অভয়নগর নওয়াপাড়া জুট মিলের সুপারভাইজার আসলাম হাবিব হত্যা মামলায় নয়নকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছে যশোরের একটি আদালত। বৃহস্পতিবার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ৮ম আদালতের বিচারক সুরাইয়া সাহাব এক রায়ে এ আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নয়ন যশোর সাদরের জগন্নাপুর গ্রামের মোকাদ্দেছ আলীর ছেলে।
মামলার অভিযোগে জানা গেছে, অভয়নগরের নওয়াড়া বাংলাদেশ বেতারের সামনের তিলতলা ভবনের বসবাস করতেন আসলাম হাবিব ও তার ভাই রবিউল ইসলাম। ২০১১ সালের ১৫ জুলাই রাতে খাওয়া দাওয়া করে স্বপরিবারের ঘুমিয়ে পড়েন আসলাম হাবিব। গভীর রাতে পূর্ব পরিচিত নয়নের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে আসলাম হাবিবের। নয়ন রাতে তার বাসায় থাকতে চান। বাড়তি রুম না থাকায় নয়ন ও আসলাম হাবিব রান্না ঘরে ঘুমান। এর মধ্যে নয়ন ঘুম থেকে উঠে পানি ও ভাত খেতে চান আসলামের স্ত্রীর কাছে। ভাত না থাকায় পানি খেয়ে রান্না ঘরে ঘুমাতে চলে যান নয়ন। ভোরে ঘুম থেকে উঠে আসলামের স্ত্রী দেখেন মশারি খোলা নয়ন রুমে নেই। মেঝেতে রক্ত, আসলাম হাবিবের গলা কাটা। মৃত অবস্থায় পড়ে আছে। পরে পুলিশ সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহত আসলাম হাবিবের ভাই শামসুর রহমান বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত শেষে হত্যার সাথে জড়িত থাকায় নয়নকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শরীফ হাবিবুর রহমান। দীর্ঘ সাক্ষী গ্রহণ শেষে আসামি নয়নের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত নয়ন কারাগারে আটক আছে।
যশোরের রুপদিয়ায় বাড়ির সামনে থেকে একটি পিকআপ (যশোর-ন-১১-১৩২৯) চুরি হয়েছে। এই ঘটনার ৯দিন পর পিকআপ মালিক রুপদিয়া বাজার আল হেলাল কমপ্লেক্সের বিপরীতে মির্জা মোহাম্মদ ফরহাদ হোসেন (৬০) কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেছেন।
তিনি এজাহারে উল্লেখ করেছেন, তিনি ভারতীয় কোম্পানির ওই পিকআপটি ১৪ লাখ টাকায় কেনেন এবং তা পরিচালনা করে কচুয়া গ্রামের ইনতাজ মোল্লার ছেলে শরিফুল ইসলাম (২১)। গত ২৯ আগস্ট রাত ৯টার দিকে চালক পিকআপটি তার বাড়ির সামনে রেখে লক করে তাকে অবহিত করে চলে যায়। রাত ১২টার দিকে তার স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম গাড়ির শব্দ শুনে টের পেয়ে বাইরে এসে দেখেন গাড়িটি কে বা কারা নিয়ে যাচ্ছে। সাথে-সাথে তার ছেলে মির্জা মোহাম্মদ নুরুন্নবী (৩৫) বাইরে এসে দেখেন গাড়িটি নেই। পরে জিপিআরএস ট্রাক করে দেখেন পিকআপটি ঝুমঝুমপুর বীজ গোডাউন এলাকায় আছে। তিনি সাথে সাথে ৯৯৯ নম্বরে কল করেন এবং নড়াইল হাইওয়ে থানা পুলিশ জানতে পারে। কিন্তু গাড়িটির কোন সন্ধান করতে পারেননি। তার ধারনা অজ্ঞাত চোর বা চোরচক্র পিকআপটি জিপিআরএস ট্রাকার ভেঙ্গে তা নিয়ে যায়। কোন সন্ধান করতে না পেরে তিনি থানায় মামলা করেন।
যশোরে পুলিশ আলাদা অভিযানে মাদকদ্রব্যসহ দুইজনকে আটক করেছে। কোতয়ালি থানার এসআই মিহির মন্ডল জানিয়েছেন, গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে শহরে রেলগেট এলাকা থেকে ২শ’ গ্রাম গাঁজাসহ সরফ উদ্দীন পাটোয়ারী (২১) নামে এক যুবককে আটক করা হয়। সে বারান্দী মসজিদ মহল্লা এলাকার হাসান পাটোয়ারীর ছেলে।
কোতয়ালি থানার এসআই আশরাফুল আলম জানিয়েছেন, গত বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে আরএন রোডস্থ গলির রাস্তা থেকে ২১ পিস ইয়াবাসহ তৈয়বুর রহমান রিয়াদ (২৭) নামে এক যুবককে আটক করা হয়। সে আরএন রোডস্থ মসজিদ গলির আব্দুর রহমানের ছেলে।
যশোরের বাঘারপাড়ায় দোকানের সামনে ট্রাক রাখা নিয়ে তর্কবিতর্কের জেরে ছুরিকাঘাতে ইয়ারুল ইসলাম (২৩) নামে এক গ্যারেজ মালিক আহত হয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সকালে খাজুরা বাজার সংলগ্ন তাহের পেট্রোল প্যাম্পের পাশে। তিনি সদরের লেবুতলার তেজ রোল গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তিনি যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি রয়েছেন।
আহতের পিতা সাহেব আলী জানান, সকালে তার ট্যায়ারের দোকানে লেবুতলার তেজ রোল গ্রামের মারুফ হোসেনের ট্রাক নিয়ে এসে চাকার হাওয়া ও ফিল্টার চেক করায়। চেক করা শেষে দোকানের কর্মচারী সাকিব হোসেন ট্রাকটি সরিয়ে নিতে বলেন। এসময় তাকে কিলঘুষি মারে। বিষয়টি দোকানের মালিক সাহেব আলী ও তার ছেলেকে সাকিব জানায়। তারা মারুফের কাছে বিষয়টি জানতে গেলে সে ক্ষিপ্ত হন ও ইয়ারুলকে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ভর্তি করে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক জানান, তার হাতে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং তিনি আশংকা মুক্ত রয়েছেন।
যশোরে দিনে-দুপুরে বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের একটি আবাসিক ভবনে দুর্র্ধষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। অজ্ঞাত চোরেরা নগদ ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ৭ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এ চুরির ঘটনা ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে জড়িতদের সিসিটিভি ফুটে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাদের শনাক্ত ও আটক করতে কাজ শুরু হয়েছে।
যশোর শহরের পুলিশ সুপারের বাসভবনের অদূরে আয়েশা সরদার বাইলেনে বিমান বাহিনীর ১১ কর্মকর্তার একটি আবাসিক বাসভবন রয়েছে। ওই ভবনের পঞ্চম তলায় বসবাস করেন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আসাদুজ্জামান ও তার পরিবার। বৃহস্পতিবার সকালে আসাদুজ্জামান ও তার স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা জাহানারা খাতুন অফিসে এবং তাদের ছেলে সজিব বিশ্ববিদ্যালয় চলে যান। এরপর দুপুর ১টার দিকে ভবনের অন্য সদস্যরা নামাজ আদায় করতে বের বের হলে মেইনগেট খুলে রেখে যান। এরপর একজন ভিক্ষুক এসে গেটের সামনে অবস্থান নেয়। তার কিছুক্ষণ পর দুই যুবক ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। এরপর তারা পঞ্চম তলায় সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আসাদুজ্জামানের ফ্ল্যাটের মূল দরজার হ্যাজবোল্ট ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে। অজ্ঞাত ওই দুই চোর ঘরের দুটি আলমারি ভেঙে নগদ ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ৭ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে। তারা চলে যাবার সময় সিড়িতে আসাদুজ্জামানের স্ত্রী জাহানারা খাতুনের সাথে মুখোমুখি হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে নিয়ে যায়।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, জড়িতদের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাদের শনাক্ত ও আটক করতে কাজ শুরু হয়েছে।
যশোর ১০ শ্রেণির এক ছাত্রী অপহরণের ঘটনায় চার জনকে আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলা করেন ওই স্কুল ছাত্রীর মা। তিনি ঝিকরগাছা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের বাসিন্দা। মামলায় একই পরিবারের চারজনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলো সদরের খয়েরতলা গাজির ঘাট রোডের শরিফুল ইসলামের ছেলে বিপ্লব, আব্দুল গফুরের ছেলে গাউসুল ইসলাম রিকু, শরিফুল ইসলামের ছেলে ইলয়াস হোসেন ও শরিফুল ইসলামের স্ত্রী রিজিয়া বেগম রিজি। ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে পুলিশ গাউসুল ইসলাম রিকু ও রিজিয়া বেগম রিজিকে আটক করেছে।
