জন্মভূমি ডেস্ক : সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষে ইসরায়েলি হামলায় ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য দিয়েছে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কুদরা বলেন, ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা বেড়েছে। এখন পর্যন্ত ৩২ জনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এএফপিকে কুদরা বলেছেন, ইসরায়েলি হামলায় মধ্য গাজার আল-মাগাজিতে ১০ জন, দক্ষিণের রাফাহতে ৯ জন এবং উত্তর গাজা সিটিতে পাঁচজন নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে তিনি এসব তথ্য দেন।
গাজাভিত্তিক হামাসের স্বরাষ্ট্র ও জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পরপরই অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় আবার আগ্রাসন শুরু করেছে দখলদার সেনারা।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, উত্তর গাজায় এরইমধ্যে বড় বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যাচ্ছে। এছাড়া, গাজার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে দুই পক্ষের গোলা বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে।
শেষ মুহূর্তে ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির অবসানের কথা জানায়। তারা দাবি করেছে, গাজা থেকে হামাস রকেট ছুঁড়েছে, সেজন্য তারা যুদ্ধবিরতির অবসান ঘটাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে- ইসরায়েল আগে থেকেই বলে আসছিল- যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হলেই তারা আবার গাজায় আগ্রাসন চালাবে। আল-জাজিরা বলছে, ইসরায়েলি বাহিনী উত্তর গাজায় বিমান হামলা করেছে।
এর আগে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র-সহ আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের উদ্যোগে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে প্রথমত চার দিনের যুদ্ধবিরতির চুক্তি হয়। এরপর তা দুই দফায় তিন দিন বাড়ানো হয়।
২৪ নভেম্বর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত গাজায় আটক ১১০ ইসরায়েলি মুক্তি পান। অপরদিকে ইসরায়েলিরা ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সে দিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ অভিযান শুরু করে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে যে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ছয় হাজার শিশু-সহ ১৪ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’