শহিদ জয়, যশোর : সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপকে সামনে রেখে প্রীতি ম্যাচের মাধ্যমে প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ ফুটবল দল। ঢাকার বাইরে প্রথমবারের মতো যশোরে দুই সপ্তাহব্যাপী এ প্রস্তুতি ক্যাম্পে অংশ নিচ্ছে ৩৫জন খেলোয়াড়। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার টার্গেটে প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে চান তারা। তাদের দাবি ক্যাম্পের উন্নত সুযোগ-সুবিধা ও নিরবচ্ছিন্ন পরিবেশ তাদের সেই প্রত্যাশা পূরণে সহায়ক হবে।
আজ বৃহষ্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় যশোর সদর উপজেলার হামিদপুরে শামস উল হুদা ফুটবল একাডেমিতে এ প্রস্তুতি ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন যশোরের জেলা প্রশাসক মোঃ আজাহারুল ইসলাম।
আগামী ৯-১৮ মে ভারতের অরুণাচল প্রদেশে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ হবে। বাংলাদেশ দলও এতে অংশ নেবে। সাধারণত বয়সভিত্তিক দলগুলোর ক্যাম্প ঢাকাতেই হয়ে থাকে। তবে এবার ভিন্ন পথে হেঁটেছে বাফুফে। প্রথমবারের মতো ঢাকার বাইরে যশোরের শামস-উল-হুদা একাডেমিতে শুরু হয়েছে যুবাদের প্রস্তুতি ক্যাম্প। ৩৫ ফুটবলারের
এ ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন প্রবাসী ৩ ফুটবলারও। আজ বিকেলে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়েছে এ ক্যাম্প। এর আগে ওয়ার্ম আপ সারেন খেলোয়াড়রা। তারা জানান, উন্নত সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি নিরিবিলি পরিবেশ প্রস্তুতির সুযোগ তাদের বাড়তি সুবিধা দিচ্ছে। এ ক্যাম্পে তারা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দিতে চান। যাতে মূল দলে জায়গা করে নিতে পারেন।
ক্যাম্পে অংশ নিয়ে খেলোয়াড় নাজমুল হুদা ফয়সাল জানান, এখানকার মাঠ, পরিবেশ ও থাকার জায়গা বেশ ভালো। এখানে দারুণ একটি প্রস্তুতি করা সম্ভব হবে। আমাদের হেড কোচ অনেক অভিজ্ঞ। তার কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারছি। তাছাড়া ক্যাম্পে তিনজন বিদেশি খেলোয়াড় রয়েছে। তারা ভালো খেলোয়াড়। তাদের সাথে খেলেও আমরা শিখছি।
ইসমাইল হোসেন মাহিন জানান, আসন্ন টুর্নামেন্টটা নিয়ে সবাই আশাবাদী। ক্যাম্পে আসা সকলেই ভালো করার চেষ্টা করছে। যেন টুর্নামেন্ট শেষে আমরা ভালো কিছু নিয়ে আসতে পারি। গত দুই বছর আমাদের দেশ রানার্সআপ হয়েছে। সবার মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খিদে আছে। আমরা সবাই ভালো করতে চাই, চ্যাম্পিয়ন হতে চাই। বিদেশে তিনজন খেলোয়াড় আছে ওরা ভালো একটা সাপোর্ট দিলে আমরা ভালো করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ৩৫ জনের টিম থেকে ২৩ জন মূল দলে জায়গা পাবেন। এজন্য সকলে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
প্রবাসী খেলোয়াড় আব্দুল কাদির বলেন, আমরা সবাই যদি একসাথে ফাইট করি ইনশাল্লাহ চ্যাম্পিয়ন হবো। আমি আমার দেশকে রিপ্রেজেন্ট করতে এসেছি। এজন্য আমি প্রতিদিন আমার বেস্টটা দিতে চাই এবং বাংলাদেশের জার্সি সম্মান রক্ষা করতে চাই।
ঢাকার বাইরে নিরিবিলি পরিবেশে খেলোয়াড়দের প্রস্তুতিটা ভালো হবে এবং তারা উপকৃত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন কোচ ও টিম ম্যানেজার। একইসাথে সাফে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদী তারা।
কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন বলেন, আমি শামসুল হুদা ফুটবল একাডেমির কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ দিতে চাই, তারা আমাদের সুন্দর পরিবেশে প্রস্তুতির সুযোগ করে দিয়েছেন। এ ধরনের প্রস্তুতি সব সময় ঢাকায় হয়। যাতায়াত, মাঠ নিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা থাকে। আর এখানে আমরা নিরিবিলি মনোরম পরিবেশে প্রস্তুতি নিতে পারছি। এতে করে খেলোয়াড়রা ফোকাস করতে পারবে এবং তারা উপকৃত হবে। যা আসন্ন টুর্নামেন্টের জন্য সহায়ক হবে।
এদিকে টিম ম্যানেজার জালাল উদ্দিন বলেন, এখানে আসার পর খেলোয়াড়দেরকে বেশ উৎফুল্ল দেখেছি। আমি আশাবাদী এদের নিয়ে অনেক দূর যেতে পারবো। কারণ আমি অনেক ভালো খেলোয়াড় পেয়েছি। ফলে কোন চাপ অনুভব করছি না। খেলোয়ারদের ফিটনেস থেকে শুরু করে সবকিছু ওকে আছে। আমাদের টার্গেট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।
শামসুল হুদা একাডেমির নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ শফিকুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার রওনক জাহান, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, শামস উল হুদা ফুটবল একাডেমীর পরিচালক শেখ শামসুল বারী শিমুলসহ ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।