মামলায় অপহৃত স্কুল ছাত্রীর মায়ের অভিযোগ, বিপ্লব আসামি গাউসুল আজম রিকুর সহযোগিতায় তার মেয়েকে বিভিন্ন সময় উত্যক্ত করতো ও প্রেমের প্রস্তাত দিতো। আসামি বিপ্লবের প্রস্তাবে তার মেয়ে রাজী না হওয়ায় আসামি গাউসুলের পরামর্শে তার মেয়েকে নানা প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলাতে থাকে। বিপ্লব অন্য আসামিদের সহায়তায় বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। সর্বশেষ গত ৩১ আগস্ট বিকেলে তার মেয়ে গ্রামের বাড়ি খয়েরতলা থেকে রওনা দিয়ে খয়েরতলা নানা বাড়ির সামনে পৌছালে আসামি বিপ্লবসহ অন্য আসামিরা অপহরণ করে একটি প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায়। পরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে আটক রাখে।
মামলার পর পুলিশ ৬ সেপ্টেম্বর রাতে খয়েরতলা গাজির ঘাট রোডের বাড়ি থেকে আসামি গাউসুল ইসলাম রিকু ও রিজিয়া বেগম রিজিকে আটক করে।
প্রতি যশোরের ঝিকরগাছায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে কামরুল ইসলাম (৪৫) একজনকে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঝিকরগাছার শংকরপুর ছোট পোদাউলিয়া গ্রামে। এ ঘটনায় চাচাতো ভাই আতাউর রহমান (৪০) ও তার স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৬৮) আহত গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতরা যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
আহত আতাউর জানান, কামরুলের সাথে একই এলাকার ওসমান আলী ও আলী হোসেনের সাথে দীর্ঘদিন জমি জায়গা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিলো। তারই জেরে সন্ধ্যায় তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কামরুলের বাড়িতে গিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এ সময় চাচাতো ভাই আতাউর ও ভাবী আনোয়ারা এগিয়ে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভাশিষ রায় পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে কামরুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এবং বাকি দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ঝিকরগাছা থানার ওসি সুমন ভক্ত জানান, জমি জায়গায় সংক্রান্ত বিরোধে একজন হত্যা হয়েছে ও দুইজনকে আহত করা হয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকারিরা পলাতক রয়েছেন তাদেরকে আটকের চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
২০২৩ সালে যশোর জেলা আইনজীবী সমিতিতে যোগদান কারী ৩১ জন তরুণ আইনজীবীকে ফুল ও উপহার দিয়ে বরণ করে নিয়েছে গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতি। বৃহস্পতিবার দুপুর তিনটায় জেলা আইনজীবী সমিতির ১ নং মিলনায়তনে ‘আসুন স্বচ্ছতায় , আসুন দক্ষতায়’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে নিয়ে এক নবীন বরণ উৎসবের আয়োজন করে সংগঠনটি। অনুষ্ঠানে প্রবীন ও নবীন আইনজীবীদের মিলন মেলায় পরিনত হয়। সংগঠনের সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু। অনুষ্ঠানে সাংগঠনিক বক্তব্য রাখেন কাজী ফরিদুল ইসলাম। এছাড়া স্বাগত বক্তব্য রাখেন নবীন বরণ আয়োজন কমিটির আহবায়ক গোলাম মোস্তফা সুমন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা নবীন আইনজীবীদের সৎ ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্বপালনের আহবান জানান। নবীনদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আলমগীর হোসেন মোড়ল, মীর ফিরোজ হাসান ও শিরিন বিথি।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত