যশোরে ফেনসিডিলের মামলায় নুরউদ্দিন নুরাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদেণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শিমুল কুমার বিশ্বাস এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নুরউদ্দিন বেনাপোলের মহিষাডাঙ্গা গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সহকারী পিপি শ্যামল কুমার মজুমদার। মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর র্যাব-৬ যশোরের সদস্যরা বেনাপোলের মহিষাডাঙ্গা গ্রামে অভিযান চালান। এসময় একটি হলুদ ক্ষেতের ভিতর থেকে নুরদ্দিন নুরাকে আটক ও তার কাছ থেকে ৬শ’ ৮৬ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন র্যাবের ডিএডি জিএম নকিবুল আলম। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এসআই মতিউর রহমান আসামি নুরউদ্দিনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি নুরউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-,৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নুরউদ্দিন কারাগারে আটক আছে।
জ্ঞাত আয় বহির্ভুত সম্পদ অর্জনের মামলায় খোলাডাঙ্গার রড ফ্যাক্টরির সাবেক ম্যানেজার লুৎফর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক শেখ নাজমুল আলম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। লুৎফর রহমান খোলাডাঙ্গা এলাকার মৃত হাজী ওয়াজেদ আলী সরদারের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট আশরাফুল আলম বিপ্লব।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, ২০২২ সালের ২৮ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে লুৎফর রহমানকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্তে, লুৎফর দুদকের কাছে ৯৫ লাখ টাকার সম্পদ গোপন করে মিথ্যা তথ্য প্রদান ও অবৈধ পন্থায় ১ কোটি ২৯ লাখ ৪৮ হাজার ৯শ’৪৪ টাকার জ্ঞাত আয়ের সাথে অসংগর্তির্পূর্ণ সম্পদ অর্জনের প্রমান পায়। ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ মামলার তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের সহকারী পরিচালক মোশারফ হোসেন আসামি লুৎফর রহমানকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। আদালত চার্জশিট গ্রহণ করে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। গতকাল বুধবার লুৎফর রহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
যশোরে দুই কোটি ৬৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৭৫ টাকার বীজ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের উপ-পরিচালক মো. আল আমিন দুদকের যশোর জেলা কার্যালয়ে মামলাগুলো দায়ের করেছেন। মামলার আসামিরা হলেন, বিএডিসির সাবেক উপ-পরিচালক তপন কুমার সাহা, মো. আমিন উল্যাহ ও ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল, সাবেক সহকারী পরিচালক মো. আলী হোসেন, মো. আক্তারুজ্জামান তালুকদার, সাবেক গুদামরক্ষক লিয়াকত আলী, রেজাউল কবির ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত গুদামরক্ষক কামরুল হাসান।
প্রথম মামলায় আসামি করা হয়েছে- ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল, আমিন উল্যা, আলী হোসেন ও মো. রেজাউল কবিরকে। তাদের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ ৬২ হাজার ৯৮৪ টাকার বীজ আত্মসাতের অভিযোগে আনা হয়েছে।
যশোরে যশোরে ডেঙ্গুজরে আক্রান্ত রোকেয়া বেগম (৫৬)নামে আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৩৮ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে যশোরে। মৃত রোকেয়া বেগম যশোরের শার্শা উপজেলার কাগমারি গ্রামের সাখাওয়াত স্ত্রী। জ্বরে আক্রান্ত হলে গত ১৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২ টা ৫৫ মিনিটে তাকে যশোর ২৫০ হাসপাতালের মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছিল।এখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা কর তার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হলে তাৎক্ষণিকভাবে মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। অবস্থার জন্য উন্নতি না হলে দ্রুত হাসপাতালে আইসিইউ এর ৫ নম্বর কেবিনে স্থানান্তর করা হয়। আইসিইউ তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল ২০ সেপ্টেম্বর সকাল ছয়টা ৪৫ মিনিটে ডাক্তার সাজ্জাদ হোসেন রোগী রোকেয়া বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন। ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। এর আগে গত মঙ্গলবার ডেঙ্গু পুরুষওয়ার্ডে মারা যান জামাল হোসেন (৪৫)। জামাল হোসেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার চাঁদপাড়া গ্রামের আলতাফ হোসেনের পুত্র। ওই দিন সকাল ৮ টা থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল ৮ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ২ জনের মৃত্যু হলো। ১৬ সেপ্টেম্বর তাকে হাসপাতালে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তার শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস ধরা পড়ে। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে তাকে ডেঙ্গু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে যশোরে ডেঙ্গুর মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়ালো ৮ জন। এর আগে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত