
জন্মভূমি ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দক্ষ কর্মকর্তাদের বিবেচনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ভবিষ্যতে আমাদের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দক্ষ যারা তারা প্রমোশন পেয়ে প্রত্যেকটি বাহিনী পরিচালনার দায়িত্ব পাবে এবং দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার সকালে নৌ ও বিমান বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদ (প্রথম পর্ব) ২০২১ এ অংশগ্রহণ করে একথা বলেন।
তিনি গণভবন থেকে ঢাকা সেনাবনিবাসের নৌ ও বিমানবাহিনী সদর দপ্তরে ভিডিও কনফারেন্সের সাহায্যে ভার্চুয়ালি এই সভায় অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে গর্বিত’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ নিয়ে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে বাংলাদেশ চলবে এবং বাংলাদেশ হবে ভবিষ্যতে উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ।
৭৪ সালে জাতির পিতার করে যাওয়া প্রতিরক্ষা নীতিমালার আলোকে তাঁর সরকার ফোর্সেস গোল ২০৩০ নির্ধারণ করে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে উল্লেখ করে তিনি বঙ্গবন্ধু প্রণীত পররাষ্ট্র নীতি- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, কথাটি সকলকে স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বলেন, একটা কথা আমি স্পষ্ট বলতে চাই-আমরা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাই না। জাতির পিতার পররাষ্ট্রনীতির আলোকে আমরা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে প্রতিটি দেশের সঙ্গে বন্ধুত্ব রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। দেশের সার্বিক উন্নয়নে যার কাছ থেকে যতটুকু সহযোগিতা নেয়া দরকার বা আমাদের উন্নয়ন সহযোগী যারা হবে সকলের সঙ্গে সদ্ভাব রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি দৃপ্ত উচ্চারণে আবারো বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। শান্তি চাই। কারণ, শান্তি ছাড়া কোন দেশের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। যুদ্ধ ধ্বংস ডেকে আনে। আমরা যুদ্ধের পথে যেতে চাই না। কিন্তু, কেউ যদি আক্রমণ করে সেই বহিঃশক্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার সব প্রস্তুতি আমাদের থাকতে হবে। সেজন্য আমাদের প্রশিক্ষণ এবং সরঞ্জামের আধুনিকায়নের মাধ্যমে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা পদোন্নতির জন্য যে পদ্ধতিগুলো নিয়েছেন টিআরএসিই-ট্রেস (টেবুলেটেড রেকর্ড এন্ড কম্পারেটিভ ইভালুয়েশন) আমি মনে করি এটা একটা আধুনিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতির ভিত্তিতেই আপনাদের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা দিয়ে আপনারা নির্বাচনী পর্ষদ আগামী দিনে যারা দক্ষতার সাথে নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনী পরিচালনা করবে তাঁদের নির্বাচিত করবেন।
পাশাপাশি, আমি এটাও বলবো যে অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেকে কর্তব্য পালনে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে। কাজেই, তারাও যেন অবহেলিত না হয় সেদিকটাও আপনারা বিবেচনা করবেন বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী করোনার সময় বাংলাদেশ নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীসহ সকল প্রতিষ্ঠান অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং বলেন, দুর্যোগকালীন মানুষের পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেকটি মানুষের দায়িত্ব। কাজেই, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী সবসময় এই কাজটি করে থাকে। যখনই দুর্যোগ এসেছে সাধারণ মানুষ আপনাদের সেবা পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী আজ শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলেও অত্যন্ত সুশৃঙ্খল, দক্ষ এবং পেশাদার বাহিনী হিসেবে মর্যাদা লাভ করেছে। আত্মত্যাগ ও কর্তব্যনিষ্ঠা বাংলাদেশের জন্য বয়ে এনেছে বিরল সম্মান ও মর্যাদা, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকেও অত্যন্ত উজ্জ্বল করেছে।
তিনি উপস্থিত নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনীর নির্বাচনী পর্ষদের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের মেয়ে, আমি শুধু শাসক নই, বাংলাদেশের মানুষের সেবক। জনগণের সেবা ও কল্যাণ করাটাকেই আমি সবথেকে বড় কাজ বলে আমি মনে করি। সেই ব্রত নিয়েই আমি কাজ করে যাচ্ছি এবং দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্রে আপনাদের সহযোগিতা সবসময় কামনা করি।
রাষ্ট্র পরিচালনায় যখনই প্রয়োজন হবে তখনই সশস্ত্র বাহিনী মানুষের পাশে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেভাবে আপনারা মানুষের সেবা করছেন সেভাবে সেবা করে যাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের এক বিশাল সমুদ্র এলাকা রক্ষায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধিতে তাঁর সরকার সংযোজিত করেছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আধুনিক যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, হেলিকপ্টার, মেরিটাইম প্যাট্রোল এয়ারক্রাফট এবং বিশেষায়িত ফোর্স সোয়াডসসহ আধুনিক যুদ্ধ সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি।