॥ বিশ দিনেও উদ্ধার হয়নি চুরি যাওয়া ইজিবাইক ॥
বিশ দিনেও চুরি হওয়া একটি ইজিবাইক উদ্ধার করতে পারেনি যশোর কোতয়ালি থানার পুলিশ। চুরি হওয়া ইজিবাইকটির উদ্ধার না হওয়ায় বাইকের মালিক চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তবে পুলিশ বলছে, ইজিবাইক উদ্ধার ও আসামি আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে, যশোর সদর উপজেলার করিচিয়া মশিয়ার রহমানের ছেলে রাজু আহমেদ ইজিবাইক কিনে ভাড়ায় চালানোর জন্য ভাড়া দেন। গত ২৫ জুলাই তার ইজিবাইকটি করিচিয়া মধ্যপাড়ার মুরাদ খন্দকারের ছেলে মুকুল হোসেন দৈনিক ৫০০ টাকা চুক্তিতে ভাড়া দেন। গত ২৪ আগস্ট সকালে মুকুল হোসেন ইজিবাইকটি চালানোর জন্য নিয়ে আসে। ওই দিন দুপুর দুইটার দিকে রাজু আহমেদ ফোন করে মুকুল হোসেনকে ইজিবাইকটি নিয়ে পুলেরহাট বাজারে নিয়ে আসতে বলেন। কিন্তু মুকুল হোসেন আর ইজিবাইক নিয়ে আসেন না। পরে রাজু আহমেদ জানতে পারেন ওই দিন দুপুরে যশোর শহরের বকচর এলাকায় দেখা যায়। এরপর বকচর এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারেন মুকুল ইজিবাইকটি বিক্রি করে দিয়েছে। যা বকচর মোড়ে একটি সিসি ক্যামেরায় ইজিবাইকটি বিক্রি করার দৃশ্য দেখা যায়। পরে এ ঘটনায় রাজু আহমেদ যশোর কোতয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করেন। এ ঘটনা জানতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইয়াসির জয়’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মামলার তদন্ত এবং ইজিবাইক উদ্ধার ও আসামি আটকের চেষ্টা চলছে। আসামি যেহেতু পলাতক রয়েছে, এ কারণে আমরা র্যাবের সহযোগিতা চেয়েছি। যে কোন সময় ইজিবাইক উদ্ধার ও আসামি আটক করা হতে পারে।
॥ আদালতের ভেতর থেকে টাইলস চুরির চেষ্টা ॥
যশোর জজ আদালতের ভেতর থেকে নিকুঞ্জ নামক একটি নির্মানাধীন স্থাপনার টাইলস চুরির চেষ্টার অভিযোগে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। জেলা জজ আদালতের নাজির বাবর আলী অযুহাত আসামিদের নামে ওই মামলা করেন। নাজির বাবর আলী এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌঁনে তিনটার দিকে একটি ইজিাবাইক জজ আদালতের প্রাচীর ঘেঁষে দাড়ায়। এরপর তিনজন ইজিবাইকের ভেতরে বসে থাকে। বাকি ৫জন প্রাচীর টপকে নির্মাণাধীন নিকুঞ্জের কাছে যায়। সেখানে রাখা টাইলস চুরির চেষ্টা করে। সে সময় দায়িত্বরত নৈশ প্রহরী শহিদুল ইসলাম এগিয়ে আসলে তাকে অজ্ঞাত চোর বা চোরচক্র হুমকি দেয়। সে সময় তিনি চিৎকার দিলে আরেক নৈশ প্রহরী হাফিজুর রহমান এগিয়ে আসলে চোরচক্র পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় শনিবার থানায় মামলা হয়েছে।
॥ ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার ॥
যশোরের ডিবি পুলিশ চৌগাছা থেকে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে। তবে এই ঘটনায় কাউকে আটক করতে পরেনি। ডিবি পুলিশের এসআই সোলায়মান আক্কাস জানিয়েছেন, শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে চৌগাছার চানপুর মোড়ে পুলিশ ডিউটিতে ছিলো। সে সময় ওই মোড়ের নাজমুলের বাড়ির সামনে পৌছালে আসামিরা কয়েকটি বস্তা ফেলে পালিয়ে যায়। পরে ওই বস্তা থেকে ১০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় চৌগাছা থানায় একটি মামলা হয়েছে।
॥ তিন জনকে কুপিয়ে জখম ॥
যশোরে প্রতিপক্ষের হামলায় ৩ জন আহত হয়েছেন। গুরুতর অবস্থায় তাদের যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলো, সদর উপজেলার মাহিদিয়া উত্তর পাড়া গ্রামের সোহাগ হোসেন (৩২), আকাশ হোসেন (২৬) ও জাকির হোসেন (৫০)। আহত আকাশ জানান, দীর্ঘ দিন ধরে তাদের সাথে একই গ্রামের রহমান আলী নামে এক ব্যক্তির জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। গত শুক্রবার বিকালে রহমানের নেতৃত্বে ইব্রাহীম, রাশিদা বেগমসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জন তাদের বাড়িতে হামলা করে কাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সোহাগ ও জাকির বাঁধাদিতে এলে হামকারীরা তাদের কেউ কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে পরিবারের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
জরুরি বিভাগের ডাক্তার আব্দুর রশিদ জানান, আহত তিন জনকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। সোহাগকে সার্জারি ওয়ার্ড, জাকির ও আকাশকে আইসিইউে ভর্তি রাখা হয়েছে।
॥ সোনা পাচার মামলায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট ॥
যশোরে ১৫ কেজি সাড়ে ৩শ’ গ্রাম সোনা পাচারের আলাদা মামলায় ৪ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দিয়েছে শার্শা থানা পুলিশ। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুজ্জামান ও এসআই আনিসুর রহমান মোড়ল। অভিযুক্ত আসামিরা হলো, শার্শার গোগা গ্রামের গাজীপাড়ার কুদরত উল্লাহ সরদারের ছেলে কামরুল এবং নড়াইল লোহগাড়ার মঙ্গলপুর গ্রামের মধ্যপাড়ার মৃত আলেক মোল্যার ছেলে জাহিদুর রহমান মোল্যা, ইনছান কাজীর ছেলে হৃত্তিক কাজী ও যশোর বেনাপোলের পুটখালির ইউনুস আলীর ছেলে বিল্লাল হোসেন।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, গত ২১ মার্চ সকালে শার্শার গোগা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা গোপন সংবাদে জানতে পারেন, একব্যক্তি সোনা পাচারের উদ্দ্যেশে বাগআচড়া থেকে হেটে গোগা গ্রামে যাবে। এ সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবি সদস্যরা জব্বারের মোড়ে অবস্থান নেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এজনকে আসতে দেখে তাকে আটক ও তার দেহ থেকে বিশেষ কায়দায় বাধা ১৩টি সোনার বার যার ওজন ১ কেজি ৫শ’৫৬ গ্রাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আটক কামরুলের বিরুদ্ধে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন বিজিবির নায়েক জালাল উদ্দিন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আনিসুর রহমান দীর্ঘ তদন্ত শেষে আটক আসামির দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকয় কামরুলকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন।
অপরদিকে, গত ৪ এপ্রিল কায়বা বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যরা বিকেলে চোরাচালান দমনে বাগআচড়া-গোগা সড়কে অবস্থান নেন। বিকেলে কায়বা গ্রামের সাহেবের ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তায় একটি মোটরসাইকেল আসতে দেখে থামার সংকেত দেয় বিজিবি। এ সময় মোটরসাইকেল ফেলে পালিয়ে যাওয়ার সময় তিনজনকে আটক ও তাদের মোটরসাইকেলে ভিরত বিশেষ কায়দায় রাখা ৬১টি সোনার বার যার ওজন ১৫ কেজি ৩শ’ ৪৬ গ্রাম উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বিবিজির হাবিলদার মালেক গাজী বাদী হয়ে আটক জাহিদুল, বিল্লাল ও হিৃত্তিককে আসামি করে শার্শা থানায় মামলায় করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে আটক আসামিদের দেয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় ওই তিনজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ চার্জশিট জমা দিয়েছেন তনন্তকারী কর্মকর্তা। চার্জশিটে আলাদা দুই মামলায় চারজনকে আটক দেখানো হয়েছে।
॥ হামলার ঘটনায় তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥
যশোর শহরের এইচএমএম রোডস্থ সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের নেতা সুজিত কাপুড়িয়া বাবুলসহ তিনজনের ওপর মারপিটের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে। সুজিত কাপুড়িয়া বাবলু শহরের হাটখোলা রোড়ের মৃত সুধীর কাপুড়িয়ার ছেলে। অভিযুক্তরা হলো, এইচএমএম রোডের মৃত মদন ঘোষের ছেলে বিকাশ চন্দ্র ঘোষ বাপ্পি, লোন অফিস পাড়ার শম্ভু দত্তের ছেলে বাবু দত্ত, হাজী শাহ আব্দুল করিম রোডের মৃত বিজয় সাউয়ের ছেলে ধীরাজ সাউ, বারান্দী নাথপাড়ার অসীম দেবনাথের ছেলে অনিপ দেবনাথ এবং মাছ বাজার রোড বুজা পট্টির গোবিন্দ রায়ের ছেলে দীপ্ত রায়। এছাড়া বড় বাজারের ব্যবসায়ী মীর মোশারফ হোসেন বাবু ওরফে ডিস বাবুকে নির্দেশদাতা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুজিত কাপুড়িয়া লিখিত অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেছেন, তিনি আসন্ন দূর্গা পুজা উদযাপনের জন্য গত শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে উদযাপন কমিটির আহবানে এক সভায় যোগদেয়ার জন্য এইচএমএম রোডে সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরে যাচ্ছিলেন। সে সময় অভিযুক্তরা তার ওপর হামলা চালায়। তাকে মারপিট করে। তার সঙ্গী পুজা উদযাপন পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি বাবলু কুমার নাথ, সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দিরের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য পবিত্র সাহা, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতা কৃষ্ণ ভৌমিককে লাথি, চড়, থাবা মারে। তাদের অস্ত্রদিয়ে জখমের চেষ্টা করে। সে সময় বাজার কমিটির নেতা ও ব্যবসায়ী মীর মোশারফ হোসেন বাবু পাশের ভবনে থেকে মারার জন্য উৎসাহিত করে। এই ঘটনায় তিনি থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।
॥ চাঞ্চল্যকর টুনি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বিল্লাল আটক ॥
যশোরের চাঞ্চল্যকর শাওন ওরফে টুনি শাওন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বিল্লাল হোসেন মৃদুলকে আটক করেছে র্যাব-৬ যশোরের সদস্যরা। শনিবার বিকেলে শংকরপুর জমাদ্দারপাড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। বিল্লাল হোসেন মৃদুল শংকরপুর জমাদ্দারপাড়ার মিন্টু শেখের ছেলে। র্যাব জানায়, বিল্লাল চিহ্নিত সন্ত্রাসী। ২০২১ সালের ২২ জুলাই রাত সাড়ে ১০টার দিকে যশোর শহরের শংকরপুর জমাদ্দারপাড়া ছোটনের মোড়েআরেক সন্ত্রাসী টুনি শাওনকে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর জড়িত থাকায় আটক করা হয় বিল্লালকে। প্রায় দুই বছর কারাগারে আটক থেকে জামিনে বের হয় বিল্লাল। এরপর আর আদালতে হাজিরা দেয়নি। বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপনে ছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার তাকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, বিল্লাল নানা ধরণের অপরাধমুলক কর্মকান্ডে জড়িত। সম্প্রতি ক্ষমতাসীন দলের সহসভাপতি মেহেদী হাসান মিন্টুর গাড়ির ড্রাইভার পরিচয় দিতে থাকে বিল্লাল। এরপর ওই নেতার নাম ভাঙিয়ে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে সে। তার নানামুখী অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত