জন্মভূমি ডেস্ক
দেশের সবেচেয়ে আলোচিত ইস্যু পরীমনি। গেল কিছুদিন আগে এক ব্যবসায়ী কতৃক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। তাকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ নায়িকা। এরপর এক সংবাদ সম্মেলনে সে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরেন তিনি এবং নির্যাতনকারীর বিচার দাবি করেন। এরপর থেকে পরীমনিকে তার বনানীর বাসায় ২৪ ঘণ্টা পুলিশ পাহারার রাখা হয়। এরইমধ্যে অভিযুক্তদের অনেকেই গ্রেপ্তার হন।
অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হওয়ার পর কিছুটা হলেও স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছেন পরীমনি। বাংলাদেশ জার্নালকে এ নায়িকা বলেন, গতকাল পর্যন্ত আমাকে সবাইকে কাঁদতে দেখেছেন, এখন আমি একটু একটু হাসতে পারছি। সত্যি আজ নিজেকে অনেক সাহসী মনে হচ্ছে। গতকাল পর্যন্ত মরা মানুষের মতো ছিলাম। যখন টিভিতে দেখলাম দোষীরা গ্রেপ্তার হয়েছে তখনই নিজে থেকে দাঁড়ানোর শক্তি পেয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ক্রেডিটটা মিডিয়া কর্মীদের। আমার সাংবাদিক ভাইদের। তাদের বিকল্প ছিল না। এছাড়া প্রশাসন দেখিয়ে দিয়েছে যে, আমাদের আইন কতোটা শক্তিশালী। তারা চাইলেই সবকিছু পারে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এটা কখনো ভাবিনি আমি। এমন একটা পরিস্থিতিতে আমি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাহায্য চেয়েছিলাম। সেখানে গিয়েছিলাম কিন্তু কোনো উপকার পাইনি। আমি আমার অভিভাবক হিসেবে কাউকে খুঁজে পাইনি তখন। চারদিনে আমার জীবনে যা ঘটেছে, আগে কখনো ঘটেনি। ঘটনাটির পর শুরু থেকে যাদের কাছে গিয়েছি তারা প্রত্যেকেই আমাকে থামিয়ে দিয়েছেন। এরপর থেকে আমি নিজে খুবই ইনসিকিউরড অনুভব করি।
ভবিষ্যতে এ ঘটনার রেশে পুনরায় কোনো ঝামেলার আশঙ্কা করছেন কী? পরীর জবাব, আমার কাছে যা প্রমাণ ছিলো তা জমা দিয়েছি। আমি চাই ওইদিনকার সিসিটিভির ফুটেজগুলো দ্রুত সংগ্রহ করা হোক। সেখানে সবগুলোই রেকর্ড আছে। তবে সেখানকার ওয়েটাররা আমাকে খুব সাহায্য করেছে তাদের কাছে সারাজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। বারবার লাইট বন্ধ করতে বলা হলেও তারা লাইট বন্ধ না করে সুইচ ধরে দাঁড়িয়েছিল। তারা সাহায্য না করলে হয়তো ওইদিন আমাকে মেরে ফেলতো সেখানে।
এই ঘটনার রেশ আজীবন থেকে যাবে। যতদিন না দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হয় আমি শান্তি পাব না। যে অপরাধটা আমার সাথে করেছে এই অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তির বাস্তবায়ন চাই। সবাই এখন যেমন বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন, এটির যদি সর্বোচ্চ শাস্তি হয়। তাহলে ভবিষ্যতে হয়তো আর অন্যদের সাথে এমনটি হবে না। ভুক্তভোগী কেন সুইসাইড করে আমি কয়েকদিনে হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। নায়িকা পরীমনি না হলে আমাকে সুইসাইড করতে বাধ্য করা হতো। যাদের কাছে জানাতে গিয়েছি তারা আমার মান ইজ্জত নিয়ে ভাবতে বলেছেন। অন্যদের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো, অপরিচিত কাউকে বিশ্বাস করা উচিত না। এমন যদি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে সত্যটা বলেই মরো। যদি শিকার হয়ে যদি কেউ মরে যায় তাহলে সেই মরে যাওয়াটা কোনো সমাধান নয়। মরে গেলে কোন সমস্যা বা রহস্যের জট খুলে না।
অভিযোগ আছে আপনি নিজেই একটা সময় সাংবাদিকদের সাথে দুর্বব্যবহার করেছিলেন! এ প্রশ্নে পরীমনি বলেন, যদি কারও সাথে দুর্বব্যবহার করে থাকি তাহলে তার সাংবাদিকতার জন্য নয়, সেই ব্যক্তির আচরণের জন্য করেছি। তারা কখনোই প্রকৃত সাংবাদিক ছিল না। নামে মাত্র ছিল। যারা সত্যিকারের সাংবাদিক তারা শুরু থেকে আমাকে সাপোর্ট করেছেন। আমিও তাদের সম্মান দিয়েছি।
যাদের অভিভাবক ভাবতাম তাদের কাউকে পাশে পাইনি: পরীমনি
Leave a comment