জন্মভূমি ডেস্ক : ফিলিস্তিন ইস্যুতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক চাপ, ন্যায়বিচার আদালতের রায়, সম্প্রতি বিভিন্ন ঘটনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ব্যাখ্যা চাওয়া সব মিলিয়ে বেশ কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর এর মধ্যে দেশটির যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেছেন বেনি গানৎস। এই ঘটনাকে নেতানিয়াহুর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
রোববার (৯ জুন) রাতে জরুরি এ মন্ত্রিসভা থেকে তিনি পদত্যাগের ঘোষণা দেন।
মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ‘কঠিন ও বেদনাদায়ক’ উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে গানৎস বলেন, ‘প্রকৃত বিজয়ের দিকে এগিয়ে যেতে আমাদের বাধা দিচ্ছেন নেতানিয়াহু।’
তবে গানৎসের বক্তব্যকে ‘অনর্থক’ আখ্যা দিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় নেতানিয়াহু বলেন, এ ধরনের বক্তব্য ইসরায়েলের জন্য পরাজয়ের শামিল।
এর আগে, পদত্যাগ না করতে গানৎসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন নেতানিয়াহু।
দৃশ্যত নেতানিয়াহুর সঙ্গে বিরোধের কারণে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা থেকে সরে দাঁড়ালেন সাবেক এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী। ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণা করতে ৮ জুন পর্যন্ত নেতানিয়াহুকে সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি।
শনিবার (৮ জুন) পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার কথা ছিল গানৎসের। তবে এদিন গাজায় নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে চার জিম্মিকে উদ্ধার করে ইসরায়েলের বিশেষ বাহিনী। ওই অভিযানে ২৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন।
এদিকে, গানৎসের পদত্যাগকে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধী নেতা ইয়ার লাপিদ। নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী সরকারকে পরিবর্তনের সময় এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। ওই দিনই যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গাজায় আট মাস ধরে চলা ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় ৩৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
গত ২৪ মে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার দক্ষিণের শহর রাফায় ইসরায়েলের অভিযান বন্ধের নির্দেশ দেন আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে)। যদিও এরপর হামলা অব্যাহত রাখে ইসরায়েল।
সম্প্রতি গাজায় যুদ্ধবিরতি ও যুদ্ধপরবর্তী পরিকল্পনা ঘোষণায় আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে অনড় নেতানিয়াহু। এ নিয়ে যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভায় বিভক্তি দেখা দেয়।