারকীয় হত্যাকান্ডের দায় স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। তারই পদত্যাগই একমাত্র সমাধান।
দেশব্যাপী বৈষম্য বিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনে নির্মম হত্যার প্রতিবাদে এবং সেই সাথে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের নামের মামলা দায়ের, গণগ্রেফতারের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার জেলা বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সেখানে দলের পক্ষে যথাযথভাবে প্রশাসনকে অবহিত করার পরও চতুর দিক দিয়ে প্রশাসন বাধা প্রদান করে। পরে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি কার্যালয়ে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি বেলা ১২ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০ থেকে লালদিঘীর পাড়ের সকল প্রবেশ পথ পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। বিএনপি কার্যালয়সহ গোটা এলাকায় পোশাকধারী এবং সাদা পোশাকধারী বিপুল সংখ্যা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেয়। লালদিঘির পাড়ের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। এমনকি পুলিশ গণমাধ্যম কর্মীদের সংবাদ সংগ্রহের নগ্ন বাধা প্রদান করে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দলীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এদিকে নির্ধারিত কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়ায় শহর জুড়ে বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে খন্ড খন্ড বিক্ষোভ মিছিল করেন। তারা শহরের মুজিব সড়ক, আর এন রোড, জেল রোড, ওয়াপদা মোড়, ঢাকা রোড, মনিহারস্থ পুরাতন খুলনা বাস স্ট্যান্ড, রেল রোডসহ শহরের বিভিন্ন সড়কে মিছিল করেন।
দলীয় কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত আরও বলেন, বাস্তবিক কথা হচ্ছে, আজকে যশোরে এই ঘটনায় হচ্ছে সারা বাংলাদেশে গত কয়েক দিনে কি ঘটেছে তার একটি সামান্য নজীর। বৈষম্য বিরোধী শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলন সরকার জোর করে শক্তি দিয়ে দমন করতে গিয়েই শত শত লাশ ঢাকাসহ সারাদেশের রাজপথে পড়েছে। আজকে যশোরে অত্যান্ত শান্তিপূর্ণ একটি পরিবেশ ছিল। শান্তিপূর্ণ ভাবে আমরা আমাদের কর্মসূচি পালন করছিলাম। ছাত্ররাও শান্তিপূর্ণ ভাবে তাদের দাবি উপস্থান করছিল। অথচ সেই কর্মসূচিতে প্রশাসন বাঁধা দিচ্ছে। পরিবেশ শান্ত থাকুক সেটি সরকার এবং প্রশাসনই চায় না। কারণ পরিবেশ যদি শান্ত না থাকে তাহলে তারা এই পরিবেশকে ব্যবহার করে বিরোধী দল কে দমন করতে পারে। তাদের (সরকার) যে দূর্বলতা গুলো গত কয়েক দিন ধরে প্রকাশ পেয়েছে। বিশেষ দুর্নীতি, লুণ্ঠন, ভারতে সাথে দেশ বিরোধী যে চুক্তি করেছে এই সকল ইস্যূ যেন ধামা চাপা পড়ে যায়। তারই অংশ হিসেবে নতুন করে চক্রান্ত চলছে।
তিনি বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা নতুন একটি বিবৃতি দিয়েছে, সেখানে তারা পরিস্কার বলে দিয়েছে আদালতের রায় এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে একটি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে চলমান সমস্যার কোন সমাধান হবে না। চলমান সমস্যার সমাধান করতে তারা একটি উপস্থান করেছে। সেই দাবির সাথে একটি সচেতন এবং দায়িত্বশীল রাজনৈতি দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও সেই দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছে।
অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, যশোরে বিএনপি নেতাকর্মীকে প্রশাসন তালিকা নিয়ে খুজে বেড়াচ্ছে। তারা কে কোথায় গেছে, যশোরে কে আছে সেটি খোঁজার চেষ্টা করছে। সারা বাংলাদেশের কোথাও ছাত্রদের এই আন্দোলনে বিএনপির সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল না। আমরা নৈতিক সমর্থন দিয়েছি। জনগণ যখনই ন্যায় সঙ্গত কোন দাবি উপস্থাপন করবে, রাজনৈতিক দল হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে তাদের (জনগণের) পাশে থাকা। আমরা অতীতেও জনগণের পাশে ছিলাম , এখনো আছি এবং ভবিষ্যতে জনগণের যে কোন শ্রেণী যদি তাদের ন্যায় সঙ্গত দাবি নিয়ে রাজপথে আসে। অবশ্যই সেই দাবির সাথে বিএনপি একাত্মতা প্রকাশ করে তাদের পাশে থাকবে